ডায়াল সিলেট ডেস্ক:-
সিলেটের পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদকে হত্যা মামলার প্রধান আসামি, পুলিশের বহিষ্কার হওয়া উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া । খবর মিলছে না তার । জামিন পেয়েই তিনি পালিয়েছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর ওই হত্যাকাণ্ডের পর ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন আকবর। পরে তাকে সীমান্ত এলাকা থেকে কৌশলে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তবে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে জামিন পেয়ে ১১ আগস্ট সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ছাড়া পান আকবর। এ নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনা শুরু হলে ১৪ আগস্ট হাইকোর্টের চেম্বার জজ আদালত তার জামিন স্থগিত করে ১০ দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সিলেট মহানগর জজ আদালতে বিচারাধীন এ মামলার ধার্য তারিখেও আকবর আদালতে হাজির হননি। বিচারক অনুপস্থিত থাকার কারণে ওইদিন আদালতে মামলার শুনানি হয়নি। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য্য করা হয়েছে।
সিলেট জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁশলী (পিপি) আশিক উদ্দিন জানান, যেহেতু উচ্চ আদালতের কথা মতো আকবর নিম্ন আদালতে আসেনি, সুতরাং এখন তিনি পলাতক।
আকবরের জামিনের খবর জানাজানির পরই রাহয়ানের মা সালমা বেগম আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, আকবর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে পারেন।
রায়হান হত্যা মামলার আইনজীবী ব্যারিস্টার ফজল চৌধুরী জানান, হাইকোর্টের চেম্বার জজ আদালত সাবেক এসআই আকবরের জামিন বাতিল করে ১০ দিনের মধ্যে নিম্নআদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু আত্মসমর্পণের সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি আদালতে এসে হাজির হননি। ফলে তিনি এখন পলাতক।
এসআই আকবর ছাড়া এ মামলায় আরও ৩ আসামি আগে জামিন পেয়েছিলেন। এর মধ্যে সাবেক এসআই হাসান উদ্দিন শুরু থেকেই পলাতক। বন্দরবাজার ফাঁড়ির সাবেক কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশীদ জামিন পাওয়ার পর এক তারিখ এসে আদালতে হাজিরা দিয়েছিলেন। বর্তমানে কারান্তরীণ রয়েছে মামলার অপর আসামি সাবেক এএসআই আশেক এলাহী। এ ছাড়া মামলার ৬ নম্বর আসামি কোম্পানীগঞ্জের সাংবাদিক আব্দুল্লাহ আল নোমান ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তিনি ফ্রান্সে বসবাস করছেন বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনেই রায়হানের মৃত্যু হয়েছিল। এ ঘটনায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইনে রায়হানের স্ত্রীর করা মামলার পর মহানগর পুলিশের একটি অনুসন্ধান কমিটি তদন্ত করে। তারা ফাঁড়িতে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের সত্যতা পায়। ফাঁড়ির ইনচার্জের দায়িত্বে থাকা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ চারজনকে ১২ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করা হয়। আকবরকে ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হয়।