ডায়ালসিলেট ডেস্ক;:ফেনীতে পূজা উদযাপন পরিষদের কর্মসূচিতে হামলার পর শহরে পুলিশের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। কয়েকটি মন্দির এবং হিন্দুদের মালিকানাধীন বেশ কিছু দোকানপাটে ভাংচুর, যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ফেনী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিনসহ অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। তাদের বেশ কয়েকজনকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জেলার আশপাশের থানা থেকে বাড়তি পুলিশ আনা হয়। জেলা ভূমি অফিসে মোতায়েন করা হয় বিজিবি। শনিবার বিকেল থেকে থেমে থেমে টানা ৮ ঘণ্টা সংঘর্ষের পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়েন্ত্রণে আসে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন পরিষদের কর্মসূচির আলোকে বিক্ষোভ মিছিল বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল নেতৃবৃন্দ। ফেনী শহরের ঢাকা-চট্টগ্রাম পুরাতন মহাসড়কের ট্রাংক রোড এলাকায় জয়কালী মন্দিরের সামনে তারা বিক্ষোভ সভা করলে আসরের নামাজের পর পার্শ্ববর্তী ফেনী বড় জামে মসজিদ এলাকায় মুসল্লিরা বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত শুরু হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ মাঝামাঝি অবস্থান নিয়ে হামলাকারীদের সরিয়ে দিতে গেলে এক দফা সংঘর্ষ বাঁধে। এরপর শহরের বড় বাজার, বড় মসজিদ, সেন্ট্রাল হাই স্কুল, তাকিয়া রোড ও কাঁচাবাজার এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে শহরতলীর কালিপাল এলাকার একটি সেবাশ্রম চত্বরে রাখা একটি লেগুনায় (ইমা) আগুন দেওয়া হয়। আগুন নেভাতে গেলে ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি হামলার শিকার হয়। বড় বাজার ও ট্রাংক রোডের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীরা টায়ার ও বিভিন্ন সরঞ্জামে আগুন দিলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ট্রাঙ্ক রোড, বড় মসজিদ রোড, দাউদপুর রোডসহ শহরের প্রধান প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শহরজুড়ে তৈরি হয় আতঙ্ক। রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি নামানো হয়। এশার নামাজের পর জেলা ভূমি অফিসের নিরাপত্তায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহকারী কমিশনার (এসি ল্যান্ড) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন ভূঁইয়া। ফেনী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ইকবাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, বিকালের পর থেকে রাত পর্যন্ত আহত অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। আহতদের মধ্যে ফেনী মডেল থানার ওসি, স্থানীয় ইনডিপেনডেন্ট টিভির স্থানীয় ক্যামেরা পার্সন রিয়াদ মোল্লা, জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডালিম রয়েছেন। ফেনীর পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী বলেছেন, পুলিশ টিয়ার শেল ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। রাত সাড়ে ১১টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে একাধিকজনকে আটক করা হয়েছে।্ তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় একাধিক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

ডায়ালসিলেট এম/

 

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *