শাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারি

প্রকাশিত: ৩:২৭ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৩

শাবিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারি

ভাঙচুরের অভিযোগ

 

শাবি প্রতিনিধি :: গায়ে ধাক্কা লাগার জেরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীর মধ্যে মারামারি ও কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ছাত্রাবাস শাহপরাণ হলে শাখা ছাত্রলীগের সাবেক পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমানের সমর্থক মো. শিপন মিয়া ও ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হুদা শুভয়ের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে বলে জানান সহকারী প্রক্টর মিজানুর রহমান।

 

তিনি জানান, এ ঘটনায় শিপন নামে এক ছাত্র আহত হয়েছে। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। আমরা ঘটনার পর পরই সেখানে যাই। আমাদের উপস্থিতিতে দুই পক্ষকেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে এসেছি। হল কর্তৃপক্ষ সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবে। এরপর যদি হল প্রশাসন মনে করে তখন প্রক্টরিয়াল বডি সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে।

 

আহত মো. শিপন হাসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর রহমানের অনুসারী বলে জানা যায়। অপরদিকে নাজমুল হুদা শুভ শাখা ছাত্রলীগের একটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করছেন। তিনি অর্থনীতি বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী।

 

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হুদা শুভ ক্যান্টিন থেকে খাবার নিয়ে বের হয়ে যাওয়ার পথে খলিলুর রহমানের সমর্থক শিপনের ধাক্কা লাগে। এ নিয়ে শিপন ও নাজমুলের মধ্যে প্রথমে বাগবিত-া হয়। একসময় তারা হাতাহাতি ও মারিমারিতে জড়ায়। খলিলুরের সমর্থক শিপন ক্যান্টিন থেকে বের হয়ে পরবর্তীতে তার গ্রুপের অন্য কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে হলের নাজমুল হুদার কক্ষে গিয়ে ভাঙচুর করেন। এসময় হলে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয় এবং উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর হল প্রভোস্ট এবং প্রক্টরিয়াল বডি এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

 

ঘটনার বিষয়ে খলিলুরের সমর্থক মো. শিপন মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, হলে উনার সাথে ধাক্কা লাগার পর কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে উনিই আমাকে প্রথম চড় মারেন। এরপর উনার সাথে আমার হাতাহাতি হয়। এর একপর্যায়ে উনি আমাকে কিল-ঘুষি দিয়ে হলের ক্যান্টিনের চেয়ার দিয়েও আঘাত করেন। এসময় আমার মাথা, পীঠ এবং হাতে ব্যথা পাই। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।

 

তিনি বলেন, হলে ভাঙচুরের বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারি না। আমাকে মারধর করার পর আমাকে মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়। এরপর থেকে আমি এখানেই আছি।

 

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হুদা শুভ বলেন, আমি ক্যান্টিন থেকে খাবার নিয়ে বের হচ্ছিলাম। তখন খলিলুর ভাইয়ের সমর্থক শিপনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তখন সে আমাকে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এর একটু পরই তার গ্রুপের প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন ছেলেদেরকে নিয়ে আমার কক্ষে গিয়ে ভাঙচুর চালায়। সেখানে জানালার কাঁচ এবং একটি সাউন্ড বক্স ভেঙে ফেলে। ক্যান্টিনের ঝামেলার পর আমার গ্রুপের সমর্থকদের সাথে খলিল ভাইয়ের সমর্থকদের কোন ঝামেলা হয় নি। এরপর প্রভোস্ট বডি ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসেছিলেন হলে। তারা বিষয়টি আগামীকাল আলোচনা করে সমাধান করবেন বলে জানিয়েছেন। আমি এ নিয়ে একটি লিখিত অভিযোগও হল প্রাধ্যক্ষের কাছে দিয়েছি।

 

ঘটনার সবটুকু জানেন জানিয়ে শাহপরাণ হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট কৌশিক সাহা বলেন, ঘটনার প্রেক্ষিতে আগামীকাল জরুরি মিটিং ডাকা হয়েছে। তদন্ত করে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।

 

0Shares