ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: তেলের সঙ্গে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করলে শাসি্তর আওতায় আনা হবে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান। রোববার অধিদপ্তরের সভাকক্ষে পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে ভোজ্যতেলের হালনাগাদ তথ্য সম্পর্কে অবহিত, মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে মতবিনিময় সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

 

মহাপরিচালকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় অধিদপ্তরের পরিচালক ফকির মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন, ভোজ্যতেল মিল মালিক প্রতিনিধি, বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির প্রতিনিধি, বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধি, খুচরা ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী, কনজু্যমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশসহ (ক্যাব) সংশি্লষ্ট বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

 

আলীম আখতার খান বলেন, বাজারে পাম তেল সরকারি দরের চেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে সয়াবিন তেল নিয়ে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। তেলের ক্ষেত্রে আমরা ৬টি রিফাইন প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। ৩-৪ মাস ধরে তেল নিয়ে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। প্রতিদিন তেলের উত্পাদন কত, তা কোম্পানিগুলোকে দৈনিক ভোক্তা অধিদপ্তরকে জানাতে হবে। এজন্য কোম্পানিগুলোয় সফটওয়্যার তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি শর্তযুক্ত বিক্রি নিন্দনীয়। শর্তযুক্ত করে তেল বিক্রি করলেই শাসি্তর আওতায় আনা হবে। এছাড়া বর্তমানে যে পরিমাণ রিফাইন হচ্ছে, তা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করতে হবে।

 

মনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা রাজধানীর ৪টি বাজার পর্যবেক্ষণ করে দেখেছি খুচরা দোকানে তেল কম, ডিলার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছেন। তেলের সঙ্গে শর্তজুড়ে দেওয়ার বিষয়টির সত্যতা পাওয়া গেছে। পাইকারি বিক্রির ক্ষেত্রে রসিদ দেখাতে পারছে না। এসও করে নির্দষ্টি সময়ে তেল সরবরাহ করা হচ্ছে না। তাছাড়া খোলা ভোজ্যতেলের দাম কোনো কোনো ক্ষেত্রে বোতলজাত তেলের চেয়ে বেশি।

 

নিউ মার্কেটের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের বলেন, বাজারে ৫ লিটারের তেল নেই। ডিলাররা জানান, সরকারের সঙ্গে কোম্পানির আলোচনা হচ্ছে। দাম বাড়ালে তেল বাজারে চলে আসবে। কোম্পানির কাছে পর্যাপ্ত তেল আছে। তিনি বলেন, এখন ৫ কার্টন চাইলে ১ কার্টন দেওয়া হচ্ছে। তেল দিলে পোলাওয়ের চাল, আটা, লবণ, চা পাতাসহ অন্যান্য পণ্য কেনার শর্ত জুড়ে দিচ্ছে। তেলের অর্ডার নিয়ে না জানিয়ে এসব পণ্য দিয়ে যাচ্ছে।

 

ভোজ্যতেল মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মওলা বলেন, পরস্পরের মধ্যে কাদা ছোড়াছুড়ি বাদ দিতে হবে। কোম্পানিগুলো তেল এনে রিফাইন করে। আর আমরা তা বিক্রি করি। কয়েক বছর ধরে ট্যারিফ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মিলে দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে। দরকার পড়লে আবার দাম ঠিক করে নেন।

 

টিকে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতহার তসলিম বলেন, রোজা উপলক্ষ্যে টিকে দ্বিগুণ এলসি করেছে। সেপ্টেম্বরের এলসি অক্টোবরে করা হয়েছে। এসব ডিসেম্বরে আসার কথা ছিল। কিন্তু ব্রাজিলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে তা দেরি হয়েছে। তিনি বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি বড় চালান আসবে। ২৬ ফেব্রুয়ারির পর তেলের সংকট হবে না। এ সময় তিনি টিসিবি কেন তেল আমদানি করে না বলে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, টিসিবি কেন প্রাইভেট কোম্পানি থেকে তেল কিনবে? দেশে একসময় ৪৮টি রিফাইনারি ছিল। লোকসান দিতে দিতে তার মধ্যে ৮টি টিকে আছে।

 

 

সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহা দাবি করেন, নিয়মিত ড্রাম ও বোতলে ডিলারদের কাছে তেল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ডিলাররা খুচরা পর্যয়ে তেল সরবরাহ করছে। এখানে সংকটের কোনো কারণ নেই।

 

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *