প্রকাশিত: ২:০০ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৪
স্পোর্টস ডেস্ক :: দল বেধে বাংলাদেশের সবাই ছুটে গেলেন ফটোগ্রাফারদের দিকে। গ্যালারিতে তখন ‘বাংলাদেশ-বাংলাদেশ’ রব। শেষ সময়ের গোলে ভারতকে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করার পর নিজ সমর্থকদের অভিবাদন নিলেন লাল-সবুজের ফুটবলাররা।
সুযোগ নষ্টের ভিড়ে ভারতের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র-টাকে যখন মনে হচ্ছিল ম্যাচের একমাত্র ফল, তখনই এগিয়ে এলেন মোসাম্মৎ সাগরিকা। তাঁর শেষ সময়ের গোলে ভারতকে ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী সাফের চার দলের ভেতর সবার আগে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।
নেপাল ও ভারতকে হারিয়ে ৬ পয়েন্টে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। সমান ম্যাচে নেপাল ও ভারতের পয়েন্ট ৩। আগামী পরশু ভুটানের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলবে স্বাগতিকেরা। ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় সেই ম্যাচ এখন শুধুই আনুষ্ঠানিকতার।
যে দল নিয়ে নেপালের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ, ভারতের বিপক্ষে সেই অপরিবর্তিত একাদশটাকেই মাঠে নামান কোচ সাইফুল বারী টিটু। কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে আক্রমণ-প্রতি আক্রমণের খেলার পরও প্রথমার্ধে গোল পায়নি কোনো দলই। শুরুর সুযোগটা এসেছিল বাংলাদেশের সামনে। ম্যাচের দুই মিনিটের মাথায় অধিনায়ক আফঈদা খন্দকারের ৪০ গজ দূরের ফ্রি কিক অল্পের জন্য জাল খুঁজে পায়নি।
আফঈদার এই ফ্রি কিকের পরই খেলার নিয়ন্ত্রণ নেয় ভারত। ১২ মিনিটে ভারতকে প্রায় এগিয়েই দিয়েছিলেন উইঙ্গার নেহা। বাঁ প্রান্ত থেকে তাঁর কোনাকুনি শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান বাংলাদেশ গোলরক্ষক স্বর্না রানী মন্ডল। আফঈদাদের নড়বড়ে রক্ষণে বারবার বাঁ প্রান্ত ধরে ভেতরে ঢুকছিলেন নেহা। ৪৪ মিনিটে আরেকবার পরীক্ষা নিলেন স্বর্না রানীর। বাঁ প্রান্ত ধরে নেহার শট আটকে পরীক্ষায় পাস বাংলাদেশ গোলরক্ষক। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে এগিয়ে যাওয়ার আরেকটি সুযোগ হাতছাড়া বাংলাদেশের। আফঈদার ফ্রি কিকে বল এবারও লক্ষ্য খুঁজে পায়নি।
দ্বিতীয়ার্ধে বলের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের পায়ে থাকলেও পরিষ্কার গোলের সুযোগটা কিছুতেই আসছিল না। ৬৭ মিনিটে একটা সুযোগ এলো। স্বপ্না রানীর কর্নার থেকে শরীরের ভারসাম্য ঠিক না থাকায় মাথা আর বলে ঠিকঠাক স্পর্শ করাতে পারেননি সুরমা জান্নাত। তাঁর নিয়ন্ত্রহীন হেডে বল বিপদমুক্ত করেন ভারত গোলরক্ষক আনিকা দেবী। ৭২ মিনিটে কর্নার থেকে এই স্বপ্নার বাঁকানো শট কোনো রকমে ঠেকান ভারত গোলরক্ষক। ফিরতি বলে আফঈদার ভলি ক্রসবারের ওপর দিয়ে চলে যায় বাইরে।
৮১ মিনিটে বাংলাদেশকে বাঁচিয়েছেন আফঈদা। বাংলাদেশি গোলরক্ষক আর ডিফেন্ডারের ভুলে বক্সের বাঁ প্রান্ত দিয়ে বল পান শিবানি দেবী। তার শট গোলরক্ষককে হার মানালেও বল গোলপোস্টে যাওয়ার আগে ঠেকান আফঈদা। দুই মিনিট পর দারুণ এক সুযোগ হাতছাড়া লাল-সবুজদের। স্বপ্না রানীর ফ্রি কিক থেকে সুরমা জান্নাতের হেড ঠিকঠাক গ্লাভসে নিতে ব্যর্থ হোন ভারত গোলরক্ষক। বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড় সুবিধাজনক অবস্থায় না থাকায় বল বিপদমুক্ত করেন থইবিসানা চানু তোইজাম।
৮৭ মিনিটে ম্যাচের সেরা সুযোগটা নষ্ট করেন মুনকি আক্তার। ভারত গোলরক্ষকের ভুলে ডিবক্সের সামনে বল পান তিনি। তাঁর সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষকই। মুনকি সেই শট মেরে বসেন গোলরক্ষকের গায়ে। সুযোগ নষ্টের মহড়ায় যখন ম্যাচ গোলশূন্য ড্রয়ের পথে তখনই দর্শকদের উল্লাসে ভাসান আগের ম্যাচের জোড়া গোল পাওয়া সাগরিকা। পুরো ম্যাচে নিষ্প্রভ থাকা ফরোয়ার্ড জ্বলে উঠলেন একদম শেষ সময়ে।
অতিরিক্ত সময়ে নিজেদের অর্ধ থেকে আফঈদার লম্বা করে বাড়ানো বল ঠিকঠাক নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি ভারত ডিফেন্ডার শাহিনা। বল তাঁর মাথার ওপর দিয়ে গিয়ে পড়ে সাগরিকার পায়ে। সামনে এগিয়ে এসেছিলেন ভারত গোলরক্ষক, তাঁকে হার মানিয়ে বাংলাদেশকে ফাইনালে নিয়ে যান সাগরিকা।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech