ডায়ালসিলেট ডেস্কঃঃ ১৯৬৫ সালে সিলেট পাল্প এন্ড পেপার মিলের মণ্ড তৈরির কাঁচামাল চাষের জন্য ৫৬ হাজার একর কৃষি জমি বরাদ্ধ দেয় বনবিভাগ। চুক্তি অনুযায়ী, এই জমি ভিন্ন কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না এবং পেপার মিল বন্ধ হলে বা সরকারি মালিকানা বদল হলে বন বিভাগকে ফিরিয়ে দিতে হবে। অব্যাহত লোকসানের মুখে ২০০৬ সালে এপ্রিলে পেপার মিলটি বেসরকারিখাতে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তবে আজ পর্যন্ত চাষের জন্য বরাদ্ধ দেওয়া জমি বুঝে পায়নি বন বিভাগ।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিক্রির পর পেপার মিল কর্তৃপক্ষ কাগজেকলমে জমি বন বিভাগকে বুঝিয়ে দিয়ে যান। তবে সেসময় সরেজমিনে জরিপ করে জমি বুঝে নেননি বনবিভাগের তৎকালীন কর্মকর্তারা। পরে সরেজমিনে গিয়ে এসব জমি আর পায়নি বনবিভাগ।

স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রভাবশালী গোষ্ঠি ৫৬ হাজার একর জমির পুরোটাই দখল করে নেয়। এরপর বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে সাড়ে ৩ হাজার একরের মতো জমি উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বনবিভাগ। ফলে এখনও বেহাত রয়েছে প্রায় ৫৩ হাজার একর জমি। এসব জমিতে দখল করে অনেকে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে ফেলায় বেহাত হওয়া জমির বেশিরভাগ আর উদ্ধার করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বন কর্মকর্তারা। ফলে অনেকেটাই গচ্ছা যাচ্ছে বনের এই বিপুল সংখ্যক জমি।

এ ব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম (ডিএফও) সাজ্জাদ হোসেন বলেন, পেপার মিলকে বরাদ্ধ দেওয়া জমির বেশিরভাগ মিল চালু থাকাকালেই বেদখল হয়ে যায়। তাদের অব্যবস্থাপনার কারণে এমনটি হয়েছে। আমরা সাড়ে ৩ হাজার একরের মতো উদ্ধার করেছি। আরও ১৪শ’ হেক্টর উদ্ধারের জন্য মন্ত্রণালয়ে মূর্তা বাগান করার একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে। এই প্রকল্প পাশ হলে পেপার মিলকে বরাদ্ধ দেওয়া জমি উদ্ধার করে সেসব জমিতে মূর্তা চাষ করা হবে।

তিনি বলেন, কেবল উদ্ধার করলেই তো হয় না। উদ্ধারের পর তা আবার বেদখল হয় যায়। সার্বক্ষণিক পাহারা দেওয়ার মতো লোকবল আমাদের নেই। তাই জমি উদ্ধারের পরপরই সেখানে মুর্তা বাগান করা হবে।

তবে বেদখল হয়ে যাওয়া বেশিরভাগ জমিই উদ্ধার করা অনেকটা অসম্ভব জানিয়ে এই বন কর্মকর্তা বলেন, জমিতে অনেক স্থাপনা উঠে গেছে। কয়েকদফা বেচাকেনাও হয়েছে। এখন এগুলো উদ্ধার করা খুব কঠিন। তবে স্থাপনা ছাড়া যেসব জমি আছে তা উদ্ধার করা সম্ভব।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *