ডায়াল সিলেট ডেকস
জামায়াতের এই নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের জানান , আইনি ভিত্তি না দিলে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না দল । আজ বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২৩তম দিনের বিরতিতে সাংবাদিকদের এ কথাগুলো বলেন জামায়াতের এই নায়েবে আমির।
তিনি আরও বলেন, সনদের আইনি ভিত্তি না দিলে সময় অপচয় করায় সরকার ও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ মামলা করবেন।
গত ৫৪ বছরের নির্বাচনী পদ্ধতিতে বাংলাদেশে দলীয়করণ, দখল, ভুয়া নির্বাচন, রাতের নির্বাচনসহ নানা অপসংস্কৃতি গড়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করেন আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, এখন সারা বিশ্বের প্রায় ৯০টি দেশে যেভাবে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি আছে, বাংলাদেশেও তা প্রয়োজন।’
আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের আরও বলেন, ‘আমরা পরিষ্কার বলেছি, আমরা পিআর চাই এবং অধিকাংশ দলও পিআরের পক্ষে। কমিশন বিরতির পর সিদ্ধান্ত দেবে বলেছে। আমরা আশা করি, সেটি ইতিবাচক হবে।’
সংলাপে সময় ব্যয় ও কঠোর পরিশ্রমের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘আমরা এত কষ্ট করলাম, আপনারা (সাংবাদিকেরা) কাভার (খবর সংগ্রহ) করলেন, কিন্তু (সনদের) বাস্তবায়ন না হলে এসবের কোনো মূল্য থাকবে না। বাস্তবায়ন না হলে শপথ করারও কোনো মূল্য থাকে না। তাই বাস্তবায়নটাই মুখ্য।’
জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, পিআর পদ্ধতি এখন আফ্রিকা, ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়া— প্রতিটি মহাদেশেই আছে। গরিব-ধনী বা কালো-সাদার ভেদে নয়, এটি একটি বৈশ্বিক বাস্তবতা। এমনকি অনেক দেশ প্রতিবছর নতুনভাবে এই পদ্ধতি গ্রহণ করছে।
জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, ‘বিএনপি বলছে, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই। কিন্তু আমরা মনে করি, কেবল প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভর করলে হবে না। আইনি ভিত্তি না থাকলে এই চার্টার (সনদ) মূল্যহীন হয়ে পড়বে। সে জন্য আমরা কমিশন এবং সরকারের বিরুদ্ধে কমপেনসেইট (ক্ষতিপূরণ) মামলা করব।’
আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আইনি ভিত্তি ছাড়া এই চার্টার জিরো (অর্থহীন) হবে। আমরা পরিষ্কার বলেছি, আইনগত ভিত্তি ছাড়া সই করব না। এই সরকারের মেয়াদেই এটি কার্যকর করতে হবে। কাল থেকেই এটা সম্ভব। আইনি ভিত্তি না থাকলে এই চার্টারে স্বাক্ষর করার অর্থ নেই। এমন সনদে সই করার আর না করার মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না।’
জামায়াতের এই নায়েবে আমির বলেন, ‘গত ২৩ দিনে আমরা যে সংখ্যক “নোট অব ডিসেন্ট (দ্বিমত)” দেখেছি, তা আগের ২২ দিনে দেখিনি। তবু এটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অংশ। একজন “না” বলতেই পারেন। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ পক্ষে থাকলে সেটা গ্রহণযোগ্যতা পায়।’ তিনি বলেন, ‘আইনি ভিত্তি দেওয়া এখনই সম্ভব। অলটারনেটিভ (বিকল্প) আছে, উদাহরণ আছে। যাঁরা বলছেন এটা এখন দেওয়া যাবে না, তাঁরা জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন।’
সংসদের উচ্চকক্ষের বিষয়ে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ বলেন, ‘এটা শুধু আমাদের মত নয়, উচ্চকক্ষ হলো একটা “ব্যালান্স অব অথরিটি (ক্ষমতার ভারসাম্য)”। মূল আইন প্রণয়ন হবে নিম্নকক্ষে আর উচ্চকক্ষ হবে “গাইডিং ও কন্ট্রোলিং বডি”।’