লিবিয়ার বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০০০

প্রকাশিত: ৩:৫৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩

লিবিয়ার বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬০০০

প্রধানমন্ত্রীর শোক

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা ছয় হাজারে পৌঁছেছে বলে ধারণা করছেন কর্মকর্তারা। তবে এই সংখ্যা আরও দুই থেকে তিনগুণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ উদ্ধারকাজ এখনো শেষ হয়নি, তাছাড়া নিখোঁজ রয়েছেন বহু মানুষ।

 

মঙ্গলবার কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় ডারনা শহরে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের আঘাতের পর আকস্মিক বন্যায় মৃতের সংখ্যা ছয় হাজারে পৌঁছেছে বলে অনুমান স্থানীয় কর্মকর্তাদের। শহরটিতে প্রায় এক লাখ মানুষ বসবাস করতো। সেখানে হঠাৎ বন্যার তোড়ে নদীপাড়ের বহুতল ভবনগুলো ধসে পড়ে। পানিতে ভেসে যায় বহু মানুষ, গাড়ি, বাড়ি।

 

বেসরকারি সংস্থা ইসলামিক রিলিফের সারাহ আবুলগাসেম বলেছেন, ডারনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হবে নিশ্চিত। শহরটির অন্তত ৩০ শতাংশই পুরোপুরি গায়েব হয়ে গেছে। ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, যেন ছোটখাটো একটা সুনামি এসে তার চলার পথের সবকিছু ধুয়েমুছে নিয়ে গেছে।

 

আবুলগাসেম বলেন, বহু পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে… কিছু কিছু ভবন পুরোপুরি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে পানিতে। তার বিশ্বাস, এই বিপর্যয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে চারগুণ না হলেও দ্বিগুণ তো হবেই। আবুলগাসেম বলেন, মানুষ আরবিতে বলছে, এটি অনেকটা কেয়ামতের মতো। এটাই বর্ণনা করার সেরা উপায়।

 

এদিকে, লিবিয়ার এই বিপদে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে গোটা বিশ্ব। এরই মধ্যে সাহায্য পৌঁছাতে শুরু করেছে দেশটিতে। লিবীয় নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তুরস্ক, আলজেরিয়া, তিউনিশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের প্লেন লিবিয়ায় অবতরণ করেছে। এগুলোতে চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ, খাদ্য ও তাবু রয়েছে। এগুলো যত দ্রুত সম্ভব ডারনায় পৌঁছানো হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

 

প্রধানমন্ত্রীর শোক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লিবিয়ায় ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে সৃষ্ট বন্যায় হতাহত এবং নিখোঁজের ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। বুধবার লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবদুল হামিদ মোহাম্মদ আল-দাবাইবার কাছে লেখা একটি চিঠিতে শোক ও সমবেদনা জানান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইংয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পূর্ব লিবিয়া, বিশেষ করে বেনগাজি, আল-বায়দা, দেরনা, সহাত, আল-মারি এবং জাবেল আল-আখদার অঞ্চলে ভূমধ্যসাগরীয় এ ঝড়ের আঘাতের কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি ও নিখোঁজের ঘটনায় বাংলাদেশের জনগণ, সরকার এবং আমার নিজের পক্ষ থেকে গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

 

সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নিহত ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাত কামনায় সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছি। আমি হতাহত এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের জন্য আত্মার অন্তস্থল থেকে গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত লিবিয়ার জনগণের জন্য আমরা বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে মানবিক সাহায্য প্রেরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।

 

‘আমরা লিবিয়া সরকারের সু-সমন্বিত ত্রাণ ও পুনর্বাসন প্রচেষ্টা এবং ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় আপনার সমন্বিত প্রচেষ্টার প্রশংসা করছি।’ বলেন শেখ হাসিনা।

 

0Shares