সিলেটে ভোটগ্রহণ স্থগিত : শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায়

প্রকাশিত: ১১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৫, ২০২১

সিলেটে ভোটগ্রহণ স্থগিত : শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যতালিকায়

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: সিলেট-৩ আসনের উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা সংক্রান্ত হাইকোর্টের নির্দেশনা নিয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আজ। এ বিষয়ে শুনানির জন্য হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় এসেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

এর আগে গত ২৬ জুলাই সিলেট-৩ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে আদালত বলেছিলেন, ‘যেহেতু সরকার ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিধিনিষেধ দিয়েছে, আমরা আপাতত ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেখি। তারপর পরিস্থিতি বিবেচনা নিয়ে ভোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’ তারই ধারাবাহিকতায় রিটটি কার্যতালিকায় রয়েছে।

ওই দিন এ বিষয়ে করা রিটের শুনানি নিয়েই ভোটগ্রহণ স্থগিত করে আদেশ দেন হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল একক বেঞ্চ।

আদালতে ওই দিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

গত ২৬ জুলাই সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ছয় আইনজীবী ও সাতজন ভোটারসহ ১৩ জনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির ভোটগ্রহণ স্থগিত চেয়ে রিট দায়ের করেন। রিটে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি), সিলেট উপনির্বাচনের চারজন সংসদ সদস্য প্রার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

এর আগের দিন এই নির্বাচনে ভোটগ্রহণ স্থগিত চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয় সংশ্লিষ্টদের প্রতি। গত ২৫ জুলাই ই-মেইলের মাধ্যমে পাঁচ আইনজীবীর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির নোটিশটি পাঠান।

যে পাঁচ আইনজীবীর পক্ষ থেকে রিটটি করা হয়েছে তারা হলেন- অ্যাডভোকেট মো. মুজাহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আল-রেজা মো. আমির, অ্যাডভোকেট মো. জোবায়দুর রহমান, অ্যাডভোকেট মো. জহিরুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট মুস্তাফিজুর রহমান।

রিটে বলা হয়, ‘২০২১ সালের ১১ মার্চ সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর মৃত্যুতে সিলেট-৩ আসনটি শূন্য হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৫ মার্চ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ১১ মার্চ আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে ২৯ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান ১২৩-এর দফা ৪ অনুযায়ী উক্ত শূন্যপদ পূরণে ৮ জুন ২০২১ তারিখের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রহিয়াছে।’

‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান ১২৩-এর দফা ৪-এর শর্তানুসারে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মতে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণজনিত দৈবদুর্বিপাকের কারণে নির্ধারিত মেয়াদ অর্থাৎ শূন্য হইবার নব্বই দিনের মধ্যে উল্লিখিত শূন্য আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না। এমতাবস্থায় সিলেট-৩ শূন্য আসনের নির্বাচন নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে অনুষ্ঠান সম্ভব না হওয়ায় পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হইবে। তাই গত ২ জুন নির্বাচন কমিশন এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ১৪ জুলাই ভোটগ্রহণের দিন ধার্য করে। তবে গত ১৫ জুন নির্বাচন কমিশন ভোটগ্রহণের তারিখ পরিবর্তন করে ২৮ জুলাই নির্ধারণ করে।’

রিটে আরও বলা হয়, ‘সংবিধানের ১২৩-এর দফা ৪-এর শর্তানুসারে সিলেট উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত। তাই ২৮ জুলাইয়ে অনুষ্ঠিতব্য উপনির্বাচন স্থগিত করা যাবে না- এমন বক্তব্য আইনের সঠিক ব্যাখ্যা নয়। এক্ষেত্রে ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা নেই।’

‘তাই নির্বাচন কমিশনের উচিত চলমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি বিবেচনায় এবং লকডাউনের সময়ে নির্বাচন আয়োজন না করে ৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অন্য যেকোনো সময় ভোটগ্রহণের দিন নির্ধারণ করা। কারণ এই সময়ে তিন লাখ ৫২ হাজার ভোটারের এই নির্বাচন অনুষ্ঠান সরকারের বর্তমান লকডাউন নীতির বিরোধী। তাই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির বিবেচনায় আগামী ২৮ জুলাই অনুষ্ঠিতব্য সিলেট-৩ আসনের ভোটগ্রহণ স্থগিত করার জন্য উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হলাম।’

ডায়ালসিলেট/এম/এ/

0Shares