অনুমতি না নেওয়ার অভিযোগ গোপনে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোর্শেদা

প্রকাশিত: ১১:৫১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২৩

অনুমতি না নেওয়ার অভিযোগ গোপনে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোর্শেদা

ডায়াল সিলেট ডেস্ক ::  মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক অনুমতি না নিয়ে বিদেশ পাড়ি জমিয়েছেন। এমন অভিযোগ উপজেলার সদর ইউনিয়নের চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুর্শেদা খাতুন এর বিরুদ্ধে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেন্দ্র কুমার সিংহ। তবে কোন দেশে বর্তমানে অবস্থান করছেন তিনি জানেন না।

চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্কুলে গেলে জানা যায়, অনেকটা গোপনে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন শিক্ষক মুর্শেদা খাতুন। তবে দেশের বাহিরে থাকায় শিক্ষক মুর্শেদা খাতুনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, স্কুলের ৪ শিক্ষকের মধ্যে তিন জন রয়েছেন। ছাত্র ছাত্রীদের সংখ্যা ১১০ জন। প্রতিনিধি শতভাগ ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিত থাকে এই স্কুলে। শিক্ষার দিক থেকে উপজেলার অন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চাইতে এই স্কুলের গুনগত মান ভালো। এর মধ্যে মুর্শেদা খাতুন নামের ওই সহকারী শিক্ষক ১২ অক্টোবর থেকে তিনি অনুপস্থিত আছে। ১২ অক্টোবরের ৫ দিন আগে তিনি চিকিৎসাজনিত ছুটি কাটিয়েছেন ২ মাস।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার কয়েকজন সহকারী শিক্ষক বলেন, মুর্শেদা খাতুন চিকিৎসার জন্য ২ মাস ছুটি কাটান। আসলে এই দুইমাস তিনি বিভিন্ন ভাবে দেশের বাহিরে যাওয়ার জন্য প্রসেসিং করেন। হঠাৎ এভাবে যাওয়াটা মোটেও ঠিক হয়নি উনার। সামনে বাচ্চাদের বার্ষিক পরীক্ষা। বাচ্চাদের কথা ও দেশের কথা চিন্তা না করে এভাবে নিজের স্বার্থের জন্য চলে গেলেন তিনি।

চৈতন্যগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুরেন্দ্র কুমার সিংহ বলেন, মুর্শেদা খাতুন মেডাম জানেন আমি অসুস্থ্য ছুটিতে আছি। অন্তত আমায় তিনি জানাতে পারতেন বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে। আমি অফিসিয়ালি উনাকে সহযোগীতা করতাম। উনার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল দিলে বন্ধ পাওয়া যায়। কোনো ভাবে উনাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আমি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসকে জানাইছি আবেদনের মাধ্যমে। এখন উনারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।তাছাড়া আমি স্কুল সভাপতিকেও অবগত করেছি।

এই বিষয়ে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজিজুর রহমান আলাল বলেন, প্রধান শিক্ষক স্যারের মাধ্যমে জানতে পারলাম তিনি দেশের বাহিরে আছেন। আমি জানিনা মুর্শেদা খাতুন মেডাম কোন দেশে আছেন। যদি বিদেশ চলে যান তাহলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, সহকারী শিক্ষক মুর্শেদা খাতুন ৬০ কর্মদিবসের জন্য চিকিৎসাজনিত ছুটিতে ছিলেন। ছুটি কাটিয়ে স্কুলে আসলেও হঠাৎ তিনি কোথায় গেছেন এখনো জানিনা। তবে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি নেই। প্রধান শিক্ষক আমায় জানিয়েছেন। আমি অফিসিয়ালি কারণ দর্শানোর নোটিশ দিবো। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. খোরশেদ আলম জানান, ‘বিষয়টা আমার জানা ছিল না। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি উপজেলা প্রাথমিক অফিসারের কাছ থেকে খবর নিচ্ছি। সত্যতা পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, বিদেশ যাওয়ার কোনো অনুমতি নাই, বিদেশ যেতে হলে বহির বাংলাদেশ ছুটির অনুমতি নিয়ে যেতে হবে।’

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ