প্রকাশিত: ৩:০৮ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: কাজ কিংবা পরিবার নিয়ে অভিবাসনের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের ভিসা পাওয়া আরও কঠিন করছে দেশটির সরকার। নতুন নীতিতে ভিসা পাওয়া কঠিন হবে শিক্ষার্থীদের জন্যও। এ বিষয়ে বিবিসি জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক যুক্তরাজ্যে বর্তমান অভিবাসনের মাত্রাকে ‘অনেক বেশি’ বলে বর্ণনা করেছেন। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৭ লাখ ৪৫ হাজার মানুষ অভিবাসন গ্রহণ করেছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিকে সামাল দিতেই নতুন ভিসা নীতি গ্রহণ করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। কাজের জন্য যুক্তরাজ্য যেতে ইচ্ছুক মানুষেরা এখন পর্যন্ত তুলনামূলক সহজ পয়েন্টভিত্তিক প্রক্রিয়ায় (পিবিএস) ভিসার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু ২০২৪ সালের ‘স্প্রিং’ সিজন থেকেই এ ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের যোগ্যতা প্রমাণের জন্য উচ্চ বেতন যুক্ত কাজের অফার থাকতে হবে। বর্তমানে সর্বনিম্ন বার্ষিক আয় ২৬ হাজার ২০০ পাউন্ডের বদলে নতুন নিয়মে এই আয় হতে হবে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড।
স্বাস্থ্য ও সামাজিক পরিচর্যার কর্মীদের এ ক্ষেত্রে বাঁধা ধরা কোনো সীমাবদ্ধতা না থাকলেও এ ধরনের বিদেশি কর্মীরা তাঁদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারের কোনো সদস্যকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যেতে পারবেন না।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে যুক্তরাজ্যে অভিবাসনের ক্ষেত্রে পয়েন্টভিত্তিক প্রক্রিয়া (পিবিএস) ২০০৮ সালে চালু করেছিল দেশটির লেবার সরকার। ব্রেক্সিটের পর অবশ্য এই প্রক্রিয়াটি সংশোধন করেছিল ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল সরকার। ২০২০ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকেও কেউ যুক্তরাজ্যে অভিবাসন চাইলে তাঁকে পিবিএস প্রক্রিয়ায় আবেদন বাধ্যতামূলক করা হয়।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছর জুন মাস পর্যন্ত ফ্যামিলি ভিসায় প্রায় ৭০ হাজার মানুষ যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে। ২০২৪ সালের স্প্রিং সিজন থেকে এ ক্ষেত্রে যোগ্যতা অর্জনের জন্য বার্ষিক আয় বর্তমানের চেয়ে ১৮ হাজার ৬০০ বাড়িয়ে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ড করা হয়েছে।
চলতি বছরের জুন প্রান্তিক পর্যন্ত অন্তত এক বছর থাকার অনুমতি নিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করা মানুষের সংখ্যা প্রায় ১১ লাখ ৮০ হাজার। আর এই সময়ের মধ্যে মেয়াদ শেষ করে যুক্তরাজ্য ছেড়েছে ৫ লাখ ৮ হাজার মানুষ। এই হিসাব অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, আসা-যাওয়ার মধ্যে থেকে যাওয়া মানুষের সংখ্যাটি প্রায় ৬ লাখ ৭২ হাজার।
আরেকটি তথ্য হলো যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করা ১১ লাখ ৮০ হাজার মানুষের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে গেছে ৯ লাখ ৬৮ হাজার জন। এর মধ্যে ৩৯ শতাংশ গেছে স্টুডেন্ট ভিসায়, ৩৩ শতাংশ কাজের ভিসায়, আর ৯ শতাংশ মানবিক কারণে। সবচেয়ে বেশি গেছে ভারত থেকে প্রায় ২ লাখ ৫৩ হাজার। পর্যায়ক্রমে নাইজেরিয়া থেকে ১ লাখ ৪১ হাজার, চীন থেকে ৮৯ হাজার, পাকিস্তান থেকে ৫৫ হাজার এবং ইউক্রেন থেকে প্রায় ৩৫ হাজার মানুষ যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর সেপ্টেম্বর প্রান্তিক পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ ৮৬ হাজার ১০৭টি স্টুডেন্ট ভিসা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। এর মধ্যে অর্ধেকই দেওয়া হয়েছে ভারত ও চীনে। শিক্ষার্থী ভিসা পাওয়ায় এগিয়ে থাকা এর পরের তিনটি দেশ ছিল যথাক্রমে নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র।
বর্তমানে যারা স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করতে যান, তাঁরা তাঁদের স্বামী কিংবা স্ত্রী এবং ১৮ বছরের কম বয়সী সন্তানের জন্য ভিসার আবেদন করতে পারেন। চলতি বছর সেপ্টেম্বর প্রান্তিক পর্যন্ত এভাবে ১ লাখ ৫২ হাজার ৯৮০ জনকে ভিসা দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার। তবে ২০২৪ সাল থেকে গবেষণা পর্যায় ছাড়া কোনো শিক্ষার্থীই তাঁর ওপর নির্ভরশীল কারও জন্য ভিসার আবেদন করতে পারবেন না।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech