প্রকাশিত: ১০:২২ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৬, ২০২১
ডায়ালসিলেট ডেস্ক::কয়েক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজ, চিনি, তেল, টিস্যুসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ীরা। পাড়া মহল্লার খাবারের দোকানে এরই মধ্যে খাবারের দাম বেড়েছে। তবে অধিকাংশ রেস্তোরাঁ মালিকরা বলছেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ায় তাদের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। কিন্তু কাস্টমার হারানোর ভয়ে এখনই খাবারের দাম বাড়াতে পারছেন না তারা।
রাজধানীর বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ ঘুরে দেখা গেছে, পরোটা, শিঙারা, সমুচার দাম বেড়েছে ৩-৫ টাকা। মিষ্টির দামও কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে।
মিরপুর ১২ নম্বরের মুসলিম হোটেলের স্বত্বাধিকারী বাবু জানান, অক্টোবর মাসের শুরুতে অন্য হোটেল মালিকদের সঙ্গে কথা বলে খাবারের দাম বাড়িয়েছেন তিনি। সব জিনিসের দাম তো বাড়তি। খাবারের দামও বেড়েছে। ৫ টাকার পরোটা ১০ টাকা করেছি। তবে পরোটার আকারও বাড়িয়েছি।
তবে রেস্তোরাঁ মালিকদের কেউ কেউ বলছেন, এখনই খাবারের দাম বাড়াতে চান না তারা।
ফুড পয়েন্ট রেস্টুরেন্টের মালিক ফয়সাল বলেন, দাম কী বাড়াবো ক্রেতাই তো নেই। দীর্ঘদিন সব কিছু বন্ধ ছিল, তখন দোকানভাড়া কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়েছে। এখন আবার জিনিসপত্রের দামের এই অবস্থা। সব মিলিয়ে খুব চাপে আছি।
গত দেড় বছরে বিভিন্ন সময়ে বিধিনিষেধের কারণে মন্দ সময় পার করেছে রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়। খাবার পার্সেল দিয়ে টিকে ছিল এসব প্রতিষ্ঠান। গত ১১ আগস্ট থেকে সব কিছু খুলে দেওয়ায় রেস্তোরাঁগুলোতে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে দ্রব্যমূল্যের বাড়তি দামে রেস্তোরাঁগুলো ফের ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে সব পণ্যের দামই বেড়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ দাম বেড়েছে আমদানি করা পেঁয়াজের। দেশি আদার দাম ৪৮ শতাংশ ও ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ২৩ শতাংশ। এর বাইরে তেল, টিস্যু থেকে শুরু করে সাবান, ডিটারজেন্ট ও বিস্কুটের দামও বেড়েছে।
মিস্টার গোস্তোর স্বত্বাধিকারী মুহাম্মদ ইমরান বলেন, করোনায় ক্ষতির মুখে পড়ে অনেকে ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। আগস্টের পর কয়েকদিন রাজধানীর ছোট-বড় প্রতিটি হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেনাবেচা ভালো চলছে। তবে এখন গ্যাস সিলিন্ডারসহ রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ের অপরিহার্য জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। আমরা কী করবো বুঝতে পারছি না। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা করোনার ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না বলে জানান তিনি।
রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির তথ্য বলছে, দেশের বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা শহর মিলে হোটেল-রেস্টুরেন্টের সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। আর এগুলোতে শ্রমিক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। সব মিলিয়ে প্রায় দুই কোটি মানুষ এই খাতের ওপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশ রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মহাসচিব ইমরান হাসান বলেন, মানুষের মধ্যে করোনার আতঙ্ক কমে যাওয়ায় রেস্টুরেন্টে ভিড় বেড়েছে। তবে জিনিসপত্রের দাম আমাদের নতুন করে ভোগাচ্ছে।
তিনি বলেন, খুব খারাপ অবস্থা আমাদের। সার্ভাইব করাই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। একদিকে ভ্যাট-ট্যাক্স আরেকদিকে বিভিন্ন অধিদপ্তরের অভিযান। আবার জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বগতি, রেস্টুরেন্ট ব্যবসাই টিকিয়ে রাখা মুশকিল হয়ে পড়েছে। এসবের প্রতিবাদে তারা শিগগির কর্মসূচি দেবেন বলে জানান তিনি।
রেস্টুরেন্টে দাম বাড়ানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের নাস্তানাবুদ করা হচ্ছে। এটা দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র। দাম কী করে বাড়াবো, কাস্টমারের ক্যাপাবিলিটি থাকতে হবে। করোনাকালে কাস্টমার অনেক বাড়তি টাকা খরচ করেছে। অনেকে কাজ হারিয়েছেন। এ মুহূর্তে আমরা দাম বাড়াবো কীভাবে- প্রশ্ন রাখেন তিনি।
ডায়ালসিলেট এম/
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech