সারা দেশে কারফিউ জারি করেছে শ্রীলঙ্কার পুলিশ। দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র ঘাটতির মুখে সরকারবিরোধী গণবিক্ষোভ ঠেকাতে শ্রীলঙ্কায় পুলিশ ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ ঘোষণা করেছে। শনিবার দেশটির পুলিশ বিভাগ থেকে এই কারফিউ জারির ঘোষণা দেওয়া হয়। শনিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

শ্রীলঙ্কা পুলিশের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে এই কারফিউ কার্যকর হবে এবং পরবর্তী সোমবার সকালে তুলে নেওয়া হবে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে দেশটিতে উদ্ভূত অর্থনৈতিক সংকটের কারণে সরকারের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের গণবিক্ষোভ দমনে পুলিশ কর্তৃপক্ষকে ব্যাপক ক্ষমতা প্রদান করেন।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করার মাত্র এক দিন পর এই কারফিউ জারি করা হলো পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে।

এদিকে কারফিউ ও জরুরি অবস্থা জারির প্রতিক্রিয়ায় ২ কোটি ২০ লাখ নাগরিক-অধ্যুষিত দেশটির সরকার ব্যাপকভাবে সমালোচনার মুখোমুখি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে জরুরি অবস্থা ও কারফিউ জারি করে সেনাবাহিনীকে বেসামরিক নাগরিকদের গ্রেপ্তারসহ প্রশাসকের ভূমিকায় কাজ করার ক্ষমতা দেওয়ায় প্রতিবাদে ফেটে পড়েন অনেকে।

পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলে তাঁরা যেন মনোবল না হারান সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে লিখেন, ‘টিয়ার গ্যাস দেখে নিরুৎসাহিত হবেন না। খুব শিগগিরই তাঁদের অস্ত্র কেনার ডলার শেষ হয়ে যাবে।’
এদিকে দেশটির সাধারণ নাগরিকেরা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতেও আন্দোলন গড়ে তুলেছেন। দেশটির ক্ষমতায় থাকা রাজাপক্ষে পরিবারের পদত্যাগ চেয়ে ‘#GoHomeRajapaksas’ এবং ‘#GotaGoHome’ হ্যাশট্যাগ লিখে বিগত কয়েক দিন ধরেই টুইটার, ফেসবুকে সমর্থন জোগাড়ের চেষ্টা করছেন।

উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর দেশটি বর্তমানে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে রয়েছে এবং দেশটিতে প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের তীব্র ঘাটতি, তীব্র মূল্যবৃদ্ধি ও প্রায় অথর্ব হয়ে যাওয়া বিদ্যুৎ ব্যবস্থার সঙ্গে লড়াই করছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *