ডায়াল সিলেট ডেকস
সিলেট: জেলার বিশ্বনাথের স্কুল ছাত্র সুমেল মিয়া হত্যা মামলার রায়ে ৮ আসামির মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন ও ১৭ আসামির ২ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ জুলাই) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় ঘোষণা করেন।
অত্র আদালতের বেঞ্চ সহকারি (পেশকার) আল আমিন রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, মামলায় ৩৪ জন আসামির ৮ জনের ফাঁসি, ৭ জনের যাবজ্জীবন এবং ১৭ জনের ২ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। তন্মধ্যে ৩১ জন কারাগারে রয়েছেন। কেবল ২ বছরের সাজাপ্রাপ্ত মামুনুর রশিদ পলাতক রয়েছেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-বিশ্বানাথ উপজেলার ইসলামপুর গ্রামের মৃত আফতাব আলীর ছেলে সাইফুল আলম (৪৪), তার সহোদর নজরুল আলম (৪১), ছদরুল ওরফে সদর আলম (৪৩), একই উপজেলার চৈতন্যনগর গ্রামের মৃত মনোহর আলীর ছেলে সিরাজ উদ্দিন (৪৭), ভাটিপাড়ার মৃত ফিরোজ আলীর ছেলে জামাল মিয়া (৪৯), নয়াগাওয়ের শফিক আলীর ছেলে শাহিন উদ্দিন (৪২), গাঙ্ঘুটিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে আব্দুল জলিল (৪৯) এবং পশ্চিম ঘরগাড়িকান্দি গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- উপজেলার চৈতন্যনগর গ্রামের মৃত নিয়ামত উল্লার ছেলে ইলিয়াছ আলী (৫৬), তার সহোদর আব্দুন নুর (৫১) ও জয়নাল আবেদীন (৪১), একই গ্রামের মৃত মনোহর আলীর ছেলে আশিক উদ্দিন (৫০), মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে আছকির আলী (৪৯), ওই গ্রামের ইছকন্দর আলীর ছেলে অলিদ মিয়া ওরফে ফরিদ (৪৬), একই গ্রামের মৃত নুর মিয়া আকবর মিয়া (৪৪)। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ের আরো ২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
২ বছরের দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- লুৎফুর, ময়ূর, মানুনুর রশিদ (পলাতক), কাওছার, দিলাফর, পারভেজ৭, ওয়াহিদ, দিলোয়ার, আজাদ, মুক্তার, রকিব, আঙ্গুর, জাবেদ, শফিক, মখলিছ, ফিরোজ ও ফখর উদ্দিন।
মামলার বরাত দিয়ে আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১ মে বিশ্বনাথ উপজেলার চাউলধনী হাওরে পূর্ব বিরোধের জেরে শাহজালাল হাইস্কুলের ১০ম শ্রেণির ছাত্র সুমেল আহমদকে (১৮) নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ওইদিন বিশ্বনাথের চৈতননগর গ্রামের নজির উদ্দিনের ক্ষেতের জমি থেকে জোর করে রাস্তায় মাটি তুলতে চান যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাইফুল আলম। এসময় তাকে বাধা দেন নজির উদ্দিন, চাচাতো ভাই মানিক মিয়া ও ভাতিজা দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্র সুমেল মিয়া । এতে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সাইফুল আলমের বন্দুকের গুলিতে ওইদিন সুমেল মিয়া নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন সুমেলের বাবা ও চাচাসহ ৪ জন ।
এ ঘটনায় নিহত সুমেলের চাচা বাদী হয়ে বিশ্বনাথ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতে দায়রা ৬০৬/২০২২ মূলে বিচারের জন্য স্থানান্তর করা হয়। গত ১৩ জুলাই মামলাটির যুক্তিতর্ক শেষ হয় এবং আদালত আজ বুধবার (৩০ জুলাই) এ মামলার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন । একইসঙ্গে ওই দিন আদালত ৩০ জন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। প্রায় চার বছর পর আজ বুধবার (৩০ জুলাই) এ মামলার রায় ঘোষণা করা হলো।