২২তম সম্মেলনকে ঘিরে আগামী নির্বাচনে নতুন নেতৃত্বের বড় চ্যালেঞ্জ আওয়ামীলীগের

প্রকাশিত: ৭:০৪ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২২, ২০২২

২২তম সম্মেলনকে ঘিরে আগামী নির্বাচনে নতুন নেতৃত্বের বড় চ্যালেঞ্জ আওয়ামীলীগের

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: আগমী শনিবার ২২তম সম্মেলন নতুন নেতৃত্ব পাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দলটি। আগেরবারের সম্মেলনের চেয়ে এবারেরটা ভিন্ন এবং ব্যতিক্রম। এই সম্মেলনের এক বছরের কম সময়ের ব্যবধানে হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন।

সম্মেলনের মাধ্যমে আসা নতুন নেতৃত্বকেই নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দিতে হবে। তাই বড় এক চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন দায়িত্ব নিতে হবে নতুন নেতৃত্বকে। দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে বিরোধী শক্তির চাপ সামলে দায়িত্ব পালন করতে হবে নেতাদের। এবারের নেতৃত্বে বড় কোনো পরিবর্তন না আসার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। নেতৃত্বের বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে দলের সভাপতি শেখ হাসিনার ওপর।

কারণ দলের নেতা এবং কাউন্সিলররা নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ভার বরাবরই দলীয় সভানেত্রীর ওপর ছেড়ে দেন।
তবে আগামী নির্বাচনকে ঘিরে নতুন নেতৃত্বের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে অনেক শীর্ষ নেতারা মন্তব্য করেন। নেতারা বলেন, চ্যালেঞ্জ নিয়েইতো আওয়ামী লীগ সবসময় এগিয়ে যায়। আর সফল হয়। সম্মেলনের আগে কোনো পদে কেউ আনুষ্ঠানিক প্রার্থিতা ঘোষণা দেননি, প্রচারেও নামেননি কেউ। অথচ ভেতরে ভেতরে কাঙ্ক্ষিত পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ করেছেন নেতারা।

আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন শুধু একটি রাজনৈতিক দলের সম্মেলন নয়, এই সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসীকে স্বপ্নও দেখায় আওয়ামী লীগ। এবারও সেই স্বপ্নের কথা থাকবে ঘোষণাপত্রে। স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে আওয়ামী লীগের করণীয় এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখার অঙ্গীকার থাকবে ঘোষণাপত্রে। সেভাবেই কাজ চলছে। দলটির শীর্ষ পদে বা সভাপতি হিসেবে ৪১ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ এখন টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় রয়েছে। দলের শীর্ষ পদে অন্য কারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার নজির নেই। এখন পর্যন্ত সভাপতি পদে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করেন।

শেখ হাসিনা এবারও সভাপতি পদে থাকছেন- এটা নিশ্চিত। ফলে দলের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদ সাধারণ সম্পাদকের পদ নিয়েই মূল আলোচনা। টানা দুই মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন ওবায়দুল কাদের। সাধারণ সম্পাদক পদে এবার আগ্রহীর তালিকায় অনেকেই রয়েছেন।

আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ২০১৬ সালের জাতীয় সম্মেলনের মাধ্যমে এই পদে দায়িত্ব পান। এখন তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আবার এই পদে দায়িত্ব পালনে আগ্রহী, এমন ধারণা দলের ভেতরে রয়েছে। দলটির গঠনতন্ত্রে সাধারণ সম্পাদক পদে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী হওয়ার কোনো বিধান নেই। ফলে কেউ নিজেকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেননি। আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, সম্ভাব্য সাধারণ সম্পাদক কে-এ ব্যাপারে অতীতে তাদের দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে সম্মেলনের কিছুদিন আগে ইঙ্গিত দিতে দেখা গেছে। কিন্তু আগ্রহীরা অনেক আগে থেকেই তাদের সাংগঠনিক দক্ষতা দেখানোর চেষ্টা করতেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। যদিও এবার এখনও দলের শীর্ষ পর্যায় থেকে কোনো ইঙ্গিত আসেনি।

এখন জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দলকে নিয়ন্ত্রণ বা ঐক্যবদ্ধ রাখা-এই বিষয়টি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিবেচনার অগ্রাধিকারে থাকবে বলে নেতাদের অনেকে বলছেন। তারা মনে করেন, বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে আলোচনা এবং আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে দলকে প্রতিনিধিত্ব করতে হয় দলের সাধারণ সম্পাদককে। ফলে এই বিষয়টিও সাধারণ সম্পাদক পদের ক্ষেত্রে বড় বিবেচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।

এদিকে রাজধানীর সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানে পদ্মা সেতুর ওপরে নৌকার আদলে তৈরি ৮০ ফুট বাই ৪৪ ফুটের মঞ্চ তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। মূল মঞ্চের উচ্চতা হবে ৭ ফুট। সাংস্কৃতিক পর্বের জন্য তৈরি হচ্ছে আলাদা মঞ্চ। মূলমঞ্চে চার স্তরে আসন সাজানো হবে। প্রথমে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বসবেন। দ্বিতীয়টিতে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিনিয়র নেতারা, বাকি দুটোতে কেন্দ্রীয় নেতারা। মোট ১২০টি চেয়ার রাখা হবে।

২৪শে ডিসেম্বর সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যানে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভার কাজ শুরু হবে। সভাপতির ভাষণের মধ্য দিয়ে অধিবেশন শেষ হবে। পরে দ্বিতীয় অধিবেশনে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে নেতা নির্বাচন করা হবে। এ লক্ষ্যে তিন সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটিও গঠন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সম্মেলনে অতিথি ও কাউন্সিলর মিলিয়ে লক্ষাধিক লোক উপস্থিতির আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে কাউন্সিলরের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার, ডেলিগেটের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়ে যাবে। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি করা হবে।

এবার কাউন্সিলে ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও এবার বিদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ