Thank you for reading this post, don't forget to subscribe!

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সাকিব যেতে চান না, এটা দুদিন আগেই দুবাইতে যাওয়ার আগে মিডিয়ার সামনে বলে গেছেন তিনি। এ নিয়ে সোমবার বেশ ক্ষোভ ঝেড়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। সাকিবের হঠাৎ এভাবে বেঁকে বসাটাকে শুধু বিসিবি সভাপতিই নন, ভালোভাবে নিতে পারেননি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কেউ। সবাই এখন এ ব্যাপারে কঠোর। একটা অবস্থানে থেকে কথা বলছেন তারা। চিন্তাটা এমন, ‘সাকিবকে ছাড়াই চলতে হবে সামনের দিনগুলো।’
মোটামুটি সাকিবকে ছাড়াই এখন চিন্তা করতে শুরু করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কর্মকর্তারা। আজ মিরপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ক্ষোভ ঝাড়লেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনও। তিনি সরাসরি বলে দিলেন, ‘সাকিব না খেলতে চাইলে খেলবে না। আই ডোন্ট কেয়ার। আমি মনে করি বিসিবিও কনসার্ন না।’
সাকিব বার বার নিজের ইচ্ছেমতো খেলতে চান, আবার হঠাৎ করে বলেন খেলবো না। এটাকে আর চলতে দেওয়া যায় না বলেই মন্তব্য করেছেন সুজন। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এখন সবচেয়ে বড় সময়। বোর্ডের উচিত একটা ফুলস্টপ করা। ইটস অ্যানাফ। এটা বারবার এমন হতে পারে না যে, আমি চাইলাম খেললাম, চাইলাম খেললাম না। এখন শুধু সাকিবের কথা বলছি না, সবাইকে ছাড়াই ভাবার সুযোগ এসেছে।’
তামিম ইকবাল সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি থেকে ছয় মাসের ছুটি চেয়েছেন। মোস্তাফিজুর রহমান বলেছেন, বায়োবাবল যতদিন থাকবে ততদিন টেস্ট খেলবেন না।
খালেদ মাহমুদ সুজন এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘সাকিব-তামিম একটা সিরিজ না খেললে ওই জায়গায় নতুন কাউকে সুযোগ দেওয়া হবে। আবার ওরা ফিরলে ওই ছেলেটার কী হবে? সিনিয়র ক্রিকেটারদের প্রয়োজন অপরিসীম। কিন্তু ওদের ছাড়া দল হবে না এমন নয়। তারা আমাদের ‍গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। কিন্তু তারা না খেললে যে দেশের ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যাবে তা নয়। জোর করে তো কাউকে খেলানো যাবে না। তাদের জায়গায় অন্য যারা সুযোগ পাবে তাদের জন্য বড় সুযোগ হবে।’
অন্য এক প্রশ্নে এই প্রসঙ্গে সুজন বলেন, ‘বাংলাদেশ দল কারও জন্য বসে থাকবে না। এটা ভাবা ভুল। আপনারা যেমন ভাবেন, এটা ছাড়তে হবে। হ্যাঁ, তারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। দুই-তিন বছর পর ওদের ছাড়াই খেলতে হবে। নতুনরা আসছে। এটাই তো স্বাভাবিক। এটা একটা প্রসেসের মধ্যে যাবে। তবে আমরা চাই সেরা দলে সেরা ক্রিকেটাররা খেলুক। খেলা না খেলা একদম ক্রিকেটারের ওপর ছেড়ে দেয়া ঠিক না। তবে কথা বলে নেয়াটা ভাল।’
সুজনের কথায় বোঝাই যাচ্ছে, তিনি কতটা ক্ষুব্ধ সাকিবের এ মানসিকতায়। তিনি বলেন, ‘ইউ ক্যান নট ডিক্টেট বিসিবি (বিসিবিকে তো তুমি হুকুম করতে পারো না)। যদি খেলতে না চাও, খেলবে না। তোমার ব্রেক নিতে মন চায়, ফুল ব্রেক নাও। কেউ তো তোমাকে আটকাচ্ছে না! আমাদের প্রেসিডেন্টও এটাই বলতে চায়। আমি জোরে বললাম, উনি আস্তে বলেছেন। লাস্ট কল অবশ্যই বিসিবির। ওরা বিসিবির প্রোডাক্ট। বিসিবি ওদের প্রোডাক্ট না। বিসিবির জন্যই ওরা। ওরা মেইন স্টেকহোল্ডার হতে পারে কিন্তু ওদের পেছনে অনেক ইনভেস্ট করা হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের ওপর তো কেউ না।’
বিসিবি সভাপতির মতো সুজনও প্রশ্ন তুললেন, আইপিএল খেলার সুযোগ পেলে কী সাকিব এমন করতেন? সুজন বলেন, ‘এখন দেখেন আইপিএলে যদি দল পেত, তাহলে সে খেলতে যেত না? বোর্ড কেন রিকোয়েস্ট করবে তাকে? এখানে বোর্ড হুকুম করবে। কারণ সে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার।’
সুজন চান সাকিব খেলুক। কিন্তু কোনো ফরম্যাটে না খেলতে চাইলে সেটাও বলুক। যদিও এক সময় সাকিবদের ছাড়া দল করতে ভয় পেতেন তারা। কিন্তু এখন আর ভয় পান না। কারণ পর্যাপ্ত ক্রিকেটার আছে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই যে সাকিব খেলুক। কিন্তু ওর যদি মনে না চায় যে কোন এক ফরম্যাট খেলবো না তো সে বলুক। একটা সময় আমিও ভয় পেতাম যে এই ছেলেগুলো না থাকলেও বাংলাদেশ দল কোথায় যাবে। কিন্তু এখন আমি আর ভয় পাই না।’
সাকিবকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের জন্য রিকুয়েস্ট করা হয়নি জানিয়ে সুজন বলেন, ‘তাকে রিকোয়েস্ট করা হয়নি। সাকিব যেহেতু আইপিএল খেলতে যাচ্ছে না তখন বলা হয়েছে তুমি কি টেস্ট খেলবে? সে বলেছে ইয়েস। তখন তার নাম দলে দেয়া হয়েছে। এখন দেখেন আইপিএলে যদি দল পেত, তাহলে খেলতে যেত না? বোর্ড কেন রিকোয়েস্ট করবে? এখানে বোর্ড তাকে হুকুম করবে। কারণ সে চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার।’
বাংলাদেশের জার্সি পরে খেলতে নামলে একটা আনন্দ থাকা উচিৎ বলে মনে করেন সুজন। তিনি বলেন, ‘সাকিব, রিয়াদ, মুশফিক তামিম, মাশরাফি, এখন যেহেতু নেই ওর কথা নাই বললাম। ওরা ছোট থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেটের পাইপলাইন ধরে উঠেছে। ওদের পেছনে বাংলাদেশ ক্রিকেটের পুঁজিটা অনেক। তো আমরা তো ওদের কাছে তার প্রতিদানটা চাইতেই পারি। এটা তো কারও পারসোনাল টিম না, এটা বাংলাদেশ দল। এই জার্সি পরে আনন্দটা থাকা উচিত।’

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *