ডায়াল সিলেট ডেস্ক:-
হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নছরতপুরে অবস্থিত ১১ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ থাকায় গ্রামীণ জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। সারাদিনে একাধিকবার লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এনার্জিপ্যাক পাওয়ার ভেঞ্চার লিমিটেড ২০০৯ সালে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মালিকানাধীন দুই একর জমিতে কেন্দ্রটি স্থাপন করে। চালু হওয়ার পর থেকে হবিগঞ্জ শহরসহ আশপাশের এলাকায় স্থিতিশীল বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করে কেন্দ্রটি। শিল্পকারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সচল রাখতে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় কেন্দ্রটির উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হবিগঞ্জ সদর, শায়েস্তাগঞ্জ, চুনারুঘাটসহ আশপাশের এলাকায় বিদ্যুৎসংকট তীব্র আকার ধারণ করে।
কেন্দ্রের আইটি শাখার কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, ‘চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় এপ্রিলে কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। ভবন ও যন্ত্রপাতি বিক্রির প্রক্রিয়াও চলছে।’
বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হওয়ার পর থেকে গ্রাহকরা সারাদিনে বারবার লোডশেডিংয়ের শিকার হচ্ছেন। শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার ব্যবসায়ী মিজান মিয়া বলেন, ‘লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসা চালানোই কঠিন হয়ে গেছে। দোকানে ফ্রিজ চলে না, লাইট বন্ধ থাকে, বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে।’
শিক্ষার্থী কামরুল হোসেন বলেন, ‘রাতে পড়াশোনা করতে পারি না। বিদ্যুৎ থাকলে পড়ার পরিবেশ থাকে, এখন এত বেশি লোডশেডিং হয় যে ঘরে থাকাই দায়।’
চুনারুঘাটের কৃষক মধু মিয়া জানান, সেচ দিতে না পারায় ধান ও চালের মৌসুমে ক্ষতির মুখে পড়ছেন কৃষকেরা। তাঁর ভাষায়, ‘বিদ্যুৎ গেলে পাম্প চলে না, জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকের অনেক ক্ষতি হচ্ছে।’
বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এনার্জিপ্যাকের উৎপাদন বন্ধ থাকায় সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। নতুন উৎস থেকে বিদ্যুৎ আনার চেষ্টা চলছে, তবে কিছুটা সময় লাগবে।’
স্থানীয়দের মতে, বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পুনরায় চালু করা গেলে লোডশেডিং অনেকাংশে কমে যাবে এবং গ্রামীণ জনজীবনে স্বস্তি ফিরবে। তারা সরকারের কাছে দ্রুত কেন্দ্রটি পুনরায় চালুর দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে হবিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জিল্লুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর সাড়া পাওয়া যায়নি।

