গাজায় বিমান হামলায় ১৮০০ মানুষের মৃত্যু

প্রকাশিত: ৪:০৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০২৩

গাজায় বিমান হামলায় ১৮০০ মানুষের মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: দখলদার ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর নির্বিচার বিমান হামলায় ফিলিস্তিনের গাজায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহতের সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। শুক্রবার নিয়মিত আপডেটে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের হামলায় মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৭৯৯ জনে পৌঁছেছে। অপরদিকে আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৩৮৮ জন।

 

গত শনিবার ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় গাজাভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এরপর ওইদিন থেকেই গাজাকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। যা গত ৭ দিন ধরে বিরামহীনভাবে চলছে।

 

এরমধ্যে শুক্রবার ইসরায়েল, গাজার উত্তর দিকের ১১ লাখ বাসিন্দাকে দক্ষিণ দিকে সরে যেতে বলেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, গাজা সিটিসহ উত্তর দিকে অবস্থিত সেসব অঞ্চলে স্থল হামলা চালাবে ইসরায়েলি সেনারা।

 

হামাসকে নির্মূল করার অজুহাতে ইতিমধ্যে গাজার কাছে ৩ লাখেরও বেশি সেনাকে জড়ো করেছে ইসরায়েল। এছাড়া সঙ্গে করে নিয়ে এসেছে ট্যাংক, বুলডোজারসহ অন্যান্য ভারী অস্ত্র। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো হুঁশিয়ারি দিয়েছে, যদি গাজায় ইসরায়েল স্থল অভিযান চালায় তাহলে সেখানে বিপর্যয়রক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।

 

এছাড়া ইসরায়েল গাজায় স্থল অভিযান শুরু করলে লেবাননের হিজবুল্লাহসহ অন্যান্য আঞ্চলিক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এতে জড়িত হতে পারে। ইসরায়েলের স্থল হামলার শঙ্কার মধ্যে আঞ্চলিক শক্তি ইরান হুমকি দিয়েছে, যদি ইসরায়েল— ফিলিস্তিনিদের উপর যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত অব্যাহত রাখে তাহলে তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়া হবে।

 

এদিকে গত শনিবার ইসরায়েলে হামাসের চালানো আকস্মিক হামলায় এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ ইসরায়েলির মৃত্যু হয়েছে।

 

এখন পর্যন্ত যা জানা গেছে –
** ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।

** হামাসের হামলার পেছনে ইসরায়েল দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তিনি বলেছেন, ‘যারা ইহুদিবাদী শাসকদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করেছে আমরা তাদের হাতে চুম্বন করি।’ তবে তিনি হামাস যোদ্ধাদের হামলার পেছনে ইরানের জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন।।

 

** ইসরায়েলকে মার্কিন সমর্থন দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। ব্লিনকেন বলেছেন, ‘সব জিম্মিদের মুক্তি অবিলম্বে নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।’

** ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ বলছে, ইসরায়েলে ও গাজা উপত্যকার আশপাশে দেড় হাজার হামাস যোদ্ধার লাশ পাওয়া গেছে।

** জাতিসংঘে ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ এরদান বলেছেন, ইসরায়েল থেকে অপহরণের পর গাজায় ‘১০০ থেকে ১৫০ জনকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে।’

** সোমবার সন্ধ্যায় হামাস হুঁশিয়ারি দেয়, যদি ইসরায়েল কোনো সতর্কতা ছাড়া বিমান হামলা চালিয়ে যায়, তাহলে তারা ইসরায়েল থেকে আটক করা জিম্মিদের হত্যা করবে। তাদের এই হুমকির তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পশ্চিমা নেতারা।

** যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জিম্মিদের নিয়ে আলোচনায় যাবে না বলে জানিয়েছে হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়াহ।

** রাতভর হামাসের অন্তত ২০০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের বিমানবাহিনী। গাজা সীমান্তে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৩৫টি ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে।

** গাজা উপত্যকাজুড়ে এক লাখ ৮৭ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই সংখ্যা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জাতিসংঘের ৮৩টি স্কুলে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ মানুষকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।

** ইউনিসেফ গাজার ভেতরে ও বাইরে একটি মানবিক করিডোর স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছে। কারণ ইসরায়েল জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে গাজার হাসপাতালগুলো।

** গাজার জ্বালানি কয়েক দিনের মধ্যে ফুরিয়ে যেতে পারে, এতে বিদ্যুতের অভাবে অন্ধকারে ডুবে যেতে পারে গাজা উপত্যকা : জাতিসংঘ

** ইসরায়েলি বোমা হামলার কারণে মিসরের রাফাহ ক্রসিং বন্ধ হয়ে গেছে। এটাই অবরুদ্ধ গাজা থেকে মানুষের বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ। এ ছাড়া ইসরায়েলও গাজার সঙ্গে তাদের সীমানা বন্ধ করে দিয়েছে।

** ইসরায়েল ফিলিস্তিনের মধ্যে সংঘাতের কারণে মধ্যপ্রাচ্য থেকে জ্বালানি তেলের সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে এমন উদ্বেগের কারণে তেলের দাম বেড়ে গেছে।

 

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ