হার্ভার্ড ইহুদি শিক্ষার্থীদের নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে দাবি হোয়াইট হাউসের

প্রকাশিত: ৭:২৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ১, ২০২৫

 

 

 

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ফের সংঘাতে জড়ালো ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। হোয়াইট হাউস দাবি করেছে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ইসরাইলি এবং ইহুদি শিক্ষার্থীদের সাথে আচরণের ক্ষেত্রে নাগরিক অধিকার আইন লঙ্ঘন করেছে, যা সম্ভাব্যভাবে তাদের ফেডারেল তহবিল পাবার পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। হার্ভার্ডে পাঠানো একটি চিঠিতে বলা হয়েছে, প্যালেস্টাইনে হামলার প্রতিবাদে হার্ভার্ডে যখন ইসরাইল-বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেই সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইহুদি এবং ইসরাইলের শিক্ষার্থীদের প্রতি উদাসীন ছিল। তাদের সুরক্ষা দেওয়াতো দূরের কথা, উল্টো শিক্ষার্থীদের নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়। হার্ভার্ড বলেছে যে, তারা বৈষম্য মোকাবেলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে এবং সরকারের অনুসন্ধানের বিষয়ে জোরালোভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছে।

 

বিবিসি ট্রাম্প প্রশাসনের যে চিঠিটি দেখেছে তাতে বলা হয়েছে যে, যদি হার্ভার্ড তার ভুল না শোধরায়, তাহলে আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবরকম অনুদান বন্ধ করবে মার্কিন প্রশাসন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যালান গারবারকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, হার্ভার্ড অবশ্য ফেডারেল সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই কাজ চালিয়ে যেতে পারে। সম্ভবত এই ধরনের একটি সুযোগ তাকে আরো একবার নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে সাহায্য করবে। চিঠি অনুসারে, ফেডারেল তদন্তকারীরা দেখেছেন যে অধিকাংশ ইহুদি শিক্ষার্থী তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্য বা পক্ষপাতের অভিযোগ করেছেন। যার মধ্যে এক চতুর্থাংশ শারীরিকভাবে হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। চিঠিতে বর্ণিত আচরণের মধ্যে রয়েছে ইহুদি ছাত্রদের উপর থুথু ফেলা বা লাঞ্ছিত করা, ইহুদি-বিরোধী স্টিকার বিতরণ করা। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে -এই নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের মুখে হার্ভার্ডের নিষ্ক্রিয়তা বিশ্ববিদ্যালয়কে দখল করে নেওয়া জনসংখ্যাগত শ্রেণিবিন্যাসের একটি স্পষ্ট উদাহরণ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ইহুদি-বিদ্বেষ আরও তীব্র হয়ে উঠেছে।’ এক বিবৃতিতে, হার্ভার্ড বলেছে যে তারা ক্যাম্পাসে ইহুদি-বিদ্বেষ মোকাবেলায় ‘সক্রিয় পদক্ষেপ’ নিয়েছে এবং ধর্মান্ধতা, ঘৃণা এবং পক্ষপাত মোকাবেলায় উল্লেখযোগ্য ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সোমবার হোয়াইট হাউসে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বলেন যে প্রশাসন এবং হার্ভার্ডের মধ্যে আলোচনা “বন্ধ দরজার পিছনে” চলছে, এ বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি। এপ্রিল মাসে, হার্ভার্ড একটি অভ্যন্তরীণ তদন্তের ফলাফল প্রকাশ করে যেখানে দেখা গেছে যে গাজায় চলমান যুদ্ধের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি গভীরভাবে মেরুকৃত, উভয় পক্ষের শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টি বেশ কিছু পদক্ষেপও নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে সংলাপের সমস্যা দূর করা, বৈষম্যহীনতা ও গুন্ডামি বিরোধী নীতি জোরদার করা এবং ইহুদি-বিদ্বেষ বিরোধী প্রশিক্ষণ বৃদ্ধি করা।এর আগে, মে মাসে, ট্রাম্প প্রশাসন মার্কিন ফেডারেল সংস্থাগুলোকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুদান পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল যাতে তহবিল বন্ধ বা পুনর্বণ্টন করা সম্ভব হয়। প্রশাসন অনুমান করেছিল যে প্রায় ৩০ টি চুক্তি, যার মোট মূল্য ১০০ মিলিয়ন ডলার পর্যালোচনা করা যেতে পারে। প্রশাসন ইতিমধ্যেই ২.৬৫ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল অনুদান আটকে দিয়েছে এবং হার্ভার্ডের আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষমতা বাতিল করার চেষ্টা করেছে। ট্রাম্প প্রশাসন গত মাসে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়কেও একই ধরণের নোটিশ জারি করে, যেখানে ইহুদি শিক্ষার্থীদের হয়রানি থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

 

সূত্র : বিবিসি

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ