আন্তর্জাতিক ডেস্ক::তুরস্কে সরকারের সমালোচনা করার কারণে সাবেক ১০ এডমিরালকে সোমবার আটক করেছে কর্তৃপক্ষ। সরকারের বিরুদ্ধে ১০৪ জন সাবেক এডমিরালের দেয়া এক খোলা চিঠিতে এই সমালোচনা করা হয়েছে। ওই চিঠির কড়া নিন্দা করেছে প্রেসিডেন্ট রিসেফ তায়্যিপ এরদোগানের অফিস। তাতে বলা হয়েছে, এডমিরালদের এই চিঠি তুরস্কের অতীত অভ্যুত্থানের কথাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা। সরকারি বার্তা সংস্থা আনাদোলু বলেছে, অবসরপ্রাপ্ত এসব এডমিরালকে তাদের খোলা চিঠির বিষয়ে তদন্তের জন্য আটক করা হয়েছে। রাজধানী আঙ্কারায় এই তদন্ত করছেন প্রধান প্রসিকিউটর। আঙ্কারা পুলিশের কাছে তিন দিনের মধ্যে অন্য চারজন সন্দেহভাজনকে রিপোর্ট করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রসিকিউটররা।
তাদের বয়স বিবেচনায় নিয়ে আটক করা হয়নি। এনটিভি রিপোর্ট করেছে যে, সাবেক এসব সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাংবিধানিক নির্দেশ থেকে মুক্তি পেতে শক্তি ও সহিংসতার আশ্রয় নিয়েছেন বলে অভিযোগ আছে।
আনাদোলুর রিপোর্টে বলা হয়েছে যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছেন সেম গার্ডেনিজ। তুরস্কের বহুল বিতর্কিত ‘ব্লু হোমল্যান্ড’-এর সঙ্গে তার নাম জড়িয়ে আছে। এর অধীনে তুরস্ক ভূমধ্যসাগর, আজিয়ান সাগরের বিশাল অংশ এবং এর নিচে যে জ্বালানি সম্পদ মজুদ আছে- তা নিজেদের বলে দাবি করে। এ নিয়ে গ্রিস এবং সাইপ্রাসের সঙ্গে তাদের বিরোধ আছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, সন্দেজভাজনদেরকে আঙ্কারা, ইস্তাম্বুল এবং কোকাইলিতে তাদের বাড়িতে আটক রাখা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন প্রধান প্রসিকিউটর। ধারণা করা হচ্ছে, সন্দেহভাজন ১৪ জন ওই খোলাচিঠি লেখার বিষয়টি সংগঠিত করেছেন। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এবং সাংবিধানিক নির্দেশের বিরুদ্ধে অপরাধ সংগঠনের জন্য চুক্তি করার অভিযোগে রোববার সাবেক শীর্ষ নৌ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন প্রসিকিউটররা। উল্লেখ্য, গত মাসে পানামা খালের মতো করে ইস্তাম্বুলে একটি শিপিং ক্যানেল নির্মাণের পরিকল্পনা করে আঙ্কারা। এতে ১৯৩৬ সালে মনট্রেক্স কনভেনশন নিয়ে উন্মুক্ত বিতর্ক করা হয়। প্রেসিডেন্ট এরদোগান তার সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী এই প্রকল্পের নাম দিয়েছেন ‘ক্যানাল ইস্তাম্বুল’। একই সঙ্গে তিনি এ প্রকল্পকে ক্রেজি প্রজেক্ট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
এর জবাবে শনিবার রাতে একটি চিঠি লেখেন ওই এডমিরালরা। তাতে তারা মনট্রেক্স চুক্তিকে বিতর্কে দেয়ার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তারা এটাকে এমন একটি চুক্তি হিসেবে আখ্যায়িত করেন, যা তুরস্কের স্বার্থের জন্য উত্তম সুরক্ষা। মন্ট্রেক্স কনভেনশন চুক্তিতে শান্তিপূর্ণ ও যুদ্ধ উভয় সময়েই বেসামরিক নৌযানকে বোফেরাস এবং ডারড্যানেলস প্রণালী দিয়ে অবাধে চলাচলে নিশ্চয়তা আছে। কৃষ্ণ সাগরীয় রাষ্ট্র নয় এমন দেশগুলোর সামরিক নৌযানও এই প্রণালী দিয়ে চলাচলের নিয়ম আছে।