স্পোর্টস ডেস্ক :: পেন্ডুলামের মতো দুলছিল ম্যাচের ভাগ্য। একবার মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশ জিতবে একবার ভারত। শেষ পর্যন্ত অবশ্য কেউই জিতলো না। মিরপুর শেরে বাংলায় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ নারী ওয়ানডেটি হয়েছে রুদ্ধশ্বাস এক টাই।

 

ফারজানা হকের রেকর্ড সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের মেয়েরা করেছিল ৪ উইকেটে ২২৫। ভারত ইনিংসের শেষ ওভারে তিন বল বাকি থাকতে অলআউট হয়েছে ২২৫ রানেই।

 

এই টাইয়ের ফলে সিরিজও শেষ হয়েছে ১-১ সমতায়। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল, ভারত দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সমতা ফেরায়। শেষ ওয়ানডে টাই হওয়ায় দুই দল ট্রফি ভাগাভাগি করবে।

 

ভারতের সামনে লক্ষ্য ছিল ২২৬ রানের। একটা সময় তারা অবশ্য সহজ জয়ের পথ গড়ে ফেলেছিল। ৪ উইকেটে ১৯১ রান ছিল সফরকারীদের।

 

সেখান থেকে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফেরে বাংলাদেশ। শেষ ৩৪ রানে ৬ উইকেট তুলে নেয় স্বাগতিকরা। ৪৮তম ওভারে স্পিনার নাহিদা আক্তার তিন বলের ব্যবধানে দুই উইকেট নিয়েই মূলত খেলায় ফিরিয়েছিলেন বাংলাদেশকে।

 

ভারতের স্মৃতি মান্ধানা ৫৯, হারলিন দেওল ৭৭ রান করেন। জেমিমাহ রদ্রিগেজ অপরাজিত ছিলেন একদম শেষ পর্যন্ত। কিন্তু সতীর্থদের আসা যাওয়া দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না তার। রদ্রিগেজ অপরাজিত থাকেন ৩৩ রানে।

 

বাংলাদেশের নাহিদা আক্তার ৩৭ রানে নেন ৩টি উইকেট। মারুফা আক্তারের শিকার ৫৫ রানে ২টি। শেষ ওভারটি এই মারুফাই করেন। ভারতের দরকার ছিল মাত্র ৩ রান। প্রথম দুই বলে সিঙ্গেলস দিলেও তৃতীয় বলে মেঘনা সিংকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানিয়ে ম্যাচ টাই করেন মারুফা।

 

এর আগে মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। ফারজানা হকের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির ওপর ভর করে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দলের বিপক্ষে ২২৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে তুলে নারী ক্রিকেটাররা।

 

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে অসাধারণ ব্যাটিং করেন ফারজানা হক। ১৫৬ বল খেলে তিনি পৌঁছান তিন অংকের ঘরে। শেষ পর্যন্ত ১৬০ বলে ১০৭ রান করে রানআউট হয়ে যান ফারজানা।

 

উদ্বোধনী জুটিতে রেকর্ড গড়েন শামীমা সুলতানা এবং ফারজানা হক। দু’জন মিলে গড়েন ৯৩ রানের জুটি। বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড এটি। এর আগে ১১৩ রানের একটি জুটি ছিল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটে।

 

ওয়ানডে ক্রিকেটে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি নারী ক্রিকেটার সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন। এর আগে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান ছিলো ৭৫। ২০১৩ সালে ভারতের বিপক্ষে করেছিলেন সালমা খাতুন। এবার সবাইকে ছাড়িয়ে শীর্ষে উঠে গেলেন ফারজানা হক।

 

শেষ পর্যন্ত ৭৮ বলে ৫২ রান করে শামীমা সুলতানা আউট হলে ভেঙে যায় ৯৩ রানের জুটিটি। শামীমা সুলতানা আউট হলেও অন্যপ্রান্ত ধরে খেলতে থাকেন ফারজানা হক। নিগার সুলতানা এবং সোবহানা মুস্তারিকে সঙ্গে নিয়ে তিনি পৌঁছে যান সেঞ্চুরির মাইলফলকে।

 

নিগার সুলতানা জ্যোতি ৩৬ বলে করেন ২৪ রান। ২২ বলে ২৩ রান করে অপরাজিত থাকেন সোবহানা মুস্তারি।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *