ডায়ালসিলেট ডেস্ক ::

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

আগুনে পুড়ে গিয়ে নিজের হারালেন মহাখালীর সাততলা বস্তির বাসিন্দা। নিজের পুন্জি, জীবনে অর্জিত সম্পদ এমনকি হারিয়েছেন পোষা প্রাণিদের।

সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শহিদুল ইসলাম নিজের ঘরে এসে দেখেন, সব পুড়ে গেছে। ঘরে ছিল স্ত্রীর কানের দুল, হাতের বালা। পোড়া ঘরের জিনিসপত্রের ভেতর সেগুলো খুঁজছিলেন। হঠাৎ করে তাঁর চোখ যায় পোষা পাখির খাঁচার দিকে। আগুন লাগলে নিজেরা বের হয়ে গেলেও পাখির কথা ভুলে গিয়েছিলেন। শহিদুল দেখতে পান, পাখি দুটি আগুনে পুড়ে গেছে।
সালমা খাতুন নামের এক নারী আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমাদের সবকিছু তো আগুনে পুড়ে গেছে। অবলা পাখি দুটিও মারা গেল।’

কেবল শহিদুল ইসলাম নয়, তাঁর মতো সাততলা বস্তির আরও বহু মানুষ তিন ঘণ্টার ব্যবধানে পথে বসে গেছেন। মহাখালীর সাততলা বস্তিতে আগুন লাগে আজ সোমবার ভোররাত ৪টায়। ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে সাতটার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে কেউ মারা না গেলেও পুড়েছে কয়েক শ ঘর। ভোররাতে আগুন থেকে বাঁচতে যে যেভাবে পেরেছেন ঘর ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। আবার যখন আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে, তখন ছুটে আসেন নিজের ঘরটি কী অবস্থায় আছে তা দেখতে। আগুনে এতটাই পুড়েছে যে অনেকে তাঁর নিজের ঘরও চিনতে পারছিলেন না। সেখানে ছিল শুধু আহাজারি।

রিকশাচালক রফিকুল ইসলামের ভাড়া করা ঘর। আগুন যখন দাউ দাউ করে জ্বলছিল, তখন চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে পড়েন রফিকুল। একমুহূর্ত দেরি না করে দুই ছেলে সুমন আর সজীব এবং স্ত্রীকে নিয়ে দৌড়ে চলে যান রাস্তায়। ঘণ্টা তিনেক পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে ঘরের সামনে আসেন রফিকুল। ততক্ষণে সব পুড়ে ছাই।

দিনের পর দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের টাকায় সাজানো ঘর হারিয়ে রফিকুল এখন নির্বাক। কোথায় থাকবেন, সন্তানদের মুখে কীভাবে খাবার তুলে দেবেন, এমন সব চিন্তা তাঁকে ঘিরে ধরেছে। ঘরে নগদ পাঁচ হাজার টাকা ছিল। তা-ও পুড়ে ছাই। হাতে একটি পয়সা না থাকায় কিছুই ভাবতে পারছেন না রংপুরের রফিকুল।

রফিকুল বলেন, ‘আমার ঘরের একটা জিনিসও নিতে পারিনি। গায়ে একটা গেঞ্জি ছিল। সে অবস্থায় বেরিয়ে গেছি। আমি রিসকা চালাই। রিসকা চালিয়ে যা জিনিস কিনছিলাম, সব পোড়া শেষ।’

ডিএস/পিএম

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *