প্রকাশিত: ১২:০৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০২৩
ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: দুর্গাপূজা শেষ, আর কিছুদিন পরই দীপাবলি । সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের এ প্রাণের উৎসবের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে বেশ জোরে শোরেই। দীপাবলিকে সামনে রেখে মাটির দীপ তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। উঠানে সারি সারি রাখা হয়েছে মাটির তৈরি দীপ।
সরেজমিনে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হিংগাজিয়া চা-বাগানে গিয়ে দেখা যায়, ১২ নভেম্বর দীপাবলিকে সামনে রেখে দীপ তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে। বানানো হচ্ছে সনাতন পদ্ধতিতে। পাহাড় থেকে পলিমাটি আনা হয়েছে, এই মাটিকে কেটে হাত দিয়ে ভালো ভাবে নরম করে বানানোর উপযোগী করা হয়েছে । ইট সিমেন্টের তৈরী চর্কী। ঘুরানো হচ্ছে লাঠির সাহায্য হাত দিয়ে। চর্কীর মধ্যে ভাগে রাখা হয়েছে দীপ বানানো উপযোগী মাটি। হাতের ইশারায় বানানো হচ্ছে, তারপর একটি কাঠিতে সুতা বাধা রয়েছে এই সুতার সাহায্য কাটা হচ্ছে দীপ। এভাবেই একটি একটি করে বানানো হচ্ছে। চর্কী একবার ঘুরালে ৮-১০ মিনিট ঘুরে থাকে। এই সময়ে প্রায় ১৮ থেকে ২২টি কাঁচা দীপ বানানো সম্ভব হয়।
তারপর কাঁচা দীপকে শুকাতে রাখা হয় কড়া রৌদে। ভালোভাবে শুকিয়ে যাওয়ার পর এটিকে আগুনে পুড়ানো হয়। ১৮ থেকে ২০ ঘন্টার পর আগুন নিভে গেলে বের করা হয়ে থাকে।
মৃৎশিল্পী বিরিজলাল কুমার জানান, শুরু হয়ে গেছে দীপ বানানোর কাজ। প্রতিবছর প্রায় এক মাস দীপ বানাতে ব্যস্ত সময় পার করতে হয়। হিন্দু-ধর্মাবলম্বীরা দীপাবলির দিন ঘরে ঘরে দীপ প্রজ্জ্বলিত করে থাকেন । কেউ ৫০টি আবার কেউ ১০০টি কেউবা ২০০ দীপ কিনে নিয়ে যান পরিবারের জন্য। কয়েকটি গ্রাম থেকে সিজন ব্যবসায়ী সহ স্থায়ী ব্যাবসায়ীরা পাইকারি দামে কয়েক হাজার দীপ কিনে নিয়ে যান আমার কাছ থেকে, তারা তাদের গ্রামে খুচরা মূল্যে বিক্রি করেন । প্রতিবছর অনেক মানুষ খালিহাতে ফিরে যায় এবার চেস্টা করছি যাতে সবার চাহিদা পুরন করা যায়। সমস্যা হচ্ছে কুলাউড়া উপজেলায় হাতে গুনা কয়েকজন এই পেশায় যুক্ত বলে চাহিদার চাইতে কম বানাতে পারি আমরা। সবাই তাদের চাহিদা মতো পায়না।
মৃতশিল্পী দসরথ জানান, সনাতন পদ্ধতিতে বানাতে সময় অনেক লাগে। যদি সরকার আমাদের আরও উন্নত ব্যবস্থা করে দিত তাহলে সারাবছর কমবেশি বানানো যেত৷ সেই সাথে হারিয়ে যাওয়া এই শিল্পকে ধরে রাখতে পারতাম।
প্রতিবেশী যমুনা যাদব (৯২) জানান, বিরিজলালের পরিবার সহ এই গ্রামে আরও যারা এই পেশায় এখনো আছেন তারা সেই পাকিস্তান আমল থেকে এই পেশায় জড়িত। তবে দিন দিন বিলুপ্তির দিকে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়। এই এলাকায় দুই বাড়িতে দীপ সহ হাড়ি পাতিল বনিয়ে থাকেন। হাতের নাগালে থাকায় বাজারে যেতে হয়না। যে কোন প্রয়োজন পড়লে কিনে আনা যায়৷ যেটি এখন বাজারেও সচারাচর পাওয়া যাচ্ছেনা।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech