দিরাইয়ে ট্রিপল মার্ডার মামলায় ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে

প্রকাশিত: ৫:৪১ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২১

দিরাইয়ে ট্রিপল মার্ডার মামলায় ছাত্রলীগ নেতা কারাগারে

ডায়ালসিলেট ডেস্ক;:সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে আলোচিত ট্রিপল মার্ডার মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামী দিরাই উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল মিয়া ও তার ভাই তাজবির মিয়ার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (দিরাই) সুনামগঞ্জ-এর বিচারক রাকিব নূর এ আদেশ দেন।

আসামি পক্ষের আইনজীবী হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী জানান, ট্রিপল মার্ডার মামলার আসামি উজ্জ্বল মিয়া ও তাজবির মিয়া স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেছিলো। আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
জানা যায়, গত মঙ্গলবার দিরাই পৌর শহরের দাউদপুর গ্রামে হামলায় আহত হন দৈনিক কালের কন্ঠের দিরাই শাল্লা প্রতিনিধি আবু হানিফ চৌধুরী। ওই ঘটনায় আবু হানিফ বাদী হয়ে উজ্জ্বল মিয়া, তাজবির মিয়া সহ মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে দিরাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এরআগে ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলঞ্জ ইউনিয়নের জারলিয়া ঘোড়ামারা সাতপাকিয়া জলমহালের মালিকানা নিয়ে বিরোধে যুবলীগ নেতা একরার হোসেনের সাথে দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, তৎকালীন পৌরসভার মেয়র মোশাররফ মিয়া এবং উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদারের গ্রুপের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে একরার হোসেনের পক্ষের উজ্জ্বল, তাজুল ও শাহারুল নামে ৩ গ্রামবাসী নিহত হয়। ওই ঘটনায় একরার হোসেন বাদি হয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা থাকার পরও সুরঞ্জিত বলয়ের শীর্ষ এসব নেতারা প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যেই ঘোরাফেরা করতেন। ওই ঘটনার কিছুদিন পর সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মৃত্যুতে পটপরিবর্তন ও মার্চের উপ-নির্বাচন কে সামনে রেখে হাইকোর্ট থেকে মামলার আসামী দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন পৌর মেয়র মোশাররফ মিয়া, উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল মিয়া ও তাজবির মিয়া নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের শর্তে ৬ সপ্তাহের অস্থায়ী জামিন নেন। আসামিগণ রাজনৈতিক প্রভাবে হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে নিম্ন আদালতে আর আত্মসমর্পণ করেননি।
তারপর পুলিশ, সিআইডি ও পরবর্তীতে পিবিআই উপরোল্লিখিত আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে চার্জশিট ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে দাখিল করেন।
বাদির আপত্তি সত্ত্বেও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট তাদের অব্যাহতি দিয়ে চার্জশিট আমলে নিলে উক্ত আদেশের বিরুদ্ধে মামলার বাদি একরার হোসেন ফের নারাজি দিয়ে দায়রা জজে রিভিশন আবেদন করেন।
বাদির আবেদন আমলে নিয়ে আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের ১২ ফ্রেব্রুয়ারি ২০১৯ ইং তারিখের আদেশ রদ ও রহিত করে বিগত ১০ আগস্ট ২০২০ ইং তারিখে দায়রা জজ এর বিচারক ওয়াহিদুজ্জামান শিকদার ওই ৫ আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে মামলাটি অধিকতর তদন্ত করতে র‍্যাব’কে দায়িত্ব দিয়ে আদেশ প্রদান করেন।

ফের ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি দিরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র মোশাররফ মিয়া বিগত পৌর নির্বাচনের আগে উচ্চ আদালত থেকে পুনরায় জামিন নেন। মামলার অন্য পরোয়ানা ভুক্ত আসামী দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার, মোশাররফ পুত্রদ্বয় দিরাই উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল মিয়া ও তাজবির মিয়া দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে আগের মতোই প্রকাশ্যে চলাফেরা করতেন৷ আসামীদের মধ্যে প্রদীপ রায় ও হাফিজুর রহমান তালুকদারকে সরকারি ও দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে অংশ নিতেও দেখা যায়।

ডায়ালসিলেট এম/

0Shares