ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: গৃহকর্মী হিসেবে পাঠাতে হলেও নারীদের শিক্ষিত করে বিদেশে পাঠানো উচিত বলে মনে করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ নিরক্ষর নারীদের আমরা বিদেশ পাঠাই। এটা বন্ধ হওয়া উচিত। অল্প শিক্ষা, অর্ধ শিক্ষা কিংবা অষ্টম-নবম শ্রেণি পাশ হলে, তার সচেতনতা কিংবা বুঝতে পারার ক্ষমতা শতগুণ বেড়ে যায়। আর এখান থেকেই শক্তি চলে আসে। তখন কিন্তু কেউ সুযোগ নিতে পারে না। গৃহকর্মী হিসেবে পাঠাতে হলেও আমি মনে করি, শিক্ষিত নারীদের পাঠানো উচিত। শিক্ষিত বলতে আমি মনে করি অন্তত অষ্টম-দশম শ্রেণি পাস।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর প্রবাসী কল্যাণ ভবনের বিজয় ৭১ হলে নারী অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা ২২টি সংগঠনের জোটের ‘নারী অভিবাসীদের সম্মিলিত কণ্ঠ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। কানাডার গ্লোবাল এফেয়ার্সের অর্থায়নে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় সেন্টার ফর উইমেন অ্যান্ড চিলড্রেন স্টাডিজ জোটের সেক্রেটারিয়েট হিসেবে কাজ করবে।
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী বলেন, ‘গার্মেন্টস সেক্টরে নারীদের সম্পৃক্ততা দেশের জন্য এক ধরনের গেম চেঞ্জার বিষয়। বিদেশে কর্মী হিসেবে নারীদের অভিবাসন এই গার্মেন্টস থেকেও বড় গেম চেঞ্জিং বলে আমি মনে করি। আমরা এই সুযোগ খুব তাড়াতাড়ি মিস করে যাচ্ছি। কারণ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড বলে একটা কথা আছে। আমাদের জনসংখ্যায় কাজ করার মতো বয়স আছে। এই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড আমাদের সঙ্গে আরও অন্তত ২০ বছর থাকবে। আমরা যদি এই সময়ে আমাদের নারীদের বেকার রাখি, ২০ বছর পর কিন্তু তারা কোনও কাজ করতে পারবে না। বিদেশ যাওয়া একজন নারীর একান্ত ব্যক্তিগত পছন্দ। আমাদের দেখতে হবে কীভাবে আমরা সে কাজটি সহজ করতে পারি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘নিরক্ষর নারীদের যখন প্লেনে বসানো হয় এবং বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়, তখন তাদের চেয়ে অসহায় মানুষ আর কেউ হতে পারে না। আমাদের এখানে শক্ত ভূমিকা পালন করতে হবে। যত দ্রুত আমরা ভূমিকা রাখতে পারবো তত তাড়াতাড়ি যেসব নির্যাতনের খবর আমরা পাই তা কমে আসবে। বিদেশ গমনেচ্ছু নারীদের জানাতে হবে কোথায় গেলে কী পাওয়া যাবে। আমাদের জেলা জনশক্তি অফিস, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রায় সব জেলায় আছে। সেখানে আমরা পর্যাপ্ত তথ্য সরবরাহ করার চেষ্টা করি। সচেতনতার জায়গায় আমাদের কাজ করতে হবে। কিন্তু সম্পূর্ণ নিরক্ষর মানুষকে সচেতন করা সম্ভব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘নারীদের জন্য বিরাট একটি বাজার খুলে আছে সেবা খাতে- কেয়ার গিভার ও নার্সিং। এটা অনেক বড় খাত। আমি মনে করি এই খাতের প্রশিক্ষণের জন্য আলাদা টিটিসি হওয়া প্রয়োজন। ভাষা শিক্ষায় কিছুটা হলেও জোর দিতে হবে। কারণ ইউরোপের দেশগুলোতে মোটামুটি ইংরেজি জানা থাকলেও কাজ হয়।’
অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, জোটের চেয়ার ইশরাত আমীন, কো চেয়ার ফওজিয়া খন্দকার, ড. রুবিনা ইয়াসমিন, সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট ফরিদা ইয়াসমিন এবং জোটের অন্তর্ভুক্ত ২২টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *