ড. ইউনূসকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের চিঠি

প্রকাশিত: ১২:৫৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৭, ২০২৪

ড. ইউনূসকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের চিঠি
ডায়ালসিলেট ডেস্ক :বাংলাদেশে জুলাই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে প্রাণহানীর যে ঘটনা ঘটেছে তার সুষ্ঠু তদন্তে জাতিসংঘের রূপরেখা চাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে চিঠি দিয়েছে নিউইয়র্ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সাম্প্রতিক গুরুতর নির্যাতনের তদন্ত ও জবাবদিহিতার জন্য একটি স্বাধীন প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠার জন্য জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের আসন্ন অধিবেশনে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা (রেজুলেশন) চাওয়া উচিত। কাউন্সিলের উচিত বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উপর জাতিসংঘের হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ওএইচসিএইচআর) দ্বারা চলমান পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করা এবং কাউন্সিলের কাছে নিয়মিত রিপোর্টের বিষয়টি নিশ্চিত করা। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৭তম অধিবেশন আগামী ৯ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের প্রশাসনে বলপূর্বক গুম, নির্যাতন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে একটি স্বাধীন অভ্যন্তরীণ তদন্ত গঠনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারেরও ওএইচসিএইচআর এবং সংশ্লিষ্ট জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের সাথে কাজ করা উচিত। এই অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াটিকে জাতিসংঘের সমর্থন এবং তত্ত্বাবধানে কাজ করা উচিত যাতে এর স্বাধীনতা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করা যায়।

জাতিসংঘে নিযুক্ত হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-এর উপ-পরিচালক লুসি ম্যাককারনান বলেছেন, ‘গণবিক্ষোভের মধ্যে শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে অতীতের হিসাব-নিকাশ নিশ্চিত করাটা জরুরি। সরকারের উচিত সাম্প্রতিক মানবাধিকার অবমাননার পাশাপাশি সাবেক সরকারের ১৫ বছরের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি স্বাধীন অভ্যন্তরীণ তদন্তের জন্য জাতিসংঘের সমর্থন চাওয়া।’ এছাড়া অন্তবর্তী সরকারের কাছে নিরাপত্তা বাহিনীর তদারকি করার বিষয়টিও খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন লুসি ম্যাককারনান। তিনি মনে করেন আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ এবং অবমাননাকর আইন সংশোধন করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে পরিবর্তন সাধিত করা।

শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতিতে যে বিক্ষোভের জন্ম হয়েছিল তার বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন ছিল বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক। এ ঘটনায় ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্টের মধ্যে কমপক্ষে ৪৪০ জন নিহত এবং কয়েক হাজার আহত হয়েছেন। হতাহতের জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইন প্রয়োগকারীদের অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সাথে সম্পৃক্ত ছাত্র ও যুব লীগের কর্মীদের দায়ী করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এছাড়া বাংলাদেশে আশ্রয়প্রার্থী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সুরক্ষা দেয়া, অন্তর্বর্তী সরকারে নারী প্রতিনিধিত্ব বৃদ্ধি এবং র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র‌্যাবের মতো বাহিনীকে ভেঙে দেয়ার আহ্বানও জানানো হয় হিউম্যান রাইটস ওয়াচের চিঠিতে।

0Shares