অগ্নিসন্ত্রাস করছে ক্ষমতাসীনরা: রিজভী

প্রকাশিত: ২:২৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২২, ২০২৩

অগ্নিসন্ত্রাস করছে ক্ষমতাসীনরা: রিজভী

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: সারাদেশে অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতা ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা করছে বলে অভিযোগে করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ অভিযোগ করেন তিনি।

 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় দেশজুড়ে ভীতির রাজত্ব কায়েমের উদ্দেশ্যে প্রতিদিন নৈরাজ্যে লিপ্ত হচ্ছে আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতকারী কর্মীরা। তারা গণপরিবহনে অব্যাহতভাবে অগ্নিসংযোগ করছে। আর নীরব দর্শকের ভূমিকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জ্বালাও পোড়াও করে অপরাধীরা খুব সহজেই ঘটনাস্থল থেকে শটকে পড়ছে। অথচ প্রত্যক্ষদর্শৗদের মতে অধিকাংশ ঘটনা ঘটছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে বা পুলিশ চেকপোস্টের কাছে।

 

তিনি আরও বলেন, এসব অগ্নিসংযোগের ঘটনা প্রতিরোধ বা অপরাধীদের গ্রেফতারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ইচ্ছাকৃত নিষ্ক্রিয়তা প্রমাণ করে যে, দেশজুড়ে চলমান নাশকতায় ক্ষমতাসীন অপশক্তি জড়িত। আমাদের বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনী ও তাদের আজ্ঞাবাহী পুলিশ সদস্যরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজে চালক বা তাদের সহকারীদের বক্তব্যে স্পষ্ট যে, কীভাবে পুলিশ বা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা বাসে আগুন দেওয়ার জন্য দায়ী।

 

উদাহরণ টেনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের চাতরি চৌমহনী বাজারে পুলিশ বক্সের কাছে, ৩১ অক্টোবর ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের কাছে, ২৮ অক্টোবর কাকরাইলের কাছে বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা এবং ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে ট্রাকে আগুন দেওয়ায় ফেনীর স্থানীয় যুবলীগ নেতা নুরুল উদ্দিন টিপুকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। এরপর ১৪ নভেম্বর নাটোরের তাশরীক জামান রিফাত নামে আওয়ামী লীগের কর্মীকে মুখোশসহ গ্রেফতার করা হয়। পরে ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের।

 

এসময় প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, দেশের সর্বত্র পুলিশ ও র‌্যাবের শত শত পেট্রোল টিম। বিজিবির শত শত সদস্য অস্ত্রসহ মোতায়েন। বাংলাদেশ যেন পরিণত হয়েছে এক যুদ্ধক্ষেত্রে। এ নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার মধ্যেও বিরোধীদলের কোনো সদস্য সহিংসতা বা অগ্নিসংযোগে কাজে লিপ্ত হবে- এ ধরনের দাবি হাস্যকর। উল্টো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতির উদ্দেশ্য হলো আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যেন তারা নিশ্চিন্তে যানবাহনে আগুন দিতে পারে। জনগণের জানমালের ক্ষতি করতে পারে।

 

তিনি বলেন, ওদের (আওয়ামী লীগ) এসব কর্মকাণ্ড বারবার প্রমাণিত, বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে এসেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, কীভাবে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য বাসে অগ্নিসংযোগে লিপ্ত হয় আওয়ামী লীগের দুষ্কৃতকারী নেতাকর্মীরা। ২০১৪ সালে ছাত্রলীগের তিনজন সদস্যকে বাসে অগ্নিসংযোগের সময় হাতেনাতে আটক করা হয়েছিল। ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি দুজন ছাত্রলীগ সদস্য ককটেল ও পেট্রোল বোমাসহ আটক হয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লায় পেট্রোল বোমাসহ গ্রেফতারের কয়েক ঘণ্টা পর বাধ্য হয়ে পুলিশ দুজন যুবলীগ কর্মীকে ছেড়ে দিয়েছিল।

 

রিজভী আরও বলেন, ২০১৪ সালে বিরোধীদলের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ তার বিহঙ্গ বাসে পেট্রোল দিয়ে আগুন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে গণমাধ্যমে জানা যায়। সেখানে আগুনে ১১ জনের মৃত্যুও হয়েছিল। ২০০৬ সালের নভেম্বরে ট্রেন এবং বাসে আগুন দিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের ওপর হামলা করে মানুষ হত্যা করেছিল আওয়ামী লীগ। এমন অজস্র দৃষ্টান্ত আছে।

 

২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে ৪৭৫ জনের বেশি বিএনপি নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এবং বিভিন্ন মামলায় এক হাজার ৭২০ জনের বেশি নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

 

৪৮ ঘণ্টার অবরোধ সফল করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আগামীকাল ভোর ৬টা থেকে যে অবরোধ শুরু হচ্ছে সেই কর্মসূচিতে জনগণ, দলের নেতাকর্মী, সমমনা জোট সমর্থন করবে। এ কর্মসূচি আমাদের দেশের গণতন্ত্র ও মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার বৃহত্তর আন্দোলনের অংশ।

 

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ