মেয়াদ শেষ হলেও নানা টালবাহানা করছে হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্স: টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা

প্রকাশিত: ৭:২৫ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০২২

মেয়াদ শেষ হলেও নানা টালবাহানা করছে হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্স: টাকা পাচ্ছেন না গ্রাহকরা

মনজু চৌধুরী॥ একটুু ভালো থাকার জন্য ভবিষ্যতের সঞ্চয় আর বীমা কোম্পানির লোভনীয় চটকদার কথায় বিশ্বাস করে হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্স বীমা প্রকল্পের অধীনে পলিসি করেছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের লামুয়া গ্রামের বাসিন্দা হিন্দাই উল্লার স্ত্রী কবিরুন নেছা (৬০)।
২০০৯ সালের ১২ জুলাই মাসে ১২ বছর মেয়াদী বার্ষিক ২১৪১ টাকা ৪০ পয়সা কিস্তিতে তার ২০ হাজার টাকার পলিসি করা ছিল। পলিসি নং-৯৫০৮৭৭৫৪-৮। দীর্ঘ ১২ বছর এই দরিদ্র কবিরুন নেছা সংসারের খরচ বাঁচিয়ে সঞ্চয়ের কিস্তি দিয়ে আসছিলেন। তার পলিসির মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২১ সালের ১২ জুলাই। অথচ প্রায় এক বছর আগে মেয়াদপূর্তি হলেও কবিরুন নেছা তার বীমার টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। এদিকে ২০০৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর একই অংকের ২০ হাজার টাকার ১২ বছর মেয়াদী বীমা (পলিসি নং ৯৫০৭৭৩৫১-৫) করেন কবিরুন নেছার বোন ছালেমা খাতুন। তিনি পূর্ব লামুয়া গ্রামের মৃত ময়না মিয়ার স্ত্রী। তার পলিসির মেয়াদপূর্তি হয় ২০২০ সালের ২৮ ডিসেম্বর। অথচ তিনি মারা যান ২০১৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর। তিনি মারা যাবার আগ পর্যন্ত ২ হাজার ১৬৬ টাকা হারে প্রতিবছর পলিসির প্রিমিয়াম কোম্পানির রিসিটের মাধ্যমে জমা দেন।
কবিরুন নেছা বলেন- দীর্ঘদিন ধরে মৌলভীবাজারের অফিসে যাচ্ছি,গিয়ে অফিস বন্ধ পাচ্ছি। আমার পলিসির টাকা জমা দেয়ার পর মেয়াদ শেষ হয়ে টাকা উত্তোলন করতে না পারায় আমি হতাশ। কার কাছে বিচার পাব। তিনি বলেন,আমার বোন অনেক কস্টে প্রতি বছর কিস্তি জমা দিত। এখন সে মারা গেছে। তার সকল কাগজ পত্র জমা দেয়ার পর তাদের কাউকে অফিসেও পাওয়া যায় না। প্রায়সময় তালাবদ্ধ থাকে।
তিনি অভিযোগ করেন, মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মুনাফা তো দূরের কথা, এখন আসল টাকাও ফেরত দেওয়া হচ্ছে না। কোম্পানিতে বিমা দাবির টাকা চেয়ে গেলে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। বীমা দাবির টাকা বুঝে পেতে প্রতিষ্ঠানটিতে দিনের পর দিন ধরনা দিচ্ছেন। কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। দাবির অর্থ পরিশোধে নানা টালবাহানা করছে হোমল্যান্ড লাইফ ইনস্যুরেন্স।
তিনি বলেন, আমরা গরিব মানুষ। কষ্টের সংসার। তারপরও নিয়মিত বিমার প্রিমিয়ামের টাকা জমা দিয়েছি। মেয়াদ শেষে বিমা দাবির টাকা চাইলে কোম্পানির প্রতিনিধিরা সব কাগজপত্র নিয়ে নেন। কিন্তু বীমা দাবির টাকা দিচ্ছেন না।
এদিকে একই অভিযোগ পাওয়া গেছে ফারইষ্ট লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানীর বিরুদ্ধে। শ্রীমঙ্গল উপজেলার আঐ গ্রামের মরহুম আব্দসু সত্তারের পুত্র মো.আজমত আলী। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক। তিনি ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বার্ষিক ৭হাজার ৯৭৯টাকার প্রথম কিস্তি দিয়ে ১০ বছর মেয়াদী বীমা করেন। (পলিসি নং ৪৩০০০৭২৪১-৩ শ্রীমঙ্গল শাখা) এর পর থেকে প্রতিবছর নিয়মিত একই অংকের ১০ কিস্তি রিসিটের মাধ্যমে ইনস্যুরেন্স কোম্পানীতে টাকা জমা দেন। তার পলিসির মেয়াদ ২৩ মার্চ ২০২১ সালে শেষ হলেও অদ্যাবধি পর্যন্ত তিনি ১ লক্ষ দুইহাজার টাকার বীমার অংক বুঝে পাননি। আজ কাল বলে তাকে সময়ক্ষেপন করে হয়রানী করা হচ্ছে।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ