ছাত্রলীগ সভাপতি ইকবাল হাসানের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ‘টিকটকার’ তরুণী শিমরান সাদিয়া

প্রকাশিত: ৬:২৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৩০, ২০২৪

ছাত্রলীগ সভাপতি ইকবাল হাসানের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ‘টিকটকার’ তরুণী শিমরান সাদিয়া

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়ের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান করেছে ‘টিকটকার’ তরুণী শিমরান সাদিয়া। । এসময় তার সঙ্গে ছিলেন তার চাচাতো বোন। ঐ সময় বিজয় তাদের নিয়ে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়। এদিকে সংগঠনবহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে ইকবাল হাসান বিজয়কে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ।

জানা যায় শিমরান সাদিয়াকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করায় স্থানীয় চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনকে অভিযুক্ত করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছে তরুণী।

অভিযুক্ত ইকবাল হাসান বিজয় সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ওলামা বাজার এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে। বিজয় ফেনীর পুবালি সংসদ ও রাজধানীর একটি নাট্যসংগঠনের হয়ে মঞ্চে অভিনয় করেন। ভুক্তভোগী শিমরান সাদিয়া টিকটকার ও মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেন।

জানা যায়, গত রোববার দুপুরে শিমরান সাদিয়া তার এক চাচাতো বোনকে নিয়ে ঢাকা থেকে ফেনীর সোনাগাজীর চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদে এসে ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় চরচান্দিয়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান বিজয়ের সঙ্গে তার ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সহযোগিতা চান। এ সময় তরুণী নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা বলেও দাবি করেন। পরে তরুণীর কথা অনুসারে চারজন গ্রাম পুলিশ সদস্যের সঙ্গে সাদিয়াকে ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের বাড়িতে পাঠান ইউপি চেয়ারম্যান।

এদিকে ঘটনার জানাজানি হলে স্থানীয় মানুষজন ও সাংবাদিকরা বিজয়ের বাড়িতে অবস্থান করেন । এসময় বিজয় ঢাকা থেকে আসা মেহমানদের সঙ্গে কথা শেষ করে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার বাড়ির পেছন দিক দিয়ে সাদিয়া ও তার চাচাতো বোনকে নিয়ে পালিয়ে যায়।

গ্রাম পুলিশ সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমরা বিজয়ের বাড়িতে পৌঁছালে দরজার সামনে সে আমাদের অপেক্ষা করতে বলে। এসময় তরুণী ও সঙ্গে থাকা মেয়েকে ঘরে নিয়ে যায়। অনেকক্ষণ ধরে আমরা অপেক্ষা করলে জানতে পারি বিজয় মেয়ে দুটিকে নিয়ে বাড়ির পিছন দিয়ে অন্যত্র চলে যায়।

এ ব্যাপারে চরচান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, দুপুরের দিকে এক তরুণী সঙ্গে আরও একজন মেয়েকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে এসে ছাত্রলীগ সভাপতি বিজয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথা বলেন। তখন তারা বিজয়ের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চান। আমি গ্রাম পুলিশ সদস্যদের মাধ্যমে তাদের বাড়ি পাঠিয়েছি। গ্রাম পুলিশ সদস্যরা বাইরে অবস্থানকালে বিজয় তাদের নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে পালিয়ে যান।
তিনি আরো বলেন, রোববার মধ্যরাতে ওই তরুণীর সঙ্গে আমার যোগাযোগ হয়েছে। তখন বিজয় তাদের ফেনী শহরের মহিপাল এলাকায় জিম্মি করে রেখেছে বলেও তরুণী আমাকে জানিয়েছেন।

তবে প্রেমের বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা বিজয় বলেন, আমি ছাত্রলীগ নেতা, নাট্যকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী ও সমাজকর্মী। আমার সঙ্গে অনেকের পরিচয় রয়েছে। এর আগেও আমার বাড়িতে অনেকে বেড়াতে এসেছেন। সাদিয়াকে নিয়ে বানোয়াট ঘটনা ঘটায় আমি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এসবের প্রতিকার চাইতে আমি এবং সাদিয়া মামলা করবো।

তবে ‘বিজয়ের চাপে পড়ে’ সাদিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকটি ভিডিও বার্তা পোস্ট করে বলে জানা যায়। সেসব বার্তায় সাদিয়া বলেন, আমি শুটিংয়ের কাজে সোনাগাজীতে গেলাম। পরিচিত হওয়ার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে গিয়েছি। বিজয় আমার পূর্ব পরিচিত। চেয়ারম্যানের কথা বার্তায় বুঝতে পারলাম, চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিজয়ের দ্বন্দ্ব আছে। চেয়ারম্যান মিলন আমাকে ব্যবহার করে বিজয়কে ঘায়েল করতে চেয়েছে। বিষয়টি মুহূর্তের মধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল করে ও উল্টাপাল্টা নিউজ গণমাধ্যমে প্রকাশ করে আমার এবং বিজয়ের বড় ধরনের ক্ষতি করেছে। আমার জন্য নিরপরাধ একটি ছেলে (বিজয়) বিপদে পড়েছে। প্রয়োজনে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলবো।

এদিকে সংগঠনবহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে ইকবাল হাসান বিজয়কে কারণ দশার্নোর নোটিশ দিয়েছে সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগ। সোনাগাজী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন সাইমুন বলেন, তিন কর্মদিবসের মধ্যে বিজয়কে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

0Shares