রেকর্ড চতুর্থবারের মতো বসুন্ধরা কিংস চ্যাম্পিয়ন

প্রকাশিত: ২:২০ পূর্বাহ্ণ, মে ২৭, ২০২৩

রেকর্ড চতুর্থবারের মতো বসুন্ধরা কিংস চ্যাম্পিয়ন

স্পোর্টস ডেস্ক :: ইতিহাসের হাতছানি। ম্যাচটাকে যত রকমভাবে রোমাঞ্চকর করা যায় তার সবই যেন করলেন বসুন্ধরা কিংস ও শেখ রাসেলের ফুটবলাররা। মাঠে এলেন হাজার হাজার দর্শক, গোলের পর মুখে ‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ মুখোশ পরে দরিয়েলতন গোমেজের উদ্‌যাপন আর ম্যাচে ১০ গোলের রোমাঞ্চ। উত্তেজনা ভরা এক ম্যাচ জিতে বাংলাদেশের ফুটবলে অনন্য এক কীর্তি গড়েছে বসুন্ধরা কিংস।

 

২০০৭ সালে পেশাদার লিগের যাত্রা শুরু। এই আঙিনায় বসুন্ধরা পা রাখে ২০১৮-১৯ মৌসুমে। অভিষেক মৌসুমেই শিরোপা জিতে নেয় দলটি। করোনাভাইরাসের থাবায় স্থগিত হওয়া ২০১৯-২০ মৌসুম ছাড়া সব মৌসুমেই শিরোপা জেতার অনন্য নজির গড়েছে বসুন্ধরা। বাংলাদেশের প্রথম দল হিসেবে টানা চার শিরোপা জিতে পেছনে ফেলেছে আবাহনী লিমিটেডকে। বসুন্ধরার ইতিহাস গড়া চতুর্থ লিগ শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে আজ। কিংস অ্যারেনায় ‘বসুন্ধরা ডার্বি’তে শেখ রাসেলকে ৬-৪ গোলে হারিয়ে শিরোপা উৎসব করেছেন বসুন্ধরার ফুটবলাররা। ম্যাচে একাই ৪ গোল করে দলকে ম্যাচের সঙ্গে শিরোপা জিতিয়েছেন দরিয়েলতন গোমেজ।

 

পেশাদার লিগ নামকরণের পর সর্বোচ্চ শিরোপার রেকর্ড (৬ টি) অবশ্য আবাহনীর থাকল। বসুন্ধরা জিতল চারবার। তিনটি শিরোপা আছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের। ঢাকা লিগের এক সময়কার পরাশক্তি মোহামেডানের শিরোপা জিততে না পারাটা এখন জাগায় বিস্ময়!

 

ঘড়ির কাঁটায় ৭ মিনিট হওয়ার আগেই কিংস অ্যারেনায় খেলা দেখতে আসা হাজার বসুন্ধরা দর্শককে উল্লাসে ভাসান দরিয়েলতন গোমেজ। ম্যাচের ৬ মিনিটে স্বদেশি রবসন রবিনহোর এক রক্ষণ চেরা পাস ধরে রাসেলের ডিফেন্ডারদের ঘোল খাওয়ান দরিয়েলতন। এরপর বাঁ পায়ের শটে দূরবর্তী পোস্টে বল জালে পাঠান এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড।

 

গোল খেয়েই ম্যাচে ফেরার চেষ্টা শেখ রাসেলের। আক্রমণাত্মক ফুটবলে ২৬ মিনিটে সমতায় ফেরে দলটি। ডান প্রান্ত ধরে কেনেথ ওকেচুকু বক্সে বল পাঠিয়েছিলেন চার্লস দিদিয়েরের উদ্দেশ্যে। দিদিয়ের পা গলাতে ব্যর্থ হলেও ফাঁকায় বল পেয়ে যান সুজন বিশ্বাস। নিকটবর্তী পোস্ট দিয়ে সুজনের ডান পায়ের শট ঝাঁপিয়েও ঠেকাতে পারেননি বসুন্ধরা গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো।

 

সমতায় ফেরা রাসেলকে ৩৮ মিনিটে চোখ জুড়ানো এক গোলে এগিয়ে নেন দীপক রায়। বক্সের বাইরে থেকে দীপকের ডান পায়ের জোরালো শট ঠেকানোর কোনো উপায়ই জানা ছিল না বসুন্ধরা গোলরক্ষকের।

 

বসুন্ধরা শিবির থেকে পাল্টা জবাব আসে দশ মিনিট পরেই। মাত্র দুই মিনিটের ঝড়ে শেখ রাসেলকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন রবসন রবিনহো ও শেখ মোরসালিন। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে বাঁ পোস্ট থেকে কোনাকুনি শটে বসুন্ধরাকে সমতায় ফেরান রবসন। এর দুই মিনিট পরেই ডি-বক্সের বাইরে থেকে মনে রাখার মতো এক গোলে বসুন্ধরার ব্যবধান ৩-২ করেন শেখ মোরসালিন। ২৫ গজ দূর থেকে মোরসালিনের মাটি কামড়ানো শটে হার মানেন রাসেল গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা।

 

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ব্যবধান ৪-২ করেন দরিয়েলতন। রবসনের ক্রস থেকে ৫০ মিনিটে ডান পায়ের শটে বল জালে ঠেলেন দরিয়েলতন। দ্বিতীয় গোলের ১৬ মিনিট পরেই এবারের লিগে নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক তুলে নেন দরিয়েলতন। বিশ্বনাথ ঘোষের আড়াআড়ি ক্রসে বক্সে আনমার্কড থাকা এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড বাকি কাজটুকু সারেন অনায়াসে।

 

৬৮ মিনিটে এক গোল শোধ দিয়ে রাসেলকে ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন কেনেথ ওকেচুকু, তাতে লাভ হয়নি। ৭৬ মিনিটে কর্নার থেকে হেডে জাল খুঁজে নেন দরিয়েলতন। তুলে নেন ম্যাচে নিজের চতুর্থ গোল। এই গোল দিয়ে শীর্ষস্থানটা পোক্তও করেছেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। এবারের বিপিএল ফুটবলে এখন পর্যন্ত তাঁর গোল হয়ে গেছে ১৮ টি।

 

৮৮ মিনিটে স্পট কিক থেকে কেনেথ হারের ব্যবধান কমান। এই গোলেই শেষ হয়েছে ১০ গোলের পাগলাটে এক ম্যাচ। সব মিলিয়ে এই মৌসুমে সর্বোচ্চ গোলেরও রেকর্ড এটি।

 

0Shares