সোহেল আহমদ ::  একজন ব্যক্তি তার ক্ষমতা আর চেয়ারের বড়াই তখনই দেখায় যখন তার মনের ভেতরে জন্মাবে অহংকারের কারখানা। সে নিজের কর্মকে ক্ষমতার অপব্যবহার করবে। উচ্চ মহলে নিজের চাকরি বাচিয়ে রাখতে তাদেরকে কাবু করে নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যতিব্যস্ত। এ ধরনের ব্যক্তিরা তাদের নিজের স্বাথের জন্য অন্যকে বলি দিতে দিধা করবে না।

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিখ্যাত এক গানের কথায় আছে, তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই,

আর সেই অবস্থানকে টিকিয়ে রাখতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশ হাইকমিশনের যুক্তরাজ্য প্রেস সচিব আকবর হোসেন মজুমদার যেন অহংকারের সীমা নেই। তার আচরণে মনে হয় তিনি নিজেই যুক্তরাজ্য বাংলাদেশ হাই কমিশনের কমিশনার।

তিনি কাউকে তোয়াক্ক করেন না,তার আচরণের ভঙ্গিতে মনে হয় প্রেসিডেন্টের ভাব। তার এ অভিনয়ে যেন সিনেমাকেও হার মানায়।

গত ২০২৪ সালের ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুর্থানের পর ২ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া আকবর হোসেনের পা যেন মাটিতে পড়ে না। পৃথিবীর ফাষ্ট ওয়ার্ল্ড দেশ হিসেবে স্বীকৃত যুক্তরাজ্যের মত জায়গায় বাংলাদেশের একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশের হাইকমিশনের প্রেস সচিব দ্বায়িত্ব নেয়া আকবর হোসেন এর কাছে প্রবাসী বাঙ্গালীরা কি আশা করতে পারে তা বোধগম্য নয়।

গুটি কয়েক সাংবাদিকদের হাত করে কিনে নিয়েছেন যুক্তরাজ্য মিডিয়া সেক্টর। দেশে-বিদেশে নিজেকে ফ্রন্টলাইনে আনতে অনেকের সাথে গড়ে তুলেছেন ঘনিষ্ট সম্পর্ক। নিজের স্বার্থকে হাসিল করার জন্য প্রয়োজনে অন্যকেও পেটে লাথি মারতেও পিছপা হবেন না। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে তেলবাজি করায় এটাই প্রমাণিত হয় নিজের অবস্থানকে টিকিয়ে রাখতে এটিই হচ্ছে তার উত্তম পন্থা।

আজ শুক্রবার সকাল ৯ঘটিকার সময় যুক্তরাজ্য লন্ডনের ডরচেষ্টার হোটেলে বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.মুহম্মদ ইউনূসের সাথে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দীর্ঘ ২ ঘন্টা বৈঠক শেষে তারেক রহমান সেখান থেকে নেতার্কমীদের বিদায় জানিয়ে চলে যান।

পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব ও বিএনপি সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা সাংবাদিকদের সাথে প্রেস বিফ্রিং আয়োজন করেন। এসময় সেখানে দ্বায়িত্বে থাকা বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রেস সচিব আকবর হোসেন বেশ কয়েকজন সাাংবাদিকদের ঘটনাস্থলে পাস কার্ড বিতরণ করেন। পরে সাংবাদিকরা একে একে ভিতের প্রবেশ করেন।

এসময় সেখানে বাকি ৩ সাংবাদিক অবস্থান করেন পাস কার্ডের জন্য। সেখানে হাই কমিশনের প্রেস সচিব আকবর হোসেনকে পাস কার্ডের জন্য বললে তিনি উপস্থিত সময়ে তাদেরকে অপেক্ষা করতে বলেন এবং তাদেরকে আশ্বাস দিয়ে সেখান থেকে চলে যান। পরে আবারও সেখানে অবস্থান করেন আকবর হোসেন তার পরিচিত জনদের এগিয়ে নিতে সেখানেই তাদেরকে পাসকার্ড দিয়ে ভিতরে চলে  যেতে বলেন ।  অপেক্ষারত বাকি ৩ সাংবাদিক আবারো তাকে ২য় বারের মত জিজ্ঞাসা করলে তিনি কথা এড়িয়ে চলে ভিতরে চলে যান। একজন দ্বায়িত্বশীল সচিব হিসেবে যেন নিজের ক্ষমতার বড়াই দেখিয়েছেন।

এবিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে থেকে বঞ্চিত সাংবাদিকরা বলেন, প্রেস সচিব আকবর হোসেন তার নিজের ক্ষমতার বড়াই দেখিয়েছেন। তাকে আমরা সাংবাদিক পরিচয় দেয়া সত্বেও  তা এড়িয়ে চলে যান কিন্তু অন্যদিকে তার স্বজনপ্রীতি দেখিয়ে আত্নীয় স্বজনদের ডেকে নিয়ে হাতে পাস কার্ড তুলে দেন। একজন প্রেস সচিব হিসেবে এমন আচরণ কখনই কাম্য ছিলো না। শিক্ষিত ব্যক্তি হয়ে মূর্খতার পরিচয় দিয়েছেন  আকবর। নিজেকে খুব বড় মাপের কর্মকর্তা মনে করেন এমন ক্ষমতা হয়তো বেশিদিন ঠিকবে না।

তার এ বেয়াদবের মাশুল একসময় দিতে হবে। এ ধরনের দ্বায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকর্তাকে হাইকমিশন থেকে অপসারণ করা উচিত। তা না হবে ভবিষ্যতে অনেক বেগ পেতে হবে। যারা সাংবাদিকদের মূল্যায়ন করে না , তারা সাধারণ প্রবাসী জনসাধারণদের উপর কিরূপ আচরণ করছে তা সহজের বুঝা যায় । আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

উল্লেখ্য, অন্তবর্তীকালীন সরকারের ২ বছরের চুক্তি দেয়া হয় আকবর হোসেনকে। তার পরবর্তী টার্গেট আসন্ন নির্বাচনকে ঘীরে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তার নিয়োগ যাতে বাতিল না হয় সেজন্য আগে থেকে তার পদটিকে টিকিয়ে রাখতে  শীর্ষ নেতাদের সাথে সব ধরনের লিয়াজু মেনটেইন করে যাচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির এক  নেতা বলেন, বাংলাদেশ হাই কমিশন এখন সাময়ের সাথে সাথে নিজেদের পদকে ধরে রাখতে বিভিন্ন স্থানে লবিংও করছেন। এদিকে বিএনপি দলের সাংবাদিক পরিচয় দানকারী এক সাংবাদিক হাইকমিশনে কর্মকর্তাদের বিএনপি সমর্থিত কর্মী এবং সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তাদের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। সে বিষয়ে তদন্ত করলে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

আকবর হোসেনের মত ব্যক্তিরা বাংলাদেশ হাই কমিশনের মত জায়গায় এরূপ আচরণে  সাধারণ প্রবাসীরা বাঙ্গালীরাও অনিরাপদ।