ডায়ালসিলেট ডেস্ক::

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের ইছাছড়া খাসিয়া পুঞ্জিতে সন্ত্রাসী হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে ও হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও খাসি স্টুডেন্ট ইউনিয়ন, সিলেটের উদ্যোগে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করা হয়েছে। বুধবার বিকেল চারটায় সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারের সামনের রাস্তায় ঘন্টাব্যাপি চলা মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালে এতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটের সহসভাপতি, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নাজিয়া চৌধুরী। শুরুতেই মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল করিম কিম। পুরো কর্মসূচি সঞ্চালন করেন বাপা সিলেটের যুগ্ম সম্পাদক, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ছামির মাহমুদ।

মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. জায়েদা শারমীন সাথী, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকা রনি, ওয়াকার্স পার্টি সিলেটের সভাপতি সিকন্দর আলী, সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি মিশফাক আহমদ চৌধুরী মিশু, ভুমিসন্তান বাংলাদেশের সমন্বয়ক আশরাফুল কবীর, ইমজা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক সজল ছত্রী, পাত্র সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি গৌরাঙ্গ পাত্র, সেইভ দ্যা হেরিটেজ এন্ড এনভারমেন্টের সভাপতি, নদী সংগঠক আবদুল হাই আল হাদী, বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ সিলেটের সভাপতি প্রণব জ্যোতি পাল, ওরাঁও জনগোষ্ঠির পক্ষে সারথী ওঁরাও, ট্রাইবাল অ্যাসোসিয়েশন সিলেটের সভাপতি জোসেফ হাউই, খাসি স্টুডেন্ট ইউনিয়ন সিলেটের সভাপতি জ্যাক টাংসং ও সংগঠক বেøসমি বাড়ে, সামাজিক সংগঠন ঊষার পরিচালক নিগাত সাদিয়া, দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরার সংগঠক নিরঞ্জন সরকার এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেটের সভাপতি সঞ্জয় দাস প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আদিবাসী ও খাসিয়া জনগোষ্ঠি যে বন বা পাহাড়ে থাকেন সেখানকার পরিবেশ-প্রকৃতি ভালো থাকে। তারা নিজের সন্তানের মতো ভালোবেসে বনকে রক্ষা করেন। কিন্তু কিছু দখলদার সন্ত্রাসী ভূমিখোকোচক্র বনকে ধ্বংস করতে আদিবাসী ও খাসিয়া জনগোষ্ঠির উপর হামলা ও ভয়ভীতি দেখিয়ে জায়গাজমি দখল করে প্রায়ই। এরই ধারাবাহিকত্য়া গত ৯ নভেম্বর মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ইছাছড়া খাসিয়াপুঞ্জিতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বক্তারা আরও বলেন, ইছাছড়া খাসিয়াপুঞ্জিতে খাসিয়াদের জমি সন্ত্রাসী রফিক মিয়ার  কাছ থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসন খাসিয়াদের বুঝিয়ে দেয়ার কয়েক ঘন্টা পরেই রফিক মিয়া ইছাছড়া পুঞ্জিতে সন্ত্রাসী হামলা করে। খাসিয়াপুঞ্জির বাড়িঘর ও গির্জাতে ভাংচুর চালায়। এই অবস্থায় আদিবাসী খাসিয়ারা জীবন ও সম্পদ হারানোর ভয়ে আতঙ্কগ্রস্ত। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হামলাকারী রফিক মিয়াসহ অন্য সন্ত্রাসীদের দ্রæত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যতায় সচেতন নাগরিকদের সাথে নিয়ে খাসিয়াদের রক্ষায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

মূল বক্তব্যে মৌলবীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের ইছাছড়া পুঞ্জিতে সা¤প্রতিক হামলার ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপার কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য ও সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, সিলেটে আদিবাসীদের ভূমি দখলের জন্য একটি মহল সবসময় ফন্দি ফিকিরে থাকে। ইছাছড়া পুঞ্জির জায়গা দখলকারী রফিক মিয়াও তেমন একজন। কিন্তু সে এতো বেপরোয়া যে প্রশাসনকে সে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে কুলাউড়ার এই পুঞ্জিতে যে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ পরিচালনা করেছে, যা ধৃষ্টতামূলক। অবিলম্বে রফিক ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেফতার করতে হবে। তিনি পুঞ্জির খাসিয়াদের নিরাপত্তা প্রদান ও দখলকৃত জায়গা পুনরায় খাসিয়াদের বুঝিয়ে দেয়ার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, গত ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ইছাছড়া খাসিয়াপুঞ্জিতে হামলা-ভাঙচুর চালায় স্থানীয় রফিক মিয়া নামের নেতৃত্বে একটি ভূমিখোকোচক্র। এর আগে সকালের দিকে প্রশাসনের লোকজন অবৈধভাবে দখল করা পুঞ্জির একটি পরিবারের পান চাষের পাঁচ একর জমি রফিকের কাছ থেকে উদ্ধার করে দেন। ইছাছড়াপুঞ্জিতে ৫২টি খাসিয়া পরিবার থাকে। সেখানকার বাসিন্দা জেসপার আমলেংরংয়ের প্রায় পাঁচ একর জায়গায় একটি পানের জুম রয়েছে।

এ/

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *