প্রকাশিত: ১২:৪৫ পূর্বাহ্ণ, মে ১১, ২০২২
ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: করোনা মহামারিকালে সাংবাদিকদের নানা ক্ষেত্রে ঝুঁকির মধ্যে পড়তে হয়েছে। যথেষ্ট সুরক্ষা ব্যবস্থা ছাড়াই ঘরের বাইরে কাজ করতে হয়েছে। অনেকে পূর্ণ বেতন পাননি। এতে সামাজিকভাবেও কোণঠাসা হয়েছেন অনেকে। এ ছাড়া জনসম্পৃক্ততায় সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকলেও এখন পর্যন্ত ৪০ শতাংশ সাংবাদিক কোভিড টিকা নেননি।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্টাডিজের এক জরিপে এমন তথ্য ওঠে এসেছে। আজ মঙ্গলবার সংস্থাটি ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জরিপের তথ্য উপস্থাপন করে।
কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে দেশের আটটি বিভাগের ১০০ জন সাংবাদিকের ওপর এ জরিপ চালানো হয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬৩ শতাংশ ছিলেন ঢাকা বিভাগের, বাকি ৩৭ শতাংশ দেশের অন্য সাতটি বিভাগে কর্মরত। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭০ শতাংশ পুরুষ এবং ৩০ শতাংশ নারী। ২০২০ সালে মহামারির প্রথম লকডাউনের সময়কে বিবেচনায় নিয়ে পরিচালিত জরিপটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের আগস্টের মধ্যে সম্পন্ন করা হয়।
এ সময় কর্মক্ষেত্রে কোভিড মহামারির প্রভাব, সাংবাদিকতার মৌল তাত্ত্বিক বিষয়াদি, নৈতিকতা, সামাজিক অবস্থান ইত্যাদি বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
জরিপে উত্তরদাতাদের ৪৮ শতাংশ স্বাস্থ্য সাংবাদিকতার তাত্ত্বিক বিষয়াদি সম্পর্কে জানেন না। জরিপে অংশ নেওয়াদের মধ্যে ৮৮ শতাংশ বলছেন, তাঁরা দুর্যোগ বা মহামারি পরিস্থিতির সময় মাঠ পর্যায়ে প্রতিবেদনের জন্য কোনো প্রকার প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেননি। উত্তরদাতাদের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ সাংবাদিক কোভিড-১৯ মহামারি সম্পর্কিত প্রশিক্ষণে অংশ নিয়েছেন এবং তাঁরা এটিকে বেশ উপকারী বলে মনে করেন। এ ছাড়া উত্তরদাতাদের মধ্যে ৩৪ শতাংশ করোনাভাইরাসে সংক্রামিত হয়েছিলেন।
সাংবাদিকদের কাজের অবস্থার ওপর করোনার প্রভাব বিষয়ে উত্তরদাতারা জানান, সাংবাদিকদের এক-তৃতীয়াংশেরও কম (২৭ %) বাসা থেকে কাজ করেছেন। যাঁরা হোম অফিস করেছেন, তাঁদের মধ্যে ৪৭ শতাংশ সাংবাদিক বাসা থেকে কাজ করার সময় সহকর্মীদের সঙ্গে সঠিকভাবে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারেননি এবং তাঁদের মধ্যে মাত্র ২৯ শতাংশ সাংবাদিককে তাঁদের অফিস থেকে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। মোট উত্তরদাতাদের ৪০ শতাংশ সাংবাদিককে বাসা থেকে এবং অফিসে সশরীরে উপস্থিত হয়ে দুইভাবেই কাজ করতে হয়েছে। অবশিষ্ট ৩৩ শতাংশ সাংবাদিক অফিসে সশরীরে উপস্থিত হয়ে কাজ করেছেন।
সাংবাদিকদের আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে উত্তরদাতারা বলেন, তাঁদের অর্ধেকেরও কম মহামারির আগের বেতন কাঠামো বজায় রাখতে পেরেছেন। উত্তরদাতাদের ৪০ শতাংশ মহামারির সময়ে নিয়মিতভাবে সম্পূর্ণ বেতন পেয়েছেন এবং ৩৬ শতাংশ তাদের মূল বেতনের অর্ধেক পেয়েছেন। বাকি ২৪ শতাংশ সাংবাদিক মাসিক বেতন পুরোটাই পেয়েছেন কিন্তু অনিয়মিতভাবে। অধিকন্তু, উত্তরদাতাদের ৪ শতাংশ সাংবাদিক মহামারির কারণে চাকরি হারিয়েছেন।
মহামারিকালে সাংবাদিকদের সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে জরিপে উঠে আসে, এ সময় প্রায় এক-চতুর্থাংশ সামাজিকভাবে হেনস্তার সম্মুখীন হয়েছেন। প্রতিবেশী এবং এলাকাবাসী সাংবাদিকদের পেশার জন্য তাঁদের এড়িয়ে চলেছে এবং সামাজিকভাবে তাঁদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছিল। ৬০ শতাংশ সাংবাদিক বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপের মুখোমুখি হয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে সংক্রমিত হওয়ার ভয়, তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ঝুঁকিতে ফেলা, আর্থিক অনিশ্চয়তা ইত্যাদি।
কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা সম্পর্কে জানানো হয়, করোনাকালে ৫৭ শতাংশ সাংবাদিক অফিস থেকে নিরাপত্তা সামগ্রী পেয়েছেন এবং উত্তরদাতাদের মধ্যে অর্ধেক মহামারির সময়ে অফিস থেকে পরিবহন সুবিধা পেয়েছেন।
এছাড়া ৪৩ শতাংশ উত্তরদাতা জানিয়েছেন কোভিড-১৯ টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন, ১৭ শতাংশ শুধু প্রথম ডোজ নিয়েছেন। ৪০ শতাংশ কোভিড টিকাই নেননি। যাঁরা টিকা নিয়েছেন তাঁদের এক-তৃতীয়াংশ অফিসের মাধ্যমে টিকা পেয়েছেন।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech