মনজু চৌধুরী॥ কমলগঞ্জের শমশেরনগর বাজারের প্রধান নালার মুখ (কালভার্ট) ময়লা-আবর্জনা ফেলায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ছোট নালাগুলো উপচে পয়োনিষ্কাশনের পানি হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের শমশেরনগর-কমলগঞ্জ সড়ক দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ডুবে গেছে রাস্তার একাংশ। এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা দুই মাস ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনকে জানালেও এ সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। ফলে জনদূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
স্থানীয় ব্যক্তি ও ব্যবসািেয়দর অভিযোগ, দু’টি কাঁচাবাজারের দোকানদারও স্থানীয় খাবারের হোটেলগুলো সারা দিনের জমানো ময়লা-আবর্জনা ফেলে ওই কালভার্টের মুখ বন্ধ করে ফেলেছে। ওই কালভার্টের মুখে আশপাশের ছোট নালাগুলো এসে মিলেছে। ময়লা-আবর্জনার স্তূপ থাকায় মাছের বাজার এলাকার উত্তর ও দক্ষিণ দিকের দু’টি নালা এবং চৌমুহনা থেকে দক্ষিণমুখী একটি নালার পয়োনিষ্কাশনের পানি উপচে পড়ে রাস্তার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ময়লা ও পয়োনিষ্কাশনের পানি মাড়িয়ে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচল করতে হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের চাকা থেকে ময়লা পানি ছিটকে পথচারীদের পোশাক নষ্ট হচ্ছে। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করাই কঠিন হয়ে পড়েছে।
এলাকাবাসী শামসুদ্দিন আহমদ ও সুমন আহমদ জানান, কমলগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ জনপদ ও ব্যবসাকেন্দ্র এ শমশেরনগর বাজার। এ বাজারে সপ্তাহে রবি ও বুধবার দুই দিন হাট বসলেও সপ্তাহের সাত দিনই বাজারটি ব্যস্ত থাকে। বাজারে দু’টি স্থায়ী কাঁচাবাজার ও কাঁচামালের পাইকারি বেশ কিছু আড়ত থাকায় প্রতিদিনই এসব আড়ত ও দোকানে প্রচুর ময়লা-আবর্জনা জমে। দোকানিরা সারা দিন ময়লা-আবর্জনা জমিয়ে সন্ধ্যার পর বা ভোরে হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের বড় নালার মুখে দীর্ঘদিন থেকে ফেলে আসছেন। এভাবে নালার মুখ বন্ধ করে দিয়েছেন।
হাজী মো. উস্তওয়ার বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সালাউদ্দীন তফাদার বলেন, বিদ্যালয়ের পাশে রয়েছে চা-বাগানের প্লান্টেশন এলাকা। এ প্ল্যান্টেশন এলাকা থেকে বৃষ্টির পানি এ নালা দিয়ে প্রবাহিত হয়। সামনে আসছে বর্ষার দিন। তার আগে নালার মুখটি পরিষ্কার না করলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে। তিনি আরও বলেন, ইউপি চেয়ারম্যান, বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি, বণিক কল্যাণ সমিতি ও বাজার ইজারাদার নালার মুখে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।
শমশেরনগর বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান বলেন, বাজার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার বিষয়টি বাজার ইজারাদারের দায়িত্ব। নালার মুখে ময়লা-আবর্জনা না ফেলতে দোকানিদের বলা হয়। তারপরও তাঁরা নালার মুখে ময়লা – আবর্জনা ফেলেন।
শমশেরনগর বাজারের ইজারাদার আশাইদ আলী বলেন, কিছুদিন পরপর তিনি এখানের ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করান। দোকানিরা একটু সচেতন হলেই নালায় ও স্কুলের সামনে ময়লা–আবর্জনা ফেলা বন্ধ হবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, নালার মুখসহ যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা অপরাধ। তিনি ইউপি চেয়ারম্যানকে আবর্জনা পরিষ্কার করার ব্যবস্থা নিতে বলবেন বলেও জানান।
এব্যাপারে স্থানীয় শমসেরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জুয়েল আহমদ জানান, শুধু নালার মুথে ময়লা ফেলার জন্য এমন অবস্থার সৃষ্ঠি হয়নি। তিনি বলেন, রাস্তার দুই পাশ দখল করে স্থাপনা তৈরী করাতে নালাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এজন্য তিনি ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলেও জানান।