মনজু চৌধুরী॥ বড়লেখার হাকালুকি হাওরপাড়ের দর্শনা খালের ৮ কিলোমিটার স্থান পুনঃখননে এলাকার দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা ও অকাল বন্যায় ফসলহানী নিরসন হতে যাচ্ছে। এ খালখননে দ্রুত পানি নিষ্কাশন, কৃষির উন্নয়ন ছাড়াও বৃদ্ধি পাবে মাছের উৎপাদন। পাল্টে যাবে এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থা। খনন কাজ পরিদর্শণে গেলে স্থানীয় বাসিন্দারা এভাবেই তাদের অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।

জানা গেছে, ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের (২য় পর্যায়) আওতায় দর্শনা খালের প্রায় ৮ কিলোমিটার পূনঃখনন কাজ জাইকার অর্থায়নে বাস্তবায়ন করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ। এতে ব্যয় হচ্ছে কোটি টাকারও বেশি। ৯টি এলসিএস গ্রুপ ও ৪টি এস্কেভেটরের মাধ্যমে প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ ইতিমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে।

সরেজমিনে গেলে তালিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এখলাছুর রহমান, মুর্শিবাদকুরা গ্রামের শফিক উদ্দিন টুনু, পাটনা গ্রামের ফয়জু রহমান, বড়ময়দান গ্রামের আব্দুল খালিক বাদল প্রমুখ জানান, বিগত কয়েক যুগ দর্শনা খালটি পুনঃখনন না করায় ভরাট হয়ে গেছে। পানি সংকটে উভয় পাড়ের শত শত একর কৃষি জমি অনাবাদি থাকে। কিছু জমিতে চাষাবাদ করা হলেও দ্রুত পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় অকাল বন্যায় কৃষকের ফসল তলিয়ে যায়। বর্ষায় অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে উজানের ১০/১২টি গ্রামে মারাত্মক জলাবদ্ধতার সৃষ্ঠি হয়। এ খালটি পুনঃখননের কারণে এলাকার কৃষক ও উজানের হাজার হাজার বাসিন্দা ব্যাপক উপকৃত হবেন। তারা জানান, দর্শনা খালটি চান্দগ্রামের বোরোদল নদীর সাথে সংযুক্ত করা গেলে এলাকাবাসি আরো বেশি উপকৃত হতেন।

এলজিইডির সাইট ইঞ্জিনিয়ার জানান, এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে ৮৪৩ হেক্টর আবাদি জমির ব্যাপক উপকার হবে। কৃত্রিম জলাবদ্ধতা অনেকাংশে কমে যাবে। কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে এলাকার দারিদ্রতা কমে লোকজনের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে। অতিদ্রুত পানি নিষ্কাশিত হওয়ায় অকাল বন্যার আশংকাও থাকবে না। শুষ্ক মৌসুমে স্লুইচ গেইটের মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার হাত থেকে উজানের ৮/১০ গ্রামের ফসল রক্ষা পাবে। খালটির খনন কাজে এলাকাবাসিও বেশ খুশি।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *