ডায়ার সিলেট ডেস্কঃ-
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা স্থলবন্দর কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রস্তাবটি গত বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) তেজগাঁওয়ের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের ৪০তম বৈঠকে অনুমোদিত হয়।
স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের কেদারাকোট এলাকায় ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ থেকে বাল্লা স্থলবন্দরের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০২৩ সালের জুনে নির্মাণকাজ শেষ হয়। বন্দরের অবকাঠামো নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৪৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এর আগে ১৩ একর জমি অধিগ্রহণে খরচ হয়েছে ৭ কোটি টাকা। তবে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পাহাড়মুড়ায় সময়মতো বন্দর স্থাপন না হওয়ায় বাল্লা স্থলবন্দর এখনো স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি।
১৯৫১ সালে বাল্লা এলাকায় ৪.৩৭ একর জমিতে একটি চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছিল। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ১৯৯১ সালে এটি পুনরায় চালু হয়। চেকপোস্টটি দিয়ে কিছু পণ্য আমদানি-রপ্তানি হতো এবং বাংলাদেশ ও ভারতের পাসপোর্টধারী লোকজন যাতায়াত করত। বর্তমানে দুই দেশের সীমান্ত দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে খোয়াই নদী। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বর্ষায় নৌকায় এবং শুকনো মৌসুমে শ্রমিকদের মাথা ও কাঁধে পণ্য আনা-নেওয়া করা হতো, যা ঝুঁকিপূর্ণ এবং ব্যয়বহুল।
২০১২ সালের ১১ জুন দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ প্রতিনিধিদল কেদারাকোট এলাকায় পরিদর্শন করেন। পরবর্তীতে আরও কয়েক দফা পরিদর্শন করা হয়। নদী পারাপারে কোনো সমস্যা না থাকার কারণে উভয় দেশ স্থলবন্দর স্থাপনের বিষয়ে একমত হন। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ বাংলাদেশ সরকার বাল্লাকে স্থলবন্দর হিসেবে ঘোষণা করে।
স্থানীয়রা আশঙ্কা করছেন, বাল্লা স্থলবন্দর কার্যক্রম স্থগিত থাকায় এটি অরক্ষিত হয়ে পড়বে। চুনারুঘাট উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, “সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে বন্দরের অবকাঠামো ঝুঁকিতে পড়তে পারে। এখনই রক্ষণাবেক্ষণের উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।”
ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, “আমরা বহুদিন অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেছি স্থলবন্দর চালু হওয়ার জন্য। কিন্তু কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় হতাশ। খোয়াই নদী দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়সাপেক্ষ।”
চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি সদ্য যোগদান করেছি। বাল্লা স্থলবন্দর যাতে অরক্ষিত না থাকে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”