প্রকাশিত: ২:৫২ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১২, ২০২৩
স্পোর্টস ডেস্ক :: বলতে গেলে এক রোহিত শর্মার কাছেই হেরে গেছে আফগানিস্তান। বিশ্বকাপের কয়েকটি রেকর্ড ভাঙার ম্যাচে শুরু থেকে আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলা ভারতীয় অধিনায়ক রশিদ-মুজিবদের মনোবল আগেই ভেঙে দিয়েছিলেন। মাত্র ৬৩ বলে সেঞ্চুরি করার পর তিনি থেমেছেন ১৩১ রানে। এরপর বিরাট কোহলির অর্ধশতক ও ইশান কিষাণের প্রায় ফিফটি ছোঁয়া ইনিংসে ভারতের জয় পাওয়াটা কেবল কিছু সময়ের-ই ব্যাপার ছিল। শেষ পর্যন্ত ৯০ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই বিশাল ব্যবধানে টানা দ্বিতীয় জয় পেল ভারত।
বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল আফগানিস্তান। কিন্তু বিশ্বকাপের শুরুতেই তারা বাংলাদেশের কাছে শোচনীয় পরাজয় দেখে। দ্বিতীয় ম্যাচে বুধবার টপ ফেভারিট ভারতের বিপক্ষে হাশমতউল্লাহ শহিদীর দল দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়। যেখানে আগে ব্যাট করে শহিদীর ৮০ এবং আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ৬২ রানে ভর করে আফগানিস্তান ২৭৩ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেয়। জবাবে অনেকটা হেসে-খেলে জিতেছে রোহিতের দল।
রানতাড়ায় শুরু থেকেই ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত ছিলেন খুনে মেজাজে। মারকাটারি ব্যাটিংয়ে তিনি ৫০ ওভারের ম্যাচকেও যেন টি-টোয়েন্টি ম্যাচে পরিণত করেন! ৩০ বলে ফিফটি হাঁকানোর পর তিনি সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন মাত্র ৬৩ বলে। ফলে মাত্র ১০ ওভারেই কোনো উইকেট না হারিয়ে ভারত তোলে ৯৪ রান। একদিকে রোহিত মারমুখী মেজাজে, অন্যপ্রান্তে ইশান কিষাণ খেলেছেন ধীরস্থির ইনিংস। তাদের ওপেনিং জুটি ভাঙে ১৫৬ রানে। ইশান কিষাণ অল্পের জন্য অর্ধশতক হাতছাড়া করেছেন।
রশিদ খানের করা গুগলি বলটিকে স্কুপ করতে গিয়ে ইব্রাহিম জাদরানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। এর আগে ৪৭ বলে ৫টি চার ও দুই ছক্কায় কিষাণ করেছেন ৪৭ রান। ১৮.৫ ওভারেই ১৫৬ রান করা ভারতের জন্য ম্যাচ জেতাটা কোনো বিষয়ই ছিল না। কেননা সেঞ্চুরি হাঁকানো রোহিতের ব্যাটের ধার যে তখনও কমেনি। এদিন তিনিও আউট হয়েছেন রশিদের বলে। তবে রশিদ এর আগে বোলিংয়ে আসলেন না— তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। কারণ আক্রমণে থাকা মুজিব-উর-রহমান, ফজলহক ফারুকি ও নাভিন-উল হকদের বল একের পর এক সীমানাছাড়া করেছেন রোহিত।
২৬তম ওভারে আফগান লেগ-স্পিনারের বলে সুইপ করতে গিয়ে স্টাম্প উপড়ে যায় রোহিতের। এর আগে তিনি ১৬টি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ভারত অধিনায়ক ১৩১ রানের (৮৪ বল) ইনিংস খেলেন। তিনি এখন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ ৭টি সেঞ্চুরির মালিক। যার মাধ্যমে তিনি ছাড়িয়ে গেলেন স্বদেশি কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারকে। এছাড়া ছয়ের দিক থেকে টপকে গেছেন ক্রিস গেইলকে। এতদিন পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গেইলের সর্বোচ্চ ৫৫৩টি ছয়ের রেকর্ড ছিল।
রোহিত ফিরলেও ভারতের জন্য চিন্তার কোনো সুযোগই ছিল না। ক্রিজে নামা কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়াররা বাকি পথ সামলেছেন ঠাণ্ডা মাথায়। ৬টি চারের বাউন্ডারিতে কোহলি ৫৫ (৫৬ বল) এবং একটি করে চার-ছক্কায় আইয়ার ২৫ রান (২৩ বল) করেছেন।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে দুই আফগান ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান ভালোই শুরু করেছিলেন। তবে প্রথম পাওয়ার-প্লে শেষ হওয়ার আগেই ভেঙে যায় তাদের উদ্বোধনী জুটি। সপ্তম ওভারের চতুর্থ বলে জসপ্রীত বুমরাহকে খোঁচা দিতে যান ইব্রাহিম। তার আউটসাইড এডজ হওয়া বল ক্যাচ ধরেছেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক লোকেশ রাহুল। ৪টি চারের বাউন্ডারিতে এই ওপেনার ২২ রান (২৮ বল) করেন।
এরপর ক্রিজে আসা রহমত শাহকে নিয়ে জুটি বড় গড়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন গুরবাজ। তবে এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার তার ইনিংসটি লম্বা করতে পারেননি। ১৩ তম ওভারের চতুর্থ বলে হার্দিক পান্ডিয়াকে পুল করেন গুরবাজ। ডিপ ফাইন লেগে দাড়িয়ে থাকা শার্দুল ঠাকুর প্রথমে ছয় বাঁচান, বাউন্ডারি লাইন ছাড়িয়ে যাওয়ার আগে বলটি তিনি উপরের দিকে ছুড়ে দেন। এরপর সেটি আবার ক্যাচ বানিয়ে নেন শার্দুল। ৩ চার ও ১ ছক্কায় গুরবাজ করেন ২১ রান (২৮ বল)। দ্বিতীয় উইকেটে গুরবাজ-রহমতের জুটি ছিল ৩৭ বলে ৩১ রানের।
এরপর দলীয় ৬৩ রানেই বিদায় নেন রহমতও। শার্দুল ঠাকুরের এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে তিনি ফেরেন মাত্র ১৬ রানে। ভারতীয় বোলিংয়ের চিন্তা বাড়িয়ে ১২১ রানের জুটি গড়েন শহিদী-ওমরজাই। ওমরজাইয়ের শুরুটা ধীরস্থির হলেও পরে তিনি বাউন্ডারির দিকে মনোযোগ দেন। চারের চেয়ে ছয় হাঁকানোতেই যেন তিনি বেশি পারদর্শী। ২টি চার ও ৪ ছক্কায় ৬৯ বলে তিনি ৬২ রানের ইনিংস খেলেন। রানের গতি আরও বাড়াতে গিয়ে ওমরজাই পান্ডিয়ার বলে বড় শট খেলতে যান, কিন্তু আউটসাইড এডজ হয়ে সেটি তার স্টাম্প ভেঙে দেয়।
ওমরজাই ফিরতেই রানের গতি কমতে থাকে আফগানদের। একপ্রান্তে সেট-ব্যাটসম্যান শহিদী সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছিলেন, অন্যপ্রান্তে মোহাম্মদ নবির ব্যাটে একের পর এক বল ডট হতে থাকায় চাপ বাড়তে থাকে। ফলে ছন্দে থাকা শহিদীও খেই হারান। কুলদীপ যাদবের বল রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ’র ফাঁদে আটকান আফগান অধিনায়ক। সেঞ্চুরি পাওয়া হলো না তার। ৮টি চার ও এক ছক্কায় শহিদী ৮০ রান (৮৮ বল) করেন। ভারতের হয়ে ৩৯ রানে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন বুমরাহ। এছাড়া পান্ডিয়া দুই উইকেট, শার্দুল ও কুলদীপ শিকার করেন একটি করে উইকেট।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech