প্রকাশিত: ১২:২৪ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২
শাবি প্রতিনিধি :: উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে টানা ২৭ দিন আন্দোলনের পর কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, ‘দাবি পূরণে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাসে আমরা আপাতত আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আমরা চাই কালকে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হোক। বিশ্ববিদ্যালয় স্বাভাবিকভাবে চলুক। যাতে শিক্ষার্থীদের সেশন জটে পড়তে না হয়।’
রাজ বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শুক্রবার অত্যন্ত ফলপ্রসূ বৈঠক হয়েছে। মন্ত্রী আমাদের প্রায় সব দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। একই সঙ্গে আমাদের মূল দাবি উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়টি আচার্যকে জানানোর আশ্বাস দিয়েছেন।
আশা করি বিষয়টি জেনে মহামান্য আচার্য এই অযোগ্য উপাচার্যের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন। মন্ত্রী যেহেতু আশ্বাস দিয়েছেন তাই আমরা কিছুদিন দেখতে চাই। এ কারণে আন্দোলন স্থগিত করছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে রাজ বলেন, ‘আমরা উপাচার্যকে অবাঞ্ছিত করেছিলাম। একই সঙ্গে আমরা এও চাই না বিশ্ববিদ্যালয় আর একটি দিনও বন্ধ থাকুক। তাই উপাচার্য তার কার্যক্রম শুরু করলে, আমরা আপাতত কোনো বাধা দেব না।’
সংবাদ সম্মেলনের আগে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি বিল্ডিংয়ের ভেতর বৈঠক করেন শিক্ষার্থীরা।
শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। সেদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।
১৬ জানুয়ারি থেকে উপাচার্য ফরিদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে অবরুদ্ধে করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেন। ২৬ জানুয়ারি অধ্যাপক জাফর ইকবালের আশ্বাসে তারা এক সপ্তাহের অনশন ভাঙেন।
এরপর ৬ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক পদ থেকে অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমদকে সরিয়ে দেয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে জানানো হয়, অসুস্থতার কারণে তাকে অপসারণ করা হয়েছে।
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণ দেখিয়ে প্রক্টরের পদ থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি আলমগীর কবীরকে অব্যাহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের ওই হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। শনিবার এক বিবৃতির মাধ্যমে উপাচার্য দুঃখ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ যারা আহত হয়েছেন, তাদের সবার প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা ও সহমর্মিতা প্রকাশ করছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য আমি আন্তরিকভাবে গভীর দুঃখ প্রকাশ করছি। ওই ঘটনার ধারাবাহিকতায় সৃষ্ট অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী যারা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক অবস্থা দ্রুত ফিরিয়ে আনতে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে শিক্ষা উপমন্ত্রীসহ সরকারের সব স্তরের দায়িত্বশীল ব্যক্তি, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাসহ সিলেটের সুশীল সমাজের সবাইকে এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে জানাই আমার আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা নিরসনে মিডিয়া কর্মীরা যারা দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখেছেন, তাদেরকেও জানাচ্ছি ধন্যবাদ।’
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech