ডায়ালসিলেট ডেস্ক ::

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

তরুণ লেখক আব্দুল মোতাকাব্বির চৌধুরী মাহিরের গ্রন্থ ‘পিকিং আপ দ্য পিসেস’ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, ‘বর্তমান প্রজন্ম বেশি সময় ইন্টারনেটে ডুবে থাকায় বই পড়ার অভ্যাস অনেকটা হারিয়ে গেছে। এ রকম সময়ে সদ্য কলেজে পা রাখা এক শিক্ষার্থীর ইংরেজি ভাষায় বই লিখে ফেলা আমাদের নতুন করে আশাবাদি করে।’ এটি নতুন প্রজন্মের মাঝে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে মন্তব্য করে এসময় তিনি বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের জানার আক্ষাঙ্খা পড়ার আগ্রহ জাগ্রত হবে আমার বিশ্বাস।’

শনিবার সিলেটের দরগা গেইটস্থ সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘পিকিং আপ দ্য পিসেস’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে নতুন কিছু শেখার বা জানার আকাক্সক্ষা কম। তারা বেশিরভাগ সময় ইন্টারনেটে ডুবে থাকেন। বই পড়ার অভ্যেস অনেকটা হারিয়েই গেছে বলা যায়। এমন পরিস্থিতে সদ্য কলেজে পা রাখা একজন শিক্ষার্থীর ইংরেজি ভাষায় বই লিখে ফেলা আমাদের দারুণভাবে আশাবাদি করে।’ এসময় তিনি তরুণ প্রজন্মকে বেশি করে বই পড়ার তাগাদ দিয়ে বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের মধ্যে যেন জানার আগ্রহ তৈরি হয়, নিজেদের সেরাটা দিয়ে নতুন কিছু করার, শেখার এবং সৃষ্টির আকাক্সক্ষা তৈরি হয় সেদিকে নজর দিতে হবে।’ বেশি করে বই পড়লেই তা সম্ভব বলে তিনি এসময় মন্তব্য করেন।

লেখক ও কলামিস্ট কর্নেল (অব.) আলি আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক রেজিস্ট্রার জামিল আহমেদ চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামাল আহমেদ চৌধুরী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহীন, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বদরুল ইসলাম সুয়েব, ইউরো কিডস স্কুলের অধ্যক্ষ রুশিনা চৌধুরী ও সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স’র সভাপতি আফজাল রশীদ চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামিল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘এটি আমার কাছে অবিশ্বাস্য লেগেছে, মাত্র ১৮ বছর বয়সী একজন মানুষ ইংরেজিতে বই লিখেছেন। তাও আবার সাবলীল ভাষার বইটি।’

ড. কামাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘সাহিত্য মনের ও সমাজের দর্পণ। মনের মাধুরি মিশিয়ে বাস্তব চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলাটাই সাহিত্য। এই বইটি বিশেষভাবে আমার নজর কেড়েছে, কারণ ইংরেজি ভাষার বইটির লেখক একজন কলেজ শিক্ষার্থী। আমাদের দেশে অনেক সাহিত্যিক রয়েছেন যারা ইংরেজি সাহিত্যের শিক্ষার্থী, কিন্তু লিখেন বাংলায়। এই বইটির লেখক ভবিষ্যতে সাহিত্য আরও ইংরেজি ভাষার বই উপহার দেবেন বলে আমি প্রত্যাশা করি।’

অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘বর্তমান প্রজন্ম ইংরেজি ভাষায় পিছিয়ে আছে। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের পর থেকে আমরা ইংরেজি বিমুখ হয়ে পড়েছি। অতীতে সিলেট শহরেও অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ইংরেজিতে লেখা সাইনবোর্ড ভাঙা হত। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বেলায়ও এই ঘটনা ঘটেছে। ফলে সে সময় ইংরেজি বিমুখতায় আমরা অনেকটাই পিয়িয়ে পড়েছি।’ তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের মধ্যে এই উপলব্ধি এসেছে, ইংরেজি ভাষা শেখাটাও জরুরী। তাই আমাদের মাঝে তাড়াহুড়োও চলে এসেছে। কিন্তু ঐ যে বিমুখতার কারণে আমরা অনেকটা পিছিয়ে গেছি, সেখান থেকে ফিরে আসতে অনেক সময় লাগবে।’

সভাপতির বক্তব্যে কর্নেল আলি বলেন, ‘একটি ছেলে বাংলাদেশে বসে ইংরেজি স্ট্যান্ডার্ডের ভাষায় একটি বই লিখেছে। বইয়ে যে শহরগুলোর কথা উল্লেখ রয়েছে সেগুলোতে সে কখনও যায়নি। কিন্তু তার কল্পনাশক্তির জোরে সে জায়গাগুলোর বর্ণনা সে দারুণভাবে বইয়ে ফুটিয়ে তুলেছে। এজন্য বইটি আমাকে অভিভূত করেছে।’
অ্যাডভোকেট আব্দুল ওয়াসে চৌধুরী জুবেরের সঞ্চালনায় প্রকাশনা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সহ সভাপতি দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কলামিস্ট সালেহ আহমেদ খসরু, স্কলার্সহোম সিলেটের বাংলা শিক্ষক মিস সালমা, বইয়ের লেখক আব্দুল মোতাকাব্বির চৌধুরী মাহির।

বক্তারা বলেন, সদ্য কৈশোর পেরুনো একজন মানুষ যখন মাতৃভাষার বাইরে গিয়ে ভিন্ন ভাষার একটি বই লিখে ফেলতে পারেন, নিসন্দেহে বলতে হবে তার মাঝে সাহিত্যের বিশাল এক সম্ভার লুকিয়ে আছে। তবে মাতৃভাষাকে যেভাবে লালন ও ধারণ করা যায়, অন্য ভাষা ঠিক সেভাবে ধারণ করা যায় না। তাই ইংরেজির পাশাপাশি বাংলা সাহিত্য চর্চাটাও জরুরী।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *