নিজস্ব প্রতিবেদক :: ইতিহাস, ইতিহ্যের ধারক-বাহক পুণ্যভূমি সিলেটে অরুচিকর স্থাপনা নির্মাণ করে নগরবাসীর সাথে তামাশা করছে সিসিক। সৌন্দর্যবর্ধনের নামে নগরীর মোড়ে মোড়ে হাস্যকর স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। নির্মিত ও নির্মাণাধীন এসব স্থাপনা নিয়ে নগরবাসী বিব্রত। এসব স্থাপনা নিয়ে বিভিন্ন সময় আলোচনা-সমালোচনা হলেও তাতে কর্ণপাত করেননি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সর্বশেষ আম্বরখানা মোড়ের স্থাপনাকে ঘিরে আবারও আলোচনায় এসেছে ’অপরিকল্পিত স্থাপনা’ নির্মাণের বিষয়টি। সদ্য নির্মাণ করা এই স্থাপনাকে অনেকেই তাচ্ছিল্য করে ‘ঝুনঝুনি চত্বর’ বলে অভিহিত করেছেন।
Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!তবে এই স্থাপনা নিয়ে কোনো কিছুই জানা নেই সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) প্রধান নির্বাহী বিধায়ক রায় চৌধুরীর। তিনি সিসিকের প্রধান নির্বাহী নুর আজিজুর রহমান বা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য বলেন। আর এই দুজনকে কয়েকবার মুঠোফোনে কল করলেও তারা কল রিসিভ করেননি।
এদিকে, নতুন এই চত্বর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। অনেকেই এই চত্বরকে ঘিরে নানা ধরণের ব্যঙ্গ করছেন। কেউ কেউ এর নাম দিয়েছেন ‘ঝুনঝুনি চত্বর’। এই সমালোচনায় যুক্ত হয়েছেন সিসিকের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। তিনিও স্থাপনাটি নিয়ে বিব্রত বলে জানিয়েছেন।

সিসিকের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী বলেন, আম্বরখানা সিলেট নগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সিলেট নগরে প্রবেশের পর একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় এটি। এই মোড় থেকে পূর্বদিকের রাস্তা চলে গেছে শাহী ঈদগাহ হয়ে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও এমসি কলেজের দিকে। সেখান থেকে সিলেট সেনানিবাস, তামাবিল সীমান্ত ও জাফলং। পশ্চিমের রাস্তা ধরে চলে যাওয়া যায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়, শিল্প নগরী ছাতক ও সুনামগঞ্জ জেলা সদরে। আর দক্ষিণে সোজা কিছুদূর পাড়ি দিলেই দরগা-ই-হযরত শাহ জালাল (রহ) ও সিলেট নগরের সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সেই আম্বরখানা পয়েন্টে সিলেট সিটি কর্পোরেশন একটি দৃষ্টিকটু, অর্থহীন, অরুচিকর স্থাপনা নির্মাণ করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই কিম্ভুত আকৃতির স্থাপনার নামকরণ হয়েছে ‘ঝুনঝুনি চত্বর’, যা নিয়ে মানুষ হাসি-তামাশা করছে। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সূচনাকাল থেকে নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এই ঝুনঝুনি নির্মাণে আমি বিব্রতবোধ করছি।
নগরীর আম্বরখানা এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমেদ বলেন, ‘সিলেট ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে তামাশা করা হচ্ছে। নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়টিতে স্থাপনা করা যেতো একটি বিমানের আইকন বা পাথরের চিত্র। কারণ এই মোড় থেকেই সিলেট ওসমানী আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর, সিলেট সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারী ভোলাগঞ্জ-কোম্পানীগঞ্জের রাস্তা চলে গেছে। অপরদিকে সারা বাংলাদেশের মধ্যে সুনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এতো কিছু থাকতে সিসিক কর্তৃপক্ষের চোখে পড়ে ‘ঝুনঝুনি’র মতো একটি ফালতু জিনিসের প্রতি। কথায় আছে না, “চোখ থাকিতে মোরা অন্ধ” তাই বর্তমান মেয়র ক্ষমতার দাম্ভিকতায় অন্ধ হয়ে গিয়েছেন। যেমন খুশি তেমন কাজ কাবার করছেন। কিন্তু উনার মনে রাখা দরকার নগরবাসী যেমন থাকে নগরপিতা বানিয়েছেন, ঠিক তেমনি নগরীর বর্জ্য বানাতে সময় লাগবে না। নগরবাসী সঠিক সময়ের অপেক্ষায়।’
বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর ক্ষমতার দ্বিতীয় মেয়াদে নগরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এলাকার মোড়ে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে।
ডায়ালসিলেট/এম/এ/

