প্রকাশিত: ৯:৪০ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২
‘আমি আমার মেয়েকে হত্যা করেছি, আমার ফাঁসি হোক’- থানায় বসে এমনটি বলছিলেন নাজমিন জাহান (২৮)। নগরের স্কলার্স হোম স্কুলের শিক্ষক তিনি।
নিজের দেড় বছর বয়সী মেয়ে সাবিহা আহমদকে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে নাজমিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ স্বীকার করে থানায় আত্মসমর্পনও করেছেন তিনি।
বুধবার সকালে সিলেট নগরের শাহপরাণ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানায় পুলিশ। নিহত শিশুর নাম সাবিহা আক্তার।
নাজমিন জানান, স্বামীর সাথে বিরোধের জেরে মেয়েকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করেন তিনি। মেয়ের কান্নার শব্দ শুনে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
বিকেলে হাসপাতাল থেকে নাজমিনকে কতোয়ালি থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। নাজমিনের স্বামী সাব্বির হোসেনকেও আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার গোলাপগঞ্জ এলাকার নাজমিনের সাথে দক্ষিণ সুরমার বদলি এলাকার সাব্বির হোসেনের বিয়ে হয় ২০১৫ সালে। বিয়ের পর থেকে তারা শাহপরান এলাকায় থাকেন। নাজমিন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্কলার্সহোম স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষিকা ও তার স্বামী কাতার প্রবাসী।
এর আগেও একটি বিয়ে হয়েছিলো নাজনিনের। সেই সংসারে তার একটি সন্তান রয়েছে।
থানায় উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে নাজমিন বলেন, বিয়ের পর আমার স্বামী বিদেশ চলে যায়। এরপর চার বছর পর দেশে ফিরে। কিন্তু বিদেশ থাকা অবস্থায় তিনি আমার ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেননি। দেশে ফিরে আমাকে অনেক বুঝিয়ে আবার সংসার শুরু করেন তিনি। তখন আমি গর্ভবতী হই। আমাকে গর্ভবতী রেখেই তিনি আবার কাতার চলে যান।
নাজমিন অভিযো্গ করে বলেন, বিদেশে গিয়ে সাব্বির অভিযোগ করেন আমার গর্ভের সন্তান তার নয়। আমি তখন ডিএনএ টেস্ট করার কথা বলি। কিন্তু সাব্বির ও তার তার পরিবার আমার বিরুদ্ধে কুৎসা রটাতে থাকে।
মেয়ের চেহেরা অবিকল তার বাবার মতো হয়েছে জানিয়ে নাজমিন বলেন, সাব্বির ১৫ দিন আগে দেশে এসেছেন। কিন্তু একবারও মেয়েকে দেখতে আসেননি। বরং আমার বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার করছেন।
স্বামীর বিরুদ্ধে পরকীয়ার অভিযোগ এনে তিনি বলেন, আমার মেয়ে বড় হয়ে চরিত্রহীন পিতার সন্তান- এমন পরিচয় যাতে না দিতে হয়, তাই নিজের বিবেচনায় সাবিহাকে হত্যা করেছি।
নিজের মেয়েকে হত্যার দায় স্বীকার করে নাজমিন আরও বলেন, আমি কাউকে ফাঁসাবো না। সাব্বিরকেও ফাঁসাবো না। তাকে ফাঁসালেও সে কম শাস্তিতে পার পেয়ে যাবে। তার বিচার আল্লাহ করবেন। আমি আমার মেয়েকে খুন করছি। আমার ফাঁসি হোক।
ক্ষোভ প্রকাশ করে নাজমিন বলেন, হাসপাতালে সাব্বিরের ভাইকে পাইছিলাম। তাকে জুতা দিয়ে মারতে চাইছিলাম। মারতে পারলে শান্তি হতো। কিন্তু পারিনি।
পারিবাহিক কলহের জেরে সাবিহাকে গলা টিপে তার মা নাজমিন হত্যা করেন জানিয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, নাজমিনকে আমরা থানায় নিয়ে এসেছি। তার স্বামীকেও আটক করেছি। ঘটনাটি যেহেতু শাহপরান থানা এলাকার তাই শাহপরান থানা পুলিশকে খবর দিয়েছি। তারাই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
নিহত শিশুর মরদেহ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech