ডায়ালসিলেট ডেস্ক:;করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এরমধ্যে কয়েকবার চেষ্টা করেও এই মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আর খোলা সম্ভব হয়নি। চলমান এই ছুটি আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে আজ (২৬ আগস্ট)। সে অনুযায়ী, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলমান ছুটি অব্যাহত থাকবে। তবে আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে ধাপে ধাপে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলা হবে- এমন ঘোষণা এসেছে সরকারের পক্ষ থেকে। বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল বৈঠকে ৫ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে। বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন- প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মো. মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহ, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম, কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবিরসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধিরা। জানা গেছে, সংক্রমণের হার ৭-৮ শতাংশ থাকলেও খুলবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরইমধ্যে মাঠপর্যায়ে স্কুল-কলেজ কর্তৃপক্ষকে যে কোনো সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পূর্ণ প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোও স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে ক্লাস চলবে, সে ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হল খুলে দিতে তোড়জোড় শুরু করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা দিয়েছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে অক্টোবর নাগাদ হলগুলো সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হতে পারে। শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে যে ৫ দফা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বৈঠকে, সেগুলো হলো: ১. আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করোনার সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যেখানে শিক্ষার্থীরা পারিবারিক পরিমণ্ডলে কোলাহলের মধ্যে থাকে, এই বিষয় বিবেচনায় নিয়ে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের খুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে সংক্রমণের হার ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে কোনো একটি সংখ্যা বিবেচনা করা যায় কি না- সে বিষয়ে জাতীয় কারিগরি কমিটির পরামর্শ চাওয়া হবে। ২. যদিও শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল রি-ওপেনিং প্ল্যান করে রেখেছে তারপরও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে এই রি-ওপেনিং প্ল্যান আগামী সাত দিনের মধ্যে চূড়ান্ত করবে। ৩. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালিত হচ্ছে কি না- তার জন্য প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানে মনিটরিং সেল গঠন করবে এবং প্রতিদিন প্রতিবেদন তৈরি করবে। আগামী সাত দিনের মধ্যে মনিটরিং প্রতিবেদন তৈরি করার একটি গাইডলাইন তৈরি করা হবে। ৪. বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সাত দিনের মধ্যে সব বিশ্ববিদ্যালয় তাদের যে সমস্ত শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে টিকা নিয়েছে, টিকা গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছে, টিকা গ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেনি কিন্তু শিক্ষার্থীর এনআইডি আছে এবং যাদের এনআইডি নেই কিন্তু তাদের বয়স ১৮ পেরিয়ে গেছে তাদের একটি তালিকা প্রণয়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় যাদের এনআইডি নেই কিন্তু তাদের বয়স ১৮ এর ওপর তাদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে এনআইডি পাওয়ার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলবে। তারপর সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের সব শিক্ষার্থীর টিকা গ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। টিকাপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের শরীরে অ্যান্টিবডি হওয়ার জন্য ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। ৫. আগামী ২ সেপ্টেম্বর বুধবার আবার যৌথসভা অনুষ্ঠিত হবে। ওই যৌথসভায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে এবং তা গণমাধ্যমকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

ডায়ালসিলেট এম/

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *