মাশরাফির সিলেটকে উড়িয়ে দিলো শুভাগতর চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১২:২১ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ২০, ২০২৪

মাশরাফির সিলেটকে উড়িয়ে দিলো শুভাগতর চট্টগ্রাম

সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতলো দুর্দান্ত ঢাকা

 

স্পোর্টস ডেস্ক :: লক্ষ্যটা মোটামুটি বড়ই ছিল, ১৭৮ রানের। কিন্তু এমন চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যও হেসেখেলে পেরিয়ে গেলো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। মাশরাফির সিলেট স্ট্রাইকার্সকে ৭ উইকেট আর ৯ বল হাতে রেখে হারালো শুভাগতহোমের দল। রান তাড়ায় নেমে দলীয় ১৪ রানে তানজিদ তামিমকে (২) হারায় চট্টগ্রাম। আরেক ওপেনার আভিষ্কা ফার্নান্ডো অবশ্য মারকুটে ব্যাটিং করেন। ২৩ বলে ৩৯ আসে তার ব্যাট থেকে।

 

এরপর ইমরানুজ্জামান ফিরে যান ১৪ বলে ১১ করে। কিন্তু শাহাদাত হোসেন দিপু আর নাজিবুল্লাহ জাদরানের জুটিকে থামাতে পারেননি সিলেটের বোলাররা। ৬৮ বলে ১২১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন তারা। ৩০ বলে ৩ চার আর ৫ ছক্কায় ৬১ রানে অপরাজিত থাকেন জাদরান। দিপুর ব্যাট থেকে আসে ৩৯ বলে ৫৭ রান। তার ইনিংসে ছিল সমান ৪টি করে চার-ছক্কা।

 

এর আগে রান পেলেন দুই ওপেনার মোহাম্মদ মিঠুন আর নাজমুল হোসেন শান্ত। তিন নম্বরে নেমে তো হার না মানা ঝোড়ো ফিফটি হাঁকালেন আরেক স্বদেশী জাকির হাসান। সবমিলিয়ে সিলেট পায় ২ উইকেটে ১৭৭ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিং করতে নামে মাশরাফির সিলেট। ওপেনিংয়ে মিঠুন আর শান্ত মিলে গড়েন ৫০ বলে ৬৭ রানের জুটি। ৩০ বলে ৩৬ করে আউট হন শান্ত। মিঠুন ছিলেন তার থেকে এগিয়ে। ২৮ বলে ৪০ রানের ইনিংসে ৪টি বাউন্ডারি আর ২টি ছক্কা হাঁকান সিলেট ওপেনার।

 

এর পরের দায়িত্বটা বলতে গেলে একাই পালন করেছেন জাকির হাসান। হ্যারি টেক্টরকে নিয়ে তিনি ৪৯ বলে যোগ করেন ৮২ রান, যার মধ্যে টেক্টরের রান কেবল ২৬ (২০ বলে)। হাফসেঞ্চুরি পূরণ করা জাকির ৪৩ বলে খেলেন ৭০ রানের ইনিংস। হার না মানা যে ইনিংসে ৭টি চারের সঙ্গে একটি ছক্কাও হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটার। চট্টগ্রামের বোলারদের মধ্যে নিহাদুজ্জামান আর কুর্তিস ক্যাম্ফার নেন একটি করে উইকেট।

সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতলো দুর্দান্ত ঢাকা : শেষ দুই ওভারে দরকার ১৩। হাতে ৭ উইকেট। যে ম্যাচটি সহজেই জেতার কথা দুর্দান্ত ঢাকার, সে ম্যাচটি গেলো শেষ ওভারে পর্যন্ত। ১৮তম ওভারে খুশদিল শাহ প্রথম পাঁচ বলে দেন মাত্র ৩, বোল্ড করেন সাইফ হাসানকে (৮ বলে ৭)। ৭ বলে দরকার তখন ১০ রান। ম্যাচ অনেকটাই জমে উঠেছে। তবে ইরফান শুক্কুর ওভারের শেষ বলটি ছক্কা হাঁকিয়ে আবার দুরন্ত ঢাকার দিকে নিয়ে আসেন খেলা। শেষ ওভারে দরকার মাত্র ৪। কিন্তু নাটক তখনও বাকি।

 

মোস্তাফিজুর রহমান শেষ ওভারে এসে প্রথম দুই বলে দেন মাত্র ১, আউট করেন শুক্কুরকে (১৮ বলে ২৪)। ৪ বলে দরকার পড়ে ৩। মোস্তাফিজ বোলিংয়ে থাকায় মিরাকলের আশায় ছিল কুমিল্লা। মিরাকল অবশ্য হয়নি। চতুরঙ্গ ডি সিলভা উইকেটে এসেই ছক্কা হাঁকিয়ে শেষ করে দেন ম্যাচ। ৫ উইকেট আর ৩ বল হাতে রেখে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে এবারের বিপিএলে শুভসূচনা হলো মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের দুর্দান্ত ঢাকার।

 

১৪৪ রানের লক্ষ্য সামনে রেখে ১২.৪ ওভারের উদ্বোধনী জুটিতে নাইম শেখ আর দানুশকা গুনাথিলাকাই ১০১ রান তুলে দিয়েছিলেন। নাইম অবশ্য ফিফটির পরপরই আউট হয়ে যান। ৪০ বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় ৫২ রান করে তিনি হন স্পিনার তানভীর ইসলামের শিকার। তানভির এরপর তুলে নেন আরেক ওপেনার গুনাথিলাকাকেও। ৪১ বলে ৪১ করেন লঙ্কান এই ব্যাটার। এরপর মোস্তাফিজুর রহমানের বলে আকাশে ক্যাচ তুলে দেন লাসিথ ক্রুসপুলে (৮ বলে ৫)। হঠাৎ ম্যাচে ফেরে কুমিল্লা। তবে শেষ রক্ষা হলো না। দুর্দান্ত ঢাকার মোস্তাফিজ ৩১ রানে আর তানভীর ইসলাম ২৭ রানে নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।

 

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে হাতখুলে খেলতে পারেননি গত আসরের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ব্যাটাররা। শেষ ওভারে এসে তো হ্যাটট্রিকই করে বসেছেন দুরন্ত ঢাকার পেসার শরিফুল ইসলাম। উইকেট ধরে রাখলেও বড় স্কোর গড়তে ব্যর্থ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ৬ উইকেট হারিয়ে তারা সংগ্রহ করেছে মোটে ১৪৩ রান। ওপেনার ইমরুল কায়েস ৫৬ বলে করেছেন ৬৬ রান। তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাট থেকে আসে ৪১ বলে ৪৭।

 

মিরপুরের উইকেট বরাবরের মতোই টিপিক্যাল। লো এবং স্লো। ব্যাটারদের জন্য রান করা এমন উইকেটে বেশ কঠিন। ফলে ইমরুল এবং তাওহিদ হৃদয় ১০০ রান প্লাস ব্যাটিং জুটি গড়লেও স্কোর খুব একটা বড় হয়নি। ব্যাট করতে নেমে শুরুর দিকেই লিটন দাসকে হারায় কুমিল্লা। ১৬ বলে ১৩ রানের ধীর ইনিংস খেলে চতুরঙ্গ ডি সিলভার শিকার হন কুমিল্লা অধিনায়ক। সেখান থেকে হৃদয় আর ইমরুলের ৮৭ বলে ১০৭ রানের জুটি।

 

১৯তম ওভারে হৃদয় ফিফটির দোরগোড়ায় এসে ফিরেছেন তাসকিন আহমেদের শিকার হয়ে। ৪১ বলে ৪৭ রানের ইনিংসে একটি চার আর দুটি ছক্কা হাঁকান এই ব্যাটার। ওই ওভারেই এক বল পর আউট হন দলের টপস্কোরার ইমরুল। ৬ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় তিনি ৫৬ বলে করেন ৬৬ রান। শরিফুল ইসলামের করা ইনিংসের শেষ ওভারে খুশদিল শাহ দুটি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন। কিন্তু সেটিই যেন কাল হয়। ওই ওভারের শেষ তিন বলে খুশদিল, রস্টন চেজ আর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে তুলে নিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন শরিফুল। ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন শরিফুল। ৩০ রানে ২ উইকেট শিকার তাসকিনের।

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ