কমলগঞ্জে গ্যাস অনুসন্ধানে বিস্ফোরণ: দেয়ালে ফাঁটল জনমনে আতংঙ্ক

প্রকাশিত: ৯:১০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৭, ২০২৩

কমলগঞ্জে গ্যাস অনুসন্ধানে বিস্ফোরণ: দেয়ালে ফাঁটল জনমনে আতংঙ্ক

ডায়াল সিলেট ডেস্ক ॥ মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সুনছড়া চা বাগানের বাড়িঘরের আশপাশে গ্যাস অনুসন্ধান করছে চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (সিএনপিসি)। মাটির ৬০/৭০ ফুট গভীরে একের পর এক বিস্ফোরণেএলাকায় কম্পন হচ্ছে। কম্পনের কারনে বিস্ফোরণ স্থলের আশপাশ এলাকার আধাপাঁকা বসতবাড়িতে ফাটল সৃষ্টির অভিযোগ উঠেছে। বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা অনেকেই আতঙ্কিত হচ্ছেন ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলার ৫শ’ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে সার্ভে, ড্রিলিং ও রেকর্ডিং কার্যক্রম বাস্তবায়ন শুরু করেছে বিজিপি, চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন। পেট্রোবাংলার তত্ত¡াবধানে ও সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লি: এর নির্দেশনায় এ্যাকরেজ বøক-১৩ ও ১৪ এর অবমুক্ত এলাকায় ৩-ডি সাইসমিক জরিপ প্রকল্প কার্যক্রম শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর, পতনঊষার ইউনিয়ন ও কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের বসতবাড়ির আশপাশে কার্যক্রম চালায়। এতে বেশকিছু বাড়িঘরের দেয়ালে ফাটল দেখা দেয়। পরে এলাকাবাসী ক্ষতিপূরণ দাবি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গণদরখাস্ত প্রেরণ করেন। দ্বিতীয় পর্যায়ে কুলাউড়া উপজেলার হাকালুকি হাওরে অনুসন্ধান চালানো হয়।
পরবর্তীতে রাজকান্দি সংরক্ষিত বনে গ্যাস অনুসন্ধানের অনুমতি পাওয়ার পর একসাথে চা বাগান ও বনে কার্যক্রম শুরু করে চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন। বন ও চা বাগানে ড্রিলিং শেষে শমশেরনগর, সুনছড়া চা বাগান, চিতলীয়া গ্রাম এলাকার বসতবাড়ির আশপাশে শুটিং করার কারণে অনেক বাড়িঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে।
সুনছড়া চা বাগানের রেবতি গোয়ালা, হরিনারায়ন হাজরা, চরন বাউরী, জীবাদন নায়েকসহ কয়েকজন শ্রমিক জানান, আমাদের বসতবাড়ির আশেপাশে ড্রিলিং করে মাটির নিচে বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে। দু’চার মিনিট পরপরই ভূগর্ভে বিস্ফোরণে প্রতিটি ঘরের মধ্যে কম্পন হচ্ছে। বিস্ফোরণের ফলে আমাদের মাটির দেয়াল ও কিছু পাকা দেয়ালের মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া কোন কোন বাড়ী-ঘরে পূর্বে চিরফাটা থাকলে সেই ফাটলটি বড় হয়েছে। কয়েকটি ঘরে ফাটল মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। তারা আরও বলেন, পার্শ্ববর্তী চিতলীয়া গ্রামেও কয়েকটি ঘরে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। এবিষয়ে আমরা চা বাগান ব্যবস্থাপক ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে অবগত করেছি।
চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন এর পাবলিক রিলেশন অফিসার ইমাম হোসেন বলেন, পেট্রোবাংলার তত্ত¡াবধানে আমাদের সার্ভে কাজ চলমান রয়েছে। বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়সহ বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে অনুমতি সাপেক্ষে সার্ভে ও ড্রিলিং কাজ চলছে। মৌলভীবাজারের ২০টি সহ সারাদেশে ৪৯টি চা বাগানে কাজ করারও অনুমতি রয়েছে। তবে চা বাগানে বসতবাড়ি থেকে দুরত্বে শুটিং হয়েছে। এতে কিছু পুরনো চিরাফাটা ঘরের দেয়ালে হয়তো কিছুটা ফাটল বাড়তে পারে। আমাদের ইঞ্জিনিয়ার সরেজমিন ঘুরে পরিদর্শন করছেন।
আলীনগর ইউপি চেয়ারম্যান নিয়াজ মুর্শেদ রাজু কিছু বাড়িঘরে ফাটলের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গ্যাস কোম্পানীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে। আমার এলাকার কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন বলেন, তারা রাজকান্দি বনে কাজ করার কথা। তবে সুনছড়া চা বাগানে কাজের কারণে ঘরের দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ