প্রকাশিত: ১০:৩৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০২৪
ডায়ালসিলেট ডেস্ক :আবারো বড় ব্যবধানে নীতি সুদহার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংক নীতি সুদহার ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এতে ওভারনাইট রেপো সুদহার ১০ শতাংশে উন্নীত হবে এবং ঋণসহ সব ধরনের ব্যাংকিং পণ্যের সুদের হার বেড়ে যাবে।
সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, নীতি সুদহার বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত ২৭শে অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে। মুদ্রানীতিতে সংকোচনমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে বলে জানানো হয়।
এর আগে গত ২৪শে সেপ্টেম্বর নীতি সুদহার সর্বশেষ বাড়ানো হয়েছিল। তখনো ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে নীতি সুদহার ৯ দশমিক ৫০ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, নীতি সুদহার বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর তারল্য ব্যবস্থাপনা আরও দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করার লক্ষ্যে নীতি সুদহার করিডরের ঊর্ধ্বসীমা স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটির (এসএলএফ) ক্ষেত্রে বিদ্যমান সুদহার ১১ শতাংশ থেকে ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে ১১ দশমিক ৫০ শতাংশে এবং নিচের সীমা স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) ৭ থেকে ৫০ ভিত্তি পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ দশমিক ৫০ শতাংশে নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, ২৫শে আগস্ট অনুষ্ঠিত মুদ্রানীতি কমিটির পঞ্চম সভায় মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত সংকোচনমূলক নীতি অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোন সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কোন পর্যায়ে নামিয়ে আনতে চায়, সে সম্পর্কে চিঠিতে কিছু বলা হয়নি।
নীতি সুদহার বাড়ানোর মূল লক্ষ্য হলো বাজারে অর্থের সরবরাহ কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি মনে করে বাজারে অর্থের সরবরাহ বেশি এবং সে কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, তাহলে অর্থপ্রবাহ কমাতে নীতি সুদহার বৃদ্ধি করা হয়। নীতি সুদহার বৃদ্ধির অর্থ হলো, ব্যাংকগুলোকে অতিরিক্ত সুদ দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ করতে হবে। ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের যে ঋণ দেয়, তার সুদহারও বাড়ে। নীতি সুদহার বেশি হলে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে নিরুৎসাহিত হয়।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, সেপ্টেম্বর মাসে দেশে মূল্যস্ফীতি কমেছে। এ মাসে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ। খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে থাকলেও তা আগের মাসের তুলনায় কমার কথা জানায় বিবিএস। সেপ্টেম্বরে এই হার ছিল ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে টানা দুই মাস মূল্যস্ফীতি কমার তথ্য দিয়েছিল সরকারি এই সংস্থা। তবে চলতি মাসে বাজারে প্রায় প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়ে। এ নিয়ে সমালোচনার মুখে সরকার কিছু পণ্যে আমদানি শুল্ক কমানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। তাতে ডিমের মতো পণ্যের দাম কিছুটা কমে। তবে বাজারে নতুন করে মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে চাল, ভোজ্য তেল, চিনি ও পিয়াজের। পণ্যগুলোর দাম কমাতে সরকার শুল্ক-করে ছাড় দিলেও এর সুফল এখনো বাজারে পড়েনি। চারটি পণ্যের দাম আরও বাড়লো এমন সময়ে, যখন বাজারে কোনো স্বস্তি নেই।এদিকে গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছিলেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে দুই দফায় নীতি সুদহার বাড়ানো হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের ওই বক্তব্যের পরের দিন ২৪শে সেপ্টেম্বর নীতি সুদহার বাড়ানো হয়।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech