সেনাবাহিনী বলছে দুর্ঘটনা

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: নাইজেরিয়ায় সামরিক ড্রোন হামলায় অন্তত ৮৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। গত রোববার নাইজেরিয়ার উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলে মুসলিমদের একটি ধর্মী অনুষ্ঠান চলার সময় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানায় দেশটির সামরিক বাহিনী। সেনাবাহিনী বলছে, দুর্ঘটনাক্রমে ওই জমায়েতের ওপর বোমা পড়ে।

 

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নাইজেরিয়ার কাদুনা প্রদেশের তুদুন বিরি গ্রামে বাসিন্দারা ধর্মীয় অনুষ্ঠান মাউলুদ উদ্‌যাপনের জন্য একত্রিত হন। রাত ৯টার দিকে তাঁরা বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান।

 

দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া দানজুমা সালিসু বলেন, ‘আমরা পালানোর সুযোগও পাইনি।’ হাতে ও পায়ে আঘাত পাওয়ার কারণে তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

 

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, আরও হামলার আশঙ্কায় গ্রামবাসী এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। সেনা কর্মকর্তারা এবং কাদুনা রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

 

সেনাবাহিনী বলছে, দুর্ঘটনার সময় তাঁরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একটি রুটিন মিশন চালাচ্ছিলেন। অসাবধানতাবশত গ্রামবাসীদের ওপর বোমা পড়ে। তাঁরা হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কে কিছু বলেননি এবং কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে তাও ব্যাখ্যা করেননি।

 

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এ ঘটনায় ৮৫ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশু রয়েছে।

 

গ্রামের বাসিন্দা ইদ্রিস দাহিরু বলেন, ‘প্রথম বোমা নিক্ষেপের সময় আমি বাড়ির ভেতরে ছিলাম। আমরা আহতদের সাহায্য করার জন্য ঘটনাস্থলে গেলাম আর তখনই দ্বিতীয় বোমাটি বিস্ফোরিত হলো।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘নিহতদের মধ্যে আমার চাচি, আমার ভাইয়ের স্ত্রী ও তার ছয় সন্তান, আমার চার ভাইয়ের স্ত্রী আছেন। আমার বড় ভাইয়ের পরিবারের সব সদস্যই মারা গেছে। শুধু তার এক শিশু সন্তান রেহাই পেয়েছে। আমরা বোমা হামলায় নিহত ৮৫ জনকেই দাফন করেছি।’

 

হামলায় আহত অন্তত ৬০ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন বলে জানান দাহিরু।

 

অন্য আরেক বাসিন্দা হুসেইনি ইব্রাহিম বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এ বোমা হামলায় আমি আমার পরিবারের ১৩ সদস্যকে হারিয়েছি। এখানে আমার সন্তান ছিল এবং আমার ভাইদের সাত ছেলে ও ছয় মেয়ে ছিল। দুর্ঘটনায় নিহতদের আমরা আজ দাফন করেছি।’

 

জাতীয় জরুরি পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলের জোনাল অফিস স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য জেনেছে। এরই মধ্যে ৮৫টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং উদ্ধার তৎপরতা এখনো চলছে।

 

নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট তিনুবু এ ঘটনাকে অত্যন্ত মর্মান্তিক উল্লেখ করে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

 

নাইজেরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী প্রায়ই ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম এবং দেশের উত্তরে বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালায়।

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *