ডায়ালসিলেট ডেস্ক::এর অর্ধেক ধারণ ক্ষমতা আছে কারাগারে। এতে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কারারক্ষীদের। এখন পর্যন্ত কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বন্দিসহ ৮১০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আর মারা গেছেন ৯ জন। গত ১৫ই আগস্ট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার অন্যতম আসামি এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আব্দুর রহিম। করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ৬৩৬ জন। এখন চিকিৎসাধীন আছেন ৫৯ জন। আর মারা গেছেন ২ জন। কারাগারে কয়েদি ও হাজতি মিলে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৭ জন। শরীরে করোনা থাকার কারণে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এখন বিশেষ পর্যবেক্ষণে আছেন ৪৫ বন্দি।
এ বিষয়ে কারা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক কর্নেল মো. আবরার হোসেন মানবজমিনকে জানান, ‘মহামারি করোনায় শুরু থেকেই আমরা সতর্ক আছি।’
কারা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, করোনার প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কারা কর্তৃপক্ষ কারা অভ্যন্তরে সতর্কতা জারি করে। কারণ কারাগারে একসঙ্গে অনেক মানুষকে রাখতে হয়। বন্দিদের চাপের কারণে অনেক সময় কারারক্ষীদের হিমশিম খেতে হয়। কারাগারে নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার দিয়ে গোটা প্রতিদিন ধোয়া হয়ে থাকে। কয়েদি ও হাজতিদের নিয়মিত হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও যেসব হাজতি নতুন করে কারাগারে যাচ্ছে তাদের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, করোনা মোকাবিলায় প্রতিটি কারাগারে ৮ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। তারা সর্বক্ষণ কারাগারের অভ্যন্তরে স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং করোনা থেকে সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ করে। বন্দিদের জন্য খাবারের তালিকায় রয়েছে ভিটামিন ‘সি’ ও ‘ডি’ জাতীয় খাবার। হ্যান্ড মাইক দিয়ে সর্বক্ষণ তারা করোনার বিষয়টি সবাইকে অবগত করছেন। করোনার কারণে কারা কর্তৃপক্ষ বন্দিদের শরীরচর্চা, মাসিক বন্দি দরবার, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গণশিক্ষাসহ বড় জমায়েতের অনুষ্ঠানগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।
সূত্র জানায়, করোনায় খুলনা বিভাগের কারাগারগুলোতে ২০৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসাধীন ১৮ জন। ঢাকা বিভাগের কারাগারগুলোতে আক্রান্ত কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের সংখ্যা ১৯৬ জন। চিকিৎসাধীন আছেন ১৮ জন। ১ জন মারা গেছেন। আর কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ৪৩ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী ও ২৫ জন বন্দি আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের হার সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ বিভাগের কারাগারে। মোট ৬ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১ জন।
রাজশাহী বিভাগে ২৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২ জন ও সিলেটে ৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। চিকিৎসাধীন ভিআইপি বন্দির মধ্যে রয়েছেন মিয়া নূর উদ্দিন অপু। তিনি বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিজি হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন আছেন।
কারাগার সূত্রে জানা গেছে, করোনা থেকে কারাগারে থাকা সকল বন্দির স্বাস্থ্যবিধি মানানোর ওপর জোর দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কারাগারের মধ্যে কোনো জটলা হতে দেয়া হয় না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বন্দিদের খাবার দেয়া হয়। এ ছাড়াও কারারক্ষীরা নিজেদের সুরক্ষার ব্যাপারে আগের চেয়ে আরও বেশি সচেতন। সূত্র জানায়, কোনো বন্দির করোনার উপসর্গ দেখা দিলেই তাকে সঙ্গে সঙ্গে বন্দিখানা থেকে আলাদা করে আইসোলেশনে রাখা হয়। পরে কারা হাসপাতালে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।

Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

ডায়ালসিলেট এম/

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *