ডায়াল সিলেট ডেকস
কানাইঘাটের আলোচিত জোড়া খুনের মামলার রায়ে দুই সহোদরের ফাঁসি এবং আরেক আসামির যাবজ্জীবন ও দুই আসামির ১০ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেনঃ কানাইঘাট উপজেলার বাকিবারা পৈত গ্রামের মৃত আবু শহীদের দুই ছেলে বোরহান উদ্দিন (৪৬) ও আব্দুন নুর (৫৩)। তাদের বিরুদ্ধে ৩০২/৩৪ ধারায় মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়া বোরহান উদ্দিনকে ৩২৬ ধারায় অতিরিক্ত পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে তাকে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। একইভাবে আব্দুন নুরকে ৩২৪ ধারায় আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
তাদের আরেক ভাই আব্দুস শুকুরকে (৫০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে এক বছর কারাভোগ করতে হবে তাকে।
মামলার বাকি দুই আসামিঃ মৃত সুলেমানের ছেলে ছইদুল (৫৮) এবং ভাটিপাড়া গ্রামের মৃত আবু শহীদের ছেলে সুলতান (৩৮) উভয়কে দশ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই চারজনকে ৪৪৭ ধারায় আরও এক মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
তবে মামলার ১ নম্বর আসামি আব্দুল কাশিম বিচারাধীন অবস্থায় ২০০৯ সালের ১৬ জুন মারা যাওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৩ আগস্ট) দুপুরে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৫ এর বিচারক ঝলক রায় এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী সালেহ আহমদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০০৭ সালের ২২ জুলাই বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে কানাইঘাট উপজেলার বাকিবারা পৈত গ্রামে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই দিন দুপুরে বাদী আব্দুল্লাহর স্ত্রী সাজিদা বেগমের সঙ্গে আসামিদের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে আসামিরা ঘরে ঢুকে ভাঙচুর ও হামলা চালায়। সংঘর্ষে আব্দুল্লাহর বাবা আবু বকর (৭১) ঘটনাস্থলেই নিহত হন এবং তার শ্বশুর মাওলানা মঈন উদ্দিন (৬০) চিকিৎসাধীন অবস্থায় চার দিন পর মারা যান।
পরদিন নিহত আবু বকরের ছেলে আব্দুল্লাহ কানাইঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার নম্বর: ১০(৭)‘০৭। পুলিশ তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ১৪ অক্টোবর ৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। পরে ২০০৮ সালের ৯ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করে বিচারকার্য শুরু হয়।
মামলায় ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৯ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত রায় ঘোষণা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) নজরুল ইসলাম এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুল খালিক।