প্রকাশিত: ৯:১০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২২
গুলবাদিন নাইবের খাটো লেন্থের ডেলিভারিতে মিড উইকেটে পুল করে দিলেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। বল চলে গেলো বাউন্ডারির বাইরে। সঙ্গে সঙ্গে গর্জে উঠলেন নন স্ট্রাইকে থাকা মেহেদি হাসান মিরাজ।
তার বাঘের মতো গর্জন করারই কথা। মাত্র ৪৫ রানে ৬ উইকেট পতনের পর ব্যাট হাতে বীরের মত লড়াই করে দলকে ৪ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় এনে দেয়ার পর এমন উল্লাস-গর্জন শুধু তাদের পক্ষেই মানায়।
২৮ রানে ৫ উইকেট, ৪৫ রানে নেই ৬ উইকেট। একে একে ফিরে গেলেন তামিম, লিটন, মুশফিক, ইয়াসির রাব্বি, সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের পুরো শক্তিই বলতে গেলে শেষ হয়ে গেছে। শঙ্কা দেখা দিয়েছিল, কত কম রানে শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশ!
স্নায়ুর যুদ্ধ তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের সমর্থকদের মনে। পরাজয়ের শঙ্কায় কেউ কেউ খেলা দেখাই বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ঘরের মাঠে আফগানিস্তানের কাছেও হারতে হবে!
কিন্তু দুই তরুণ মেহেদী হাসান মিরাজ এবং আফিফ হোসেন ধ্রুব যে বীরত্ব দেখালেন, তা রীতিমত অবিশ্বাস্য। বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে একসঙ্গে খেলে নিজেদের মধ্যে এমন বোঝাপড়া তৈরি করেছেন তারা দু’জন, সেখান থেকে বাংলাদেশ দলকেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিলেন তারা।
১৭৪ রানের অবিশ্বাস্য এক জুটি গড়ে ৭ বল হাতে রেখেই ৪ উইকেটের এক অবিশ্বাস্য জয় এনে দিলেন বাংলাদেশকে। আফিফ অপরাজিত থাকলেন ৯৩ রানে এবং মেহেদী হাসান মিরাজ অপরাজিত থাকলেন ৮১ রানে। দুটি ইনিংসই নিজেদের ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ইনিংস।
আফগানদের করা ২১৫ রানের ধ্বংসস্তুপের মুখে দাঁড়িয়ে বুক চিতিয়ে লড়লেন মেহেদি হাসান মিরাজ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। দুজনের অবিচ্ছিন্ন ১৭৪ রানের রেকর্ড জুটিতে ৭ বল আগেই ম্যাচ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৪ উইকেটের এ জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজেও শুভসূচনা হলো বাংলাদেশের। এছাড়া বিশ্বকাপ সুপার লিগেও পাওয়া গেলো পূর্ণ ১০ পয়েন্ট। এখন ১৩ ম্যাচে ৯০ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ। শীর্ষে থাকা ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ৯৫ পয়েন্ট।
২১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ফজল হক ফারুকির করা প্রথম ওভারের শেষ দুই বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইতিবাচক শুরু করেছিলেন তামিম ইকবাল। নিজের পরের ওভারেই ঘুরে দাঁড়ান ২১ বছর বয়সী এ পেসার। সেই ওভারের তৃতীয় বলে কট বিহাইন্ড হন লিটন দাস (৮)।
শেষ বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন অগ্রজ ওপেনার তামিম ইকবাল (১)। এ দুই উইকেটের একটিতেও আম্পায়ার প্রথমে আঙুল তোলেননি। তবে দুইবারই রিভিউ নিয়ে উইকেট তুলে নেয় আফগানরা। মিডল স্ট্যাম্পে পিচ করে হালকা ভেতরে ঢোকা বলে ব্যাটের ভেতরের কানায় লাগে লিটনের। প্রায় একই লেন্থ থেকে স্ট্যাম্পের লাইনে থাকা বল গিয়ে আঘাত হানে তামিমের প্যাডে।
দুই ওপেনারকে হারিয়ে শুরুর ধাক্কা কাটানোর মিশনে নেমে বিপদ আরও বাড়িয়ে সাজঘরে ফেরেন অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম (৩)। ফারুকির গুড লেন্থে পিচ করা ডেলিভারি ব্যাটে খেলতে পারেননি তিনি। বল আঘাত হানে প্যাডে। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত জানান। রিভিউ নিয়েও নিজের উইকেট বাঁচাতে পারেননি মুশফিক, উল্টো খোয়া যায় একটি রিভিউ।
একই ওভারের শেষ বলে ব্যাট-প্যাডের ফাঁক গলে বোল্ড হয়ে যান অভিষিক্ত ইয়াসির আলি রাব্বি (০)। এই মাঠেই নিজের টেস্ট অভিষেকে প্রায় একইভাবে বোল্ড হয়েছিলেন ইয়াসির। তার বিদায়ে মাত্র ১৮ রানেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দায়িত্ব বর্তায় সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কাঁধে। কিন্তু হতাশ করেন সাকিব।
মুজিব উর রহমানের করা অষ্টম ওভারের চতুর্থ বলে বোল্ড হন সাকিব। অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে প্লেইড হন ১৫ বলে ১০ রান করা সাকিব। তার বিদায়ে পাওয়ার প্লে’র মধ্যেই পতন ঘটে ৫ উইকেটের। প্রথম দশ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৩৯ রান।
অবশ্য এটিই রেকর্ড নয়। পাওয়ার প্লে’তে সর্বোচ্চ ৭ উইকেট হারানোর রেকর্ড রয়েছে খোদ আফগানিস্তানেরই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে মাত্র ১৭৬ রান তাড়া করতে নেমে ১০ ওভারেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা। সেদিন আফগানরা অলআউট হয় ৫৮ রানে।
তবে বাংলাদেশের জন্য এটিই রেকর্ড। এর আগে ২০১২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ছয় ওভারের মধ্যে মাত্র ১৩ রানেই ৫ উইকেট হারিয়েছিল তারা। আজ ৮ ওভারের মধ্যে ২৮ রানে পড়লো ৫ উইকেট। বিপদ আরও বাড়ে ইনিংসের ১২তম ওভারে দলীয় ৪৫ রানের মাথায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও (৮) সাজঘরে ফিরে গেলে।
মাত্র ৪৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে তখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া এক দল। সেখান থেকে যা হলো, তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য ঘটনাই বটে। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক তামিমও বলেছেন, ৪৫ রানে ৬ উইকেট পড়ার পর ম্যাচ জেতার কথা ভাবেননি তিনি।
তবে বিশ্বাস রেখেছিলেন মেহেদি মিরাজ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব। এ দুই তরুণ মিলে দেখেশুনে খেলতে থাকেন রশিদ খান, মুজিব উর রহমান, মোহাম্মদ নবীদের বিপক্ষে। কোনো ঝুঁকি না নিয়ে, বাড়তি কিছুর চেষ্টা না করে, বল বাই বল এগুতে থাকেন এ দুই তরুণ।
আর তাতেই মিলেছে সাফল্য। ইনিংসের ১২তম ওভারে মাহমুদউল্লাহর উইকেট উদযাপনের পর আর খুশির উপলক্ষ পায়নি আফগানিস্তান। উল্টো সাগরিকায় উপস্থিত হাজার চারেক দর্শককে আনন্দে ভাসিয়েছেন মিরাজ ও আফিফ। উইকেটের চারদিকেই রান করেছেন তারা।
ইনিংসের ৩১তম ওভারে ৬৪ বল মোকাবিলায় ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি তুলে নেন আফিফ। মিরাজকে পঞ্চাশের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে ৩৬তম ওভার পর্যন্ত। ইয়ামিন আহমেদজাইয়ের বলে পুল করে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন এ অফস্পিনিং অলরাউন্ডার।
ব্যক্তিগত মাইলফলক ছোঁয়ার পরেও নিজেদের কাজ শেষ ভাবেননি আফিফ-মিরাজ। বরং খেলেছেন আরও সতর্ক সাবধানী হয়ে। এরই মাঝে হয়ে যায় সপ্তম উইকেটে বাংলাদেশের ইতিহাসের সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ড। যা এতদিন ছিল ইমরুল কায়েস ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের দখলে, ১২৭ রান।
বাংলাদেশের রেকর্ড ভাঙতে পারলেও, শেষ পর্যন্ত ৩ রানের জন্য বিশ্বরেকর্ড ভাঙা হয়নি আফিফ-মিরাজের। শুরু যে ত্রাস ছড়িয়েছিলেন ফারুকি, শেষে তা ধরে রাখতে পারেননি। বরং তার করা ৪৮তম ওভারে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় আরও তরান্বিত করেন আফিফ ও মিরাজ।
পরে গুলবদিনের করা ৪৯তম ওভারের পঞ্চম বলে আসে সেই কাঙ্খিত মুহূর্ত। শর্ট লেন্থের ডেলিভারিটি পুল করেই স্বস্তির নিশ্বাস ছাড়েন আফিফ। তবে তার মধ্যে ছিল না উত্তেজনার লেশমাত্র। বরং নিজের কাজ যথাযথ করার তৃপ্তিই দেখা গেলো চোখেমুখে।
অবশ্য নন স্ট্রাইকে থাকা মিরাজই ঠিকই বাতাসে দুই হাত ছুড়ে করেছেন জয়ের উদযাপন। তিনি শেষ পর্যন্ত ১২০ বলে ৮৩ রান করে অপরাজিত থাকেন। আর আফিফের ব্যাট থেকে এসেছে ১১৫ বলে ৯৩ রানের ইনিংস। ব্যাটিংয়ের সঙ্গে কিপটে বোলিংয়ে ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন মিরাজ।
এর আগে টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নেমে শুরু থেকেই আফগানদের চেপে ধরে বাংলাদেশের বোলাররা। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মিলতে পারতো প্রথম সফলতা। আঁটসাঁট ফিল্ডিংয়ে রহমানউল্লাহ গুরবাজকে বেঁধে রাখার চেষ্টায় প্রায় সফলই ছিলেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু অল্পের জন্য বল চলে যায় শর্ট পয়েন্টে দাঁড়ানো আফিফ হোসেন ধ্রুবর হাতে লেগে।
অবশ্য জীবন পেয়েও কিছু করতে পারেননি আফগানিস্তানের উইকেটরক্ষক ব্যাটার। পরের ওভারেই মোস্তাফিজুর রহমানের বলে মিড অনে ধরা পড়েন ৭ রান করা গুরবাজ। তার ক্রস ব্যাটের শটে দীর্ঘক্ষণ বল ভেসে ছিল হাওয়ায়। পূর্ণ মনোযোগ ধরে রেখে তা নিরাপদে তালুবন্দী করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম ইকবাল।
প্রথম পাওয়ার প্লে’র দশ ওভারের মধ্যেই আরেক ওপেনারকে ফেরাতে পারতো বাংলাদেশ। তাসকিনের করা ষষ্ঠ ওভারে বাউন্সারে পুল করেছিলেন ইব্রাহিম জাদরান। বল সোজা চলে যায় ফাইন লেগে দাঁড়ানো মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে। কিন্তু যথাসময়ে ঝুঁকে সেটি হাতে জমাতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। ফলে ৩ রানে জীবন পান ইব্রাহিম।
তাসকিনের বলে জীবন পেয়ে পরে তাসকিনেরই পরের ওভারে ১ চার ও ১ ছয়ের মারে ১৫ রান তুলে নেন আফগান ওপেনার। যা খানিক চাপমুক্ত করে আফগানদের। অবশ্য এরপর ফের তাদেরকে চেপে ধরেন সাকিব আল হাসান ও শরিফুল ইসলাম। যে কারণে ৮ ওভারে ৪০ থেকে দলীয় পঞ্চাশে পৌঁছতে তাদের খেলতে হয় ১৩ ওভার পর্যন্ত।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে বাংলাদেশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন ইব্রাহিম ও তিন নম্বরে নামা রহমত শাহ। ইনিংসের ১৪তম ওভারে এ জুটি ভাঙেন বাঁহাতি পেসার শরিফুল। গুড লেন্থের ডেলিভারি কভার ড্রাইভের চেষ্টা করেছিলেন ইব্রাহিম। ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো ইয়াসির রাব্বির হাতে।
বাংলাদেশের অভিষিক্ত ক্রিকেটারের ক্যাচে পরিণত হয়ে ফেরা ইব্রাহিমের ব্যাট থেকে আসে ১ চার ও ১ ছয়ের মারে ২৩ বলে ১৯ রান। পরের ওভারে আক্রমণে এসে মেইডেন দিয়ে প্রথম ঘণ্টার সমাপ্তি ঘটান মেহেদি হাসান মিরাজ। প্রথম ঘণ্টায় খেলা ১৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৫৬ রান করে আফগানিস্তান।
এরপর ইনিংস গড়ার কাজে মন দেন অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদি ও রহমত শাহ। কিন্তু নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে তাদেরকে রান করার তেমন সুযোগ দিচ্ছিলেন না শরিফুল ও মিরাজ। টানা পাঁচ ওভারের স্পেলে এক মেইডেনসহ মাত্র ১০ রান খরচায় ১ উইকেট নেন তরুণ বাঁহাতি পেসার শরিফুল।
শরিফুলকে আক্রমণ থেকে সরিয়ে ২০তম ওভারে দ্বিতীয় স্পেলে আনা হয় তাসকিনকে। এক ওভার পরই নিজের প্রথম সাফল্য পান এ ডানহাতি পেসার। তার ব্যাক অব লেন্থের ডেলিভারিটি রহমতের ব্যাটে কানা ছুঁয়ে জমা পড়ে উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসে। দৃঢ় ব্যাটিংয়ে ৬৯ বলে ৩ চারের মারে ৩৪ রান করেন রহমত।
রহমতের বিদায়ে উইকেটে আসেন অলরাউন্ডার নাজিবউল্লাহ জাদরান। ফলে উইকেটে একসঙ্গে দেখা যায় দুই বাঁহাতি ব্যাটারকে। তাই মেহেদি মিরাজকে আর আক্রমণ থেকে সরাননি তামিম। চতুর্থ উইকেট জুটিতে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা দেখা যায় নাজিব ও হাশমতউল্লাহর ব্যাটে।
তাই জুটি ভাঙার জন্য ২৮তম ওভারে আরেক অফস্পিনার মাহমুদউল্লাহকে আনা হয় বোলিংয়ে। হতাশ করেননি এ অভিজ্ঞ স্পিনার। তার ওভারের শেষ বলে কাট করতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন আফগান অধিনায়ক। আউট হওয়ার আগে ৩ চার ও ১ ছয়ের মারে ৪৩ বলে ২৮ রান করেন হাশমতউল্লাহ। সেই ওভারেই অবশ্য দলীয় শতরান পূরণ হয় আফগানদের।
একশ রান করতে ২৮ ওভার খেলে ফেলার পর দলের দায়িত্ব নেন দুই অলরাউন্ডার নাজিবউল্লাহ ও মোহাম্মদ নবি। এরই মাঝে টানা দশ ওভারের স্পেল করে ফেলেন মিরাজ। ১৫তম ওভার থেকে ৩৩তম ওভার পর্যন্ত টানা ১০ ওভারে ৩ মেইডেনসহ মাত্র ২৮ রান খরচ করেন এ ডানহাতি অফস্পিনার। তবে বাঁহাতি স্পিনার সাকিবের ওপর চড়াও হন নাজিব, পরপর তিন ওভারেই পান বাউন্ডারির দেখা।
অন্যপ্রান্তে দেখে শুনে খেলতে থাকেন নবি। দুজনের দায়িত্বশীল ব্যাটে ৩৭ ওভারেই পূরণ হয়ে যায় আফগানিস্তানের দলীয় দেড়শ রান। এ জুটিকে বেশি দূর এগুতে দেননি তাসকিন। নিজের শেষ স্পেলে আক্রমণে এসে তৃতীয় বলেই নবিকে ফেরান তিনি। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করেছিলেন নবি।
ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে যাওয়া বলটি গ্লাভসবন্দী করে ম্যাচে নিজের তৃতীয় ক্যাচ ধরেন মুশফিক। নবির ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ২০ রান। নবির বিদায়ে ভাঙে ৬৩ রানের জুটি। অগ্রজ সতীর্থ ফিরে গেলেও রয়েসয়ে নিজের ফিফটি তুলে নেন নাজিব। ক্যারিয়ারের ১৩তম ফিফটি করতে তিনি খেলেন ৭০ বল। যেখানে ছিল ৪ চার ও ১ ছয়ের মার।
নাজিবের সঙ্গে জুটি বেঁধে আফগানদের লড়াকু সংগ্রহের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন গুলবদিন নাইব। মনে হচ্ছিল এ জুটিতেই পার হয়ে যাবে দুইশ রান। তা হতে দেননি সাকিব আল হাসান। খানিক খরুচে দিন কাটানো সাকিব ৪৫তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন। ওভারের তৃতীয় বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে দেলেন ১৭ রান করা গুলবদিনকে। শেষ বলে রানের খাতা খোলার আগেই বোল্ড হয়ে যান রশিদ খান।
পরের ওভারে দারুণ এক স্লোয়ারে মুজিব উর রহমানের বিদায়ঘণ্টা বাজান মোস্তাফিজ। মাত্র ৯ বলের ব্যবধানে ৩ উইকেট নেওয়ায় তখন দুইশর আগেই জাগে আফগানদের অলআউট করার সম্ভাবনা। কিন্তু নাজিব তখনও টিকে ছিলেন। তিনিই দলকে নিয়ে যান ২১৫ রান পর্যন্ত। তবে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকতে পারেননি।
শরিফুলের করা ইনিংসের ৪৯তম ওভারে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অনে মাহমুদউল্লাহর হাতে ধরা পড়েন ৬৭ রান করা নাজিব। তার ব্যাটেই মূলত ২১৫ পর্যন্ত গিয়েছে আফগানিস্তানের ইনিংস। শেষ ওভারের প্রথম বলে ইয়ামিন আহমেদজাইকে ফিরিয়ে আফগানিস্তানের ইনিংস মুড়িয়ে দেন মোস্তাফিজ।
সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন মোস্তাফিজই। এছাড়া শরিফুল, সাকিব ও তাসকিনের শিকার ২টি করে উইকেট। কোনো উইকেট না পেলেও কিপটে বোলিংয়ে ১০ ওভারে ৩ মেইডেনসহ মাত্র ২৮ রান খরচ করেছেন মিরাজ। পরে ম্যাচ জেতানো ব্যাটিংয়ে তিনিই পেয়েছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech