ডায়ালসিলেট ডেস্ক::বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি সীমিত রাখা, জলবায়ু তহবিলের কার্যকর বাস্তবায়নসহ তিনটি প্রস্তাব নিয়ে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে (কপ২৬) যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রস্তাবগুলো হলো- তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামিয়ে আনতে ‘ন্যাশনালি ডিটারমিন্ড কনট্রিবিউশনস (এনডিসি)’ ঠিক করা, ১০০ বিলিয়ন ডলারের জলবায়ু তহবিলের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাড়াতে সহযোগিতা বাড়ানো। শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ইউরোপ সফরের বিস্তারিত তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এ কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সিভিএফের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আসন্ন কপ২৬ সম্মেলনের পাশাপাশি ‘সিভিএফ-কপ২৬ লিডার্স ডায়ালগ’-এ সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) সভাপতি হিসেবে কপ২৬ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জলবায়ু সম্মেলনের (১ নভেম্বর) বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী কোন কোন বিষয় গুরুত্ব দেবেন- এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আগামী ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী কপ২৬ শীর্ষক বৈঠকে ভাষণ দেবেন। সেখানে পৃথিবীকে বাঁচানোর জন্য তিনি কথা বলবেন। পৃথিবীকে রক্ষা করতে কী কী প্রয়োজন, এখানে প্রথম হচ্ছে, প্রতিটা দেশ তাদের এমডিসি এমনভাবে তৈরি করবে, যাতে প্রাকৃতিকভাবে আমাদের জলবায়ু তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ সেন্ট্রিগ্রেটের মধ্যে থাকে। বর্তমানে ২ ডিগ্রির মতো আছে। এটা কমাতে হবে। বিশেষ করে শিল্পসমৃদ্ধ দেশগুলো গুরুত্বসহ কাজ করবে, যাতে জলবায়ুর তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে চলে আসে। ‘দ্বিতীয় হচ্ছে, ২০১৫ সালে যারা অঙ্গীকার করেছে যে জলবায়ু ফান্ডে ১০০ বিলিয়ন ডলার অনুদান দেবে প্রতি বছর। আমরা সেটা চাইবো। তৃতীয় হচ্ছে, গ্রিন হাউজ প্রতিক্রিয়া আমাদের একেবারেই কম ৪.৫ এর মতো। সেখানে আমরা আরও কমাবো। এজন্য আমরা মুজিব প্রোসপারিটি প্ল্যান নিয়েছি। সেখানে আমরা তিন কোটি গাছ লাগিয়েছি।’ তিনি বলেন, পৃথিবীকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী যে মুজিব প্রোসপারিটি প্ল্যান নিয়েছে আমরা চাই অন্যান্য দেশ তার অনুকরণে এ রকম একটি প্ল্যান তৈরি করবে। যাতে করে পৃথিবীকে বাঁচানো যায়। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ বিষয়টিও সম্মেলনে তুলে ধরা হবে। তাদের ফলে আমাদের জলবায়ুর অনেক ক্ষতি হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি এবং আবার তুলে ধরবো। সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমসহ মন্ত্রণালয়ের অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আজ রবিবার (৩১ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর ইউরোপ সফর শুরু হচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে। সফরকালে আগামী ১ থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে অনুষ্ঠেয় ‘জলবায়ু পরিবর্তন শীর্ষ সম্মেলন কপ২৬’ এ অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী। জলবায়ু সম্মেলন শেষে লন্ডনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। পরে ১১ নভেম্বর ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে ইউনিসেফ বঙ্গবন্ধুর নামে অ্যাওয়ার্ড ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ক্রিয়েটিভ অ্যাওয়ার্ড ইন ইকোনমিক্স’ প্রদান অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর শেষে আগামী ১৪ নভেম্বর দেশে ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।